BRAKING NEWS

পূর্বতন ত্রিপুরা সরকার প্রেতাত্মাকেও ভাতা দিত, কটাক্ষ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লবের

পেঁচারথল (ত্রিপুরা), ১৮ জানুয়ারি (হি.স.) : প্রেতাত্মাকেও ভাতা দিত ত্ৰিপুরার পূর্বতন সরকার। কারণ, সিপিএম-এর ছিল সেই প্রেতাত্মা। পেঁচারথলে অটল সম্পর্ক সমাবেশে অংশ নিয়ে এভাবেই সিপিএম-কে চাঁচাছোলা ভাষায় বিঁধেছেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব। তাঁর কথায়, ভারতীয় জনতা পার্টি সব-কা সাথ সব-কা বিকাশ এবং সব-কা বিশ্বাস-এর রাজনীতিতে বিশ্বাস করে। তাই রাজ্যের সর্বত্র অন্তিম ব্যক্তি পর্যন্ত সকল সহায়তা পৌঁছে দিতে তৎপর এই দল।

মুখ্যমন্ত্ৰী ঘোষণা করেন, আগামী অর্থবছরে পেঁচারথলের প্রাথমিক স্বাস্থ্য কেন্দ্রটিকে কমিউনিটি স্বাস্থ্য কেন্দ্রে পরিণত করা হবে। পেঁচারথলে একটি নতুন টাউন হল নির্মাণ করা হবে। সাথে যোগ করেন, রেস্টহাউজ নির্মাণের জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে অনুমোদন পাঠানো হয়েছে। পেঁচারথলে রাজনৈতিক সন্ত্রাসের বলি শহিদের পরিবারের প্রতি সরকার সাহায্যের হাত বাড়িয়ে দেবে।

বিপ্লব দেব কটাক্ষের সুরে বলেন, পূর্বতন সরকার নিজেদের গরিবের সরকার, ক্ষেতমজুরের সরকার বলে প্রচার করে গেছে। কিন্তু একটিও ফসল বিমা যোজনা চালু করতে পারেনি। বর্তমানে ‘মুখ্যমন্ত্রী ফসল বিমা যোজনা’-র মাধ্যমে পেঁচারথলের ১,১৩৪ জন কৃষক লাভান্বিত হয়েছেন। ১০ টাকার বিনিময়ে কৃষকদের জন্য ফসল বিমা যোজনা একটি ঐতিহাসিক সিদ্ধান্ত। এই বিমার আওতাধীন কৃষকদের ফসল কোনও কারণে নষ্ট হলে তার ক্ষতিপূরণ সরকার দেবে। তাই রাজ্যের সকল কৃষককে এর আওতায় আনা হবে। তিনি যোগ করেন, এখন পর্যন্ত ৮০ শথাংশ কৃষককে এই প্রকল্পের আওতায় আনা সম্ভব হয়েছে। সাথে তিনি জোর গলায় দাবি করেন, এই প্রকল্পে ত্রিপুরা দেশের মধ্যে সর্বোচ্চ স্থানে রয়েছে। ‘কিষাণ ক্রেডিট কার্ড’-এর মাধ্যমে পেঁচারথলের ৩,৫২৩ জন কৃষক লাভান্বিত হয়েছেন। তাঁর কথায়, এই কার্ডের মাধ্যমে কৃষকরাও কেসিসি লোন নিয়ে তাঁদের কৃষিকাজ করতে পারবেন। ‘প্রধানমন্ত্রী কিষাণ সম্মান নিধি’-র মাধ্যমে ২,২৮৫ জন কৃষকের রেজিস্ট্রেশন হয়েছে। যার মাধ্যমে প্রত্যেক বছর ছয় হাজার টাকা সরাসরি তাঁদের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে চলে যাচ্ছে।

মুখ্যমন্ত্রী এদিন তীব্র কটাক্ষ করে বলেন, পূর্বতন সরকার প্রেতাত্মাকেও ভাতা প্রদান করত। কারণ সেই প্রেতাত্মা ছিল সিপিআইএম-এর। তিনি বিদ্রুপ করে বলেন, বর্তমানে ত্রিপুরা সরকার ওই প্রেতাত্মার ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে। তাই, সিপিআইএম বলছে সরকার নাকি চারিদিকে ভাতা বন্ধ করে দিয়েছে। তাঁর দাবি, পেঁচারথলে বর্তমানে রাজ্য ও কেন্দ্রীয় সরকার মিলে ৩,৮৪৬ জন ভাতা পাচ্ছেন। তিনি বলেন, মহিলা সশক্তিকরণ-এর জন্য কেউ যদি সত্যিকারের কাজ করে থাকে তা-হলে একমাত্র বর্তমান বিজেপি সরকারই করছে। আগে শুধুমাত্র বিপিএল, অন্ত্যোদয় ছাত্রীদের সাইকেল প্রদান করা হতো। বর্তমান সরকার বিপিএল, অন্ত্যোদয়, এপিএল সকল ছাত্রীদের জন্য সাইকেল প্রদানের ব্যবস্থা করেছে। তিনি তথ্য তুলে ধরে বলেন, এখন পর্যন্ত পেঁচারথলে ৭২১টি সাইকেল প্রদান করা হয়েছে। আরও ২৩৫ সাইকেল প্রদানের জন্য অনুমোদন পাঠানো হয়েছে। তিনি জানান, বর্তমানে রাজ্যে ৫,৬২৫টি মহিলাদের স্বসহায়ক গোষ্ঠী রয়েছে। যার জন্য সরকারের তরফ থেকে ৮১ কোটি ৭ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছে। তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় বিজেপি জোট সরকার প্রতিষ্ঠিত হওয়ার আগে স্বসহায়ক গোষ্ঠী ছিল মাত্র ১,১০৮টি এবং অর্থ বরাদ্দ ছিল মাত্র ৮ কোটি ৯৫ লক্ষ টাকা।

এদিন মুখ্যমন্ত্রী সমালোচনা করে বলেন, সিপিআইএম-এর দাবি গ্রামে কাজ নেই, খাদ্য নেই। অথচ তথ্য বলছে, শুধুমাত্র রেগার মাধ্যমে পেঁচারথলে ১০ লক্ষ ৫৫ হাজার ৫৬৬ শ্রমদিবস সৃষ্টি হয়েছে। শতাংশের হিসাবে মোট ৭১.৭৬ শতাংশ। আর পূর্বতন সরকার সারা রাজ্যে ৩৫ শতাংশের বেশি রেগার কাজ করাতে পারেনি। এখানেই পূর্বতন ও বর্তমান সরকারের মধ্যে পার্থক্য এবং এই পরিসংখ্যানেই স্পষ্ট, রাজ্যের অগ্রগতি বিকশিত হচ্ছে, দাবি করেন তিনি।

মুখ্যমন্ত্রী দেব বলেন, বর্তমানে রাজ্যের গড় আয় ১ লক্ষ ২৩ হাজার ৬০০ টাকা। পূর্বে যা ছিল ৯৯ হাজার ৪০০ টাকা। বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পর যা ২৩ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি বলেন, ব্লু-রেভিলিউশনের মাধ্যমে মৎস্য দফতর কর্তৃক পেঁচারথলের ৩০ জন সহায়তা পেয়েছেন। ৩৫ জন মুরগি, ২৭০ জন শূকর, ৩৩ জন ছাগল পালনে সহায়তা পেয়েছেন। সরকারি সহায়তায় ১,৩৪০টি শৌচালয় নির্মাণ করা হয়েছে এই পেঁচারথলে। সাথে তিনি যোগ করেন, পেঁচারথল ব্লকের লক্ষ্মীপুরে একটি জওহর নবোদয় বিদ্যালয়ের অনুমোদন দিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। খুব শীঘ্রই তার কাজ শুরু হবে। তিনি দৃঢ় প্রত্যয়ের সুরে বলেন, সর্বক্ষেত্রেই বিকাশের ধারা নিয়ে চলছে ভারতীয় জনতা পার্টির সরকার।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *