আগরতলা, ১২ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : বিয়ের প্রতিশ্রুতি দিয়ে সহবাস এবং পরবর্তী সময়ে বিয়ে-তে অস্বীকারের অভিযোগে ধর্ষণ ও প্রতারণার দায়ে দোষী সাব্যস্ত যুবক-কে আদালত ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৭৬ ধারায় ১২ বছর এবং ৪১৭ ধারায় ১ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের সাজা দিয়েছে। পাশাপাশি ৬০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা করেছে। আদালতের নির্দেশ, জরিমানার অর্থ নির্যাতিতার সন্তানের নামে জাতীয় ব্যাঙ্ক-এ ৫ বছরের জন্য ফিক্সড জমা করতে হবে। এছাড়া, ত্রিপুরা সরকারের ওমেন ভিকটিম কম্পেন্সেশন স্কিম-র অধীন ক্ষতিপূরণ দিতে হবে।
এপিপি অরবিন্দ দেব এই মামলা সম্পর্কে বলেন, ২০১৩ সালের ঘটনায় এখন গিয়ে অভিযোগকারিণী বিচার পেয়েছে। তিনি বলেন, আমতলী থানাধীন এলাকার বাসিন্দা সঞ্জীব পাল পাড়ার একটি মেয়ের সাথে প্রণয়ের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন। ক্রমেই তাদের মধ্যে শারীরিক সম্পর্ক গড়ে উঠে এবং ওই মেয়ে গর্ববতী হয়ে যায়। অরবিন্দ বাবু জানান, গর্ববতী হওয়ার পর সঞ্জীব-কে তার প্রেমিকা বিয়ের জন্য চাপ দেয়। কিন্তু সঞ্জীব ওই মেয়ে-কে বিয়ে করতে অস্বীকার করেন। তাতে, আমতলী থানায় একটি মামলা হয়। কিন্তু, দীর্ঘদিন ধরে ওই মামলা বিচারের অপেক্ষায় ঝুলে ছিল।
তিনি বলেন, ২০১৫ সালের ২৬ জুন পুলিশ তদন্ত করে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়। কিন্তু বিচার প্রক্রিয়া শুরু হয় ত্রিপুরায় সরকার পরিবর্তন হওয়ার পর। অরবিন্দবাবু বলেন, অভিযোগকারিণী এরই মধ্যে এক পুত্র সন্তানের জন্ম দিয়েছে। এদিকে, আদালতে ১১ জনের সাক্ষী গ্রহণ করে হয়েছে। ওই মামলায় মোট চার জন অভিযুক্ত ছিলেন। প্রমাণের অভাবে তিনজন বেকসুর খালাস হয়ে গেছেন। তিনি জানান, গতকাল অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক ধীমান দেববর্মা অভিযুক্ত সঞ্জীব পাল-কে ভারতীয় দন্ডবিধি ৩৭৬, ৪১৭ এবং ৫০৬ ধারায় দোষী সাব্যস্ত করেছিলেন। আজ সাজা ঘোষণা করেছেন।
তিনি বলেন, পশ্চিম ত্রিপুরা জেলা ও দায়রা জজ আদালত সঞ্জীব পাল-কে ভারতীয় দণ্ডবিধি ৩৭৬ ধারায় ১২ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ৫০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। এছাড়া ৪১৭ ধারায় এক বছর সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানার নির্দেশ দিয়েছেন। অরবিন্দ বাবু বলেন, দুটি সাজা একই সাথে চলবে। তিনি জানান, ৩৭৬ ধারায় আসামি-কে ৫০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয়েছে। অনাদায়ে ২ বছরের অতিরিক্ত কারাবাসের আদেশ দিয়েছেন। সাথে ৪১৭ ধারায় ১০ হাজার জরিমানা করেছে আদালত। অনাদায়ে ৩ মাসের অতিরিক্ত কারাবাসের আদেশ দিয়েছেন বিচারক।
আদালত নির্দেশ দিয়েছে, জরিমানা-র পুরো অর্থ নির্যাতিতার সন্তানের নামে জাতীয় ব্যাঙ্ক-এ ৫ বছরের জন্য ফিক্সড করতে হবে। এছাড়া পশ্চিম ত্রিপুরা লিগাল সার্ভিস অথরিটিকে আদালত নির্দেশ দিয়েছে, ত্রিপুরা ওমেন ভিকটিম কম্পেন্সেশন স্কিমে তিন লক্ষ কিংবা চার লক্ষ টাকা প্রদান করতে হবে।