আগরতলা, ২৪ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : জনজাতি কল্যাণে আওয়াজ দিল্লি পর্যন্ত পৌঁছাতে হবে, তবেই স্বাধীনতা প্রাপ্তির ৭০ বছর ধরে সমস্ত বঞ্চনার অবসান হবে৷ তাই আমাদের মধ্যে একতা আরও মজবুত করতে হবে৷ এডিসি নির্বাচনকে ঘিরে পাহাড়ে শক্তি প্রদর্শনের লক্ষ্যে খুমুলুঙে আয়োজিত শাসকজোট শরিক আইপিএফটি এবং তিপ্রা-র যৌথ সভায় সকলেই সমসুরে এই আওয়াজ তুলেছেন৷ সভায় অসমের বড়ো টেরিটোরিয়াল রিজিওনে-এর কার্যনির্বাহী সদস্য রঞ্জিত বসুমতারিও সহমত পোষণ করেন৷ তিনি বলেন, দীর্ঘ বঞ্চনার কারণেই ত্রিপুরায় পৃথক রাজ্যের দাবি উঠেছে, যা খুবই প্রাসঙ্গিক৷
এদিন সভা শুরু হওয়ার পূর্বে কয়েক হাজার সমর্থক রেলি করেছেন৷ রেলি দেখে আইপিএফটি এবং তিপ্রা-র নেতৃবৃন্দ ভীষণ খুশি৷ তাতে তাঁদের মনোবল অনেকটাই বেড়েছে বলে মনে করা হচ্ছে৷
প্রদ্যুতকিশোর দেববর্মণের কথায়, জনজাতি নেতাদের একতা বাড়াতে হবে৷ তাতে তাঁরা এক সুরে কেন্দ্রীয় নেতৃত্বের কাছে দাবি পেশ করতে পারবেন৷ তিনি বলেন, সত্তর বছর ধরে জনজাতিদের আওয়াজ দমিয়ে রাখা হচ্ছে৷ সাথে তাঁদের বিভাজিত করার চেষ্টা হয়েছে৷ তাঁর সাফ কথা, প্রদেশ নেতৃত্বের কাছে দাবি আদায়ের জন্য অনুরোধ জানানোর কোনও যৌক্তিকতা নেই, কারণ তাঁদের সিদ্ধান্ত নেওয়ার ক্ষমতা খুবই সীমিত৷
তিনি বলেন, এখন আমরা দিল্লির কাছে আমাদের দাবি পেশ করব৷ গ্রেটার তিপ্রাল্যান্ড-এর বিনিময়ে কোনও কিছুতেই আমরা আপস করব না৷ প্রদ্যুত আজ সাংসদ রেবতীমোহন ত্রিপুরাকে নিশানা করে বলেন, জনজাতিদের জন্য আজ যাঁরা মায়াকান্না করছেন তাঁরাই সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইনের পক্ষে ভোট দিয়েছিলেন৷
আইপিএফটি-র সাধারণ সম্পাদক মেবারকুমার জমাতিয়া বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার ত্রিপুরার ভূমিপুত্রদের দাবি মেনে না নেওয়া পর্যন্ত লড়াই জারি থাকবে৷ তাঁর কথায়, আমাদের বরাবর দাবিয়ে রাখা হয়েছে এবং ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতির জন্য ব্যবহার করেছে৷ কিন্তু আমাদের আওয়াজ কেউ কখনও শুনেনি৷ তবে এখন সময় বদলেছে৷ এখন আমরা একই সুরে আওয়াজ তুলব এবং নেতাদের আমাদের কথা শুনতেই হবে, জোর গলায় দাবি করেন তিনি৷
এদিন আইপিএফটি সভাপতি তথা রাজস্বমন্ত্রী এনসি দেববর্মা বলেন, ত্রিপুরায় বিজেপির সাথে আমরা জোটবদ্ধ রয়েছি৷ তবে এডিসি নির্বাচনের পর নতুন করে এ-বিষয়ে ভাবতে হবে৷ তাঁর কথায়, বিজেপি-র শীর্ষ নেতৃত্বের সাথে লাগাতার আলোচনা চলছে৷
আজকের সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত বড়ো টেরিটোরিয়াল রিজিওনের কার্যনির্বাহী সদস্য রঞ্জিত বসুমতারি আক্ষেপ করে বলেন, জনজাতিরা এই অঞ্চলের ভূমিপুত্র৷ অথচ, তাঁদের কথা কেউ কখনও শুনেনি৷ তাঁর কথায়, ব্রিটিশ শাসন সমাপ্ত হওয়ার পর আমরা ভারতের অংশ হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম৷ কিন্তু স্বাধীনতার ৭০ বছর পরও জনজাতিরা বঞ্চিতই রয়ে গেলেন৷ তাই পৃথক রাজ্যের দাবি উঠেছে, যা খুবই প্রাসঙ্গিক৷ তাঁর আশ্বাস, ত্রিপুরাবাসীর প্রতি আমাদের পূর্ণ সমর্থন রয়েছে৷

