নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৫ জানুয়ারি৷৷ চাকরিচ্যুত আরো এক শিক্ষকের মৃত্যু হল৷ মৃত শিক্ষকের নাম অজিত সূত্রধর৷ বাড়ি রাজধানী আগরতলা শহর সংলগ্ণ নোয়ানিয়ামুড়া৷ সোমবার সকালে বাথরুমে গিয়ে হৃদরোগে আক্রান্ত হন চাকরিচ্যুত ওই শিক্ষক ৷ হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়েন তিনি৷ তার মৃত্যুর সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় গভীর শোকের ছায়া নেমে আসে৷
চাকরিচ্যুত শিক্ষক অজিত সূত্রধরের হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মৃত্যুর সংবাদ পেয়ে আগরতলা সিটি সেন্টারের সামনে থেকে আন্দোলনরত চাকুরিচ্যুত কর্মচারীরা তার বাড়িতে ছুটে যান৷ সেখান থেকে মৃতদেহটি সিটি সেন্টারের সামনে আন্দোলন মঞ্চে নিয়ে আসা হয়৷ চাকরিচ্যুত আরো এক শিক্ষকের মৃত্যু সংবাদ ছড়িয়ে পড়তেই অন্যান্য চাকুরিচ্যুত শিক্ষক- শিক্ষিকাদের মধ্যে তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা দেখা দেয়৷ বিভিন্ন এলাকা থেকে চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকারা সিটি সেন্টারের সামনে আন্দোলন মঞ্চের কাছে এসে সমবেত হতে শুরু করেন৷ তাতে পরিস্থিতির ক্রমশই উত্তপ্ত হয়ে উঠতে শুরু করে৷ পরিস্থিতি সামাল দিতে অতিরিক্ত পুলিশ ও নিরাপত্তা কর্মী নামানো হয়৷ আন্দোলন মঞ্চের সামনে মৃতদেহটি শায়িত রেখে তীব্র ভাষায় রাজ্য সরকারকে কটাক্ষ করেন আন্দোলনকারীরা৷
সেখান থেকে একসময় মৃতদেহটির শিক্ষা ভবনের সামনে নিয়ে যাওয়া হয়৷ মৃতদেহ শিক্ষা ভবনের সামনে নিয়ে গিয়ে তীব্র প্রতিবাদ বিক্ষোভে ফেটে পড়েন আন্দোলনকারীরা৷ সিটি সেন্টারের আন্দোলন মঞ্চের সামনে মৃতদেহ শায়িত রেখে ক্ষোভ প্রকাশ করে জয়েন্ট মোমেন্ট কমিটির নেত্রী ডালিয়া তার শিক্ষকের মৃত্যুর জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করেন৷ তিনি বলেন রাজ্য সরকারের নীতির কারণেই একের পর এক শিক্ষক-শিক্ষিকারা অবসাদগ্রস্ত হয়ে মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন৷
তিনি বলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী আন্দোলনকারীদের প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন দু’’মাসের মধ্যে শিক্ষকদের সমস্যা সমাধান করা হবে৷ মুখ্যমন্ত্রীর দেওয়া সময়সীমা অতিক্রান্ত হওয়ার পরও শিক্ষকদের সমস্যার কোনো সমাধান করা হয়নি৷ এদিকে রাজ্যের শিক্ষামন্ত্রী রতন লাল নাথ তাদের ইন্টারভিউতে বসার কথা বলে চলেছেন৷ বয়স উত্তীর্ণরা ইন্টারভিউতে বসে কি হবে সেই প্রশ্ণ তুলেছেন জয়েন্ট মোভমেন্ট কমিটির নেতৃত্ব৷ আন্দোলনকারীরা জানতে চান তারা আর কত মৃত্যু দেখতে চান৷ এভাবে চলতে পারে না বলেও তারা মন্তব্য করেন৷ এখনো পর্যন্ত চাকরিচ্যুত শিক্ষক-শিক্ষিকাদের মধ্যে ৮৪জনের মৃত্যু হয়েছে৷ অবসাদগ্রস্ত হয়ে তাদের এই মৃত্যুর ঘটনা ঘটে চলেছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারীরা৷ এসব মৃত্যুর জন্য রাজ্য সরকারকে দায়ী করে এর যোগ্য জবাবদিহি করতে হবে বলেও তারা উল্লেখ করেন৷ চাকরিচ্যুত তা আরও বৃহত্তর আন্দোলনের হুমকি দিয়েছেন৷