নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৮ জানুয়ারি৷৷ রাজ্যে এখন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে৷ আগামীদিনে সাব্রুমে সুুসংহত স্থলবন্দর ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠলে রাজ্যে অনেক কর্মসংস্থানের সুুযোগ সৃষ্টি হবে৷ আজ কিল্লা ব্লকের মনিথাং পাড়ায় মলসম সম্পদায়ের রাজ্যভিত্তিক সেংগ্রাক উৎসবের উদ্বোধন করে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব একথা বলেন৷
তিনি বলেন, মলসম সম্পদায়ের কৃষ্টি ও সংসৃকতির মধ্য দিয়ে তাদের জীবনশৈলীর রূপ প্রকাশ পায়৷ রাজ্যের প্রতিটি জনজাতি সম্পদায়েরই নিজস্ব কৃষ্টি ও সংসৃকতি রয়েছে৷ তাদের সাংসৃকতিক ঐতিহ্য দেশ বিদেশে উচ্চ প্রশংসিত হয়েছে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এ ধরণের উৎসব সম্পীতির উৎসব৷ জাতি ও জনজাতি উভয় অংশের মানুষের মেলবন্ধনের মধ্য দিয়ে সরকার রাজ্যের উন্নয়ন ও সমৃদ্ধিকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার লক্ষ্যে কাজ করছে৷
তিনি বলেন, রাজ্যের জনজাতিদের কৃষ্টি ও সংসৃকতিকে রক্ষা ও প্রসারে রাজ্য সরকার আন্তরিক৷ জনজাতিদের সার্বিক উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকার বহুমুখী পরিকল্পনা গ্রহণ করেছে৷ এডিসি এলাকায় যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে ২০০ কোটি টাকা ব্যয়ে পেপার ব্লকের রাস্তা তৈরি করার পরিকল্পনা নেওয়া হয়েছে৷ এডিসি এলাকায় টাউনশিপ গড়ে তোলারও উদ্যোগ নিয়েছে সরকার৷
অনুষ্ঠানে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, এডিসি এলাকার মধ্যে আমবাসা মহকুমায় একটি মেডিকেল কলেজ স্থাপন করার পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের জনজাতি অধ্যষিত এলাকার ছেলেমেয়েদের পড়াশুনার জন্য ১৮টি একলব্য বিদ্যালয় স্থাপন করা হচ্ছে৷ আমাদের রাজ্যের গ্রামীণ অর্থনীতির মূল ভিত্তি হচ্ছে কৃষি৷ তাই কৃষির বিকাশকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে৷ কৃষকদের আয় ২০২২ সালের মধ্যে দ্বিগুণ করার লক্ষ্যমাত্রা নিয়ে কেন্দ্র ও রাজ্য সরকার কাজ করছে৷ রাজ্যের কৃষকরা প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মাননিধি যোজনায় বছরে ৬ হাজার টাকা করে পাচ্ছেন৷ এই যোজনায় কিল্লা ব্লকে ৬ হাজার ৩৫ জন কৃষক উপকৃত হয়েছেন৷ তাছাড়াও এই ব্লকে প্রধানমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনা ও মুখ্যমন্ত্রী ফসল বীমা যোজনায় ৭ হাজার ২৪২ জনকে বীমার আওতায় আনা হয়েছে৷ ব্লকের ৩ হাজার ৪৭০ জন কৃষক কিষাণ ক্রেডিট কার্ড পেয়েছেন৷ অটল জলধারা যোজনায় কিল্লা ব্লকের ২ হাজার ৮৩৮টি পানীয় জলের সংযোগ দেওয়া হয়েছে৷
তিনি আরও বলেন, আগামী ২০২২ সালের মধ্যে রাজ্যের প্রতিটি বাড়িতে বিশুদ্ধ পানীয় জলের সংযোগ পৌঁছে দেওয়া হবে৷ রাজ্যে এখন পর্যন্ত সরকারি ও বেসরকারি মিলিয়ে প্রায় ১ লক্ষ কর্মসংস্থানের সৃষ্টি হয়েছে৷ আগামীদিনে সাব্রুমে সুুসংহত স্থলবন্দর ও বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠলে রাজ্যে অনেক কর্মসংস্থানের সুুযোগ সৃষ্টি হবে৷ তিনি বলেন, রাজ্যে বাঁশভিত্তিক শিল্পের বিকাশে সরকার উদ্যোগ নিয়েছে৷ এবারের প্রজাতন্ত্র দিবসে দিল্লিতে অনুষ্ঠিত ট্যাবলো প্রদর্শনীতে বাঁশভিত্তিক শিল্পকে তুলে ধরে রাজ্য দ্বিতীয় পুরস্কার পেয়েছে৷
অনুষ্ঠানে অন্যান্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন গোমতী জিলা পরিষদের সভাধিপতি স্বপন অধিকারী, বিধায়ক রামপদ জমাতিয়া, বিধায়ক বিপ্লব কুমার ঘোষ প্রমুখ৷ স্বাগত বক্তব্য রাখেন মলসম দফার সম্পাদক চন্দ্রকৃষ্ণ মলসম৷ তাছাড়াও অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন জনজাতি সম্পদায়ের বিশিষ্ট ব্যক্তিগণ৷ উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন মলসম সম্পদায়ের রাইমদন হরি মলসম৷