ফুটপাথ থেকে ভবঘুরে মহিলা ও তার দুই শিশু সন্তানের উদ্ধার অভিযান ঘিরে ধুন্দুমার

আগরতলা, ৪ ডিসেম্বর (হি.স.)৷৷ ফুটপাথ থেকে মা সহ দুই শিশুকে উদ্ধার করে হোমে পাঠিয়েছে প্রশাসন৷ ওই অভিযানকে ঘিরে আগরতলার আইজিএম হাসপাতাল চত্ত্বরে শোরগোল পড়েছিল৷ কারণ, ওই মহিলা কিছুতেই হোমে যেতে রাজি হচ্ছিলেন না৷ বার বার চিৎকার করে বলছিলেন, দুই শিশুকে নিয়ে তিনি ফুটপাথেই দিন গুজরান করবেন৷ টিসিপিসিআর এবং মহিলা কমিশনের বক্তব্য, ইতিপূর্বেও ওই মহিলাকে হোমে পাঠানোর চেষ্টা হয়েছিল৷ কিন্তু, তিনি যেতে চাইছেন না৷ কিন্তু, সরকারি সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও শিশু নিয়ে কোনও মহিলা ফুটপাথে থাকবেন, তা মেনে নেওয়া যায় না৷ তাই, আজ প্রশাসন কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হয়েছে৷


প্রসঙ্গত, আগরতলার আইজিএম হাসপাতালের সামনে ফুটপাথে বেশ কিছুদিন ধরে এক মহিলা দুই শিশু সন্তানকে নিয়ে থাকেন৷ ইতিপূর্বে প্রশাসন এবং টিপিসিআর ও চাইল্ড লাইন থেকে ওই মহিলাকে শিশু সহ হোমে রাখার ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ তখন তিনি যেতে রাজি হননি৷ বরং ইট-পাটকেল ছুঁড়ে সকলকে তাড়িয়ে দিয়েছেন৷


এ-বিষয়ে টিসিপিসিআর চেয়ারম্যান নীলিমা ঘোষ বলেন, শিশু সন্তান নিয়ে ফুটপাথে জীবনযাপনের পেছনে ওই মহিলার অন্য ধান্দা রয়েছে৷ কারণ, সরকারি সমস্ত সুযোগ সুবিধা থাকা সত্ত্বেও তিনি যেতে চাইছেন না৷ তাঁর কথায়, শিশুর ভরণ-পোষণ এবং মহিলার থাকা-খাওয়ার সমস্ত ব্যবস্থা করবে ত্রিপুরা সরকার৷ তবুও তিনি যেতে চাইছেন না৷ বরং, গতবার আমাদের লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছুঁড়েছেন, নোংরা ভাষায় গালিগালাজ করেছেন৷ নীলিমা ঘোষ জানিয়েছেন, ডিসিপিও, সদর মহকুমা প্রশাসন, টিসিপিসিআর, চাইল্ড লাইন এবং মহিলা কমিশন যৌথ অভিযান চালিয়ে দুই শিশু সহ মহিলাকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয়েছে৷ তাদের এখন মঙ্গলালোক হোমে রাখার ব্যবস্থা হবে৷


রাজ্য মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সন বর্ণালী গোস্বামী বলেন, আড়াই বছর ধরে ওই মহিলাকে হোমে পাঠানোর চেষ্টা চলছে৷ কিন্তু, তার তীব্র আপত্তিতে শিশু ও মাকে হোমে পাঠানো সম্ভব হচ্ছিল না৷ বর্ণালী গোস্বামীর কথায়, সরকারি সমস্ত সুযোগ-সুবিধা থাকা সত্ত্বেও কোনও মহিলাকে ফুটপাথে জীবন-যাপন করা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক৷ তাই, আজ তাকে বলপূর্বক হোমে পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে৷ মহিলা কমিশনের চেয়ারপার্সনের দাবি, সরকার ওই মহিলা এবং তার দুই শিশু সন্তানের সমস্ত দায়িত্ব বহন করবে৷ শিশুদের পড়াশুনা এবং তাদের থাকা-খাওয়ার সমস্ত ব্যয় সরকারি কোষাগার থেকে হবে৷


এদিকে, ওই মহিলাকে পুলিশ তুলে নিয়ে গেলেও হোমে যেতে তার আপত্তি রয়েছে বলে বার চিৎকার করছিলেন৷ তার বক্তব্য, ফুটপাথেই দুই সন্তান নিয়ে ভালো রয়েছেন৷ ভিক্ষা করে দিন দিব্যি কেটে যাচ্ছে৷ তাই, তিনি হোমে যাবেন না৷ বার বার চিৎকার করে দুই সন্তানকে ফিরিয়ে দিয়ে তাকে ছেড়ে দেওয়ার জন্য বলছেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *