টিপিএফ-এর ১২ ঘণ্টা বনধ, স্তব্ধ ত্রিপুরার এডিসি এলাকা

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা/তেলিয়ামুড়া, ২৫ নভেম্বর৷৷ ফায়ারম্যান বিশ্বজিৎ দেববর্মার মৃত্যুর প্রতিবাদে আজ বুধবার ১২ ঘণ্টার এডিসি এলাকা বনধ পালন করছে ত্রিপুরা পিপলস ফ্রন্ট (টিপিএফ)৷ তবে, এ-বিষয়ে সংবাদ মাধ্যমের মুখোমুখি হচ্ছেন না টিপিএফ-প্রধান পাতালকন্যা জমাতিয়া৷ এতে স্পষ্ট, এডিসি ভোটকে পাখির চোখ করে পাহাড়ে জমি দখলের উদ্দেশ্যেই এই বনধ-এর ডাক দেওয়া হয়েছে৷ কারণ, আনুষ্ঠানিকভাবে আহূত এই বনধ-এর আগাম কোনও ঘোষণা করেনি টিপিএফ৷ আজকের বনধ-এ অবরুদ্ধ জাতীয় সড়ক এবং রেল পরিষেবাও স্তব্ধ হয়ে পড়েছে৷


সম্প্রতি, পানিসাগরে জাতীয় সড়ক অবরোধ চলাকালীন মৃত্যু হয়েছিল ফায়ারম্যান বিশ্বজিৎ দেববর্মার৷ তাঁর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে পাহাড়ে জনজাতিভিত্তিক রাজনৈতিক দলগুলি নিজ নিজ কায়দায় পরিস্থিতি উত্তপ্ত করে রেখেছে৷ বিশেষ করে শাসক জোট শরিক আইপিএফটি গত দুদিন ধরে বিশ্বজিৎ দেববর্মার মৃত্যুর সঙ্গে জড়িত দোষীর কঠোর শাস্তির দাবিতে বাজার গরম করে রেখেছে৷ এক ধাপ এগিয়ে আজ টিপিএফ এডিসি এলাকায় বনধ-এর ডাক দিয়েছে৷

টিপিএফ-এর ডাকা বারো ঘণ্টা এডিসি বনধ-এর জেরে সর্বত্রই প্রভাব পড়েছে৷ খোয়াই জেলায় তেলিয়ামুড়া ত্রিশাবাড়িতে অবস্থিত রেল স্টেশনের সামনে টিপিএফ দলের কর্মী সমর্থকরা খোয়াই-তেলিয়ামুড়া সড়ক পথ অবরোধ করেন৷ গাড়ির টায়ার জ্বালিয়ে তারা তাদের বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন৷ এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে তেলিয়ামুড়া ত্রিশাবাড়ি রেলস্টেশন সংলগ্ণ এলাকার পরিস্থিতি উত্তপ্ত৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে মোতায়েন করা হয়েছে প্রচুর সংখ্যক পুলিশ ও টিএসআর বাহিনী৷ এলাকাজুড়ে বিরাজ করছে থমথমে ভাব৷


বনধ-কে ঘিরে বিপাকে পড়েছেন রোগী থেকে শুরু করে যাত্রীসাধারণ৷ অনেকে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য বারবার অনুরোধ জানিয়েও কোনও লাভ হয়নি৷ হতাশ হয়ে তাঁরা ঘরমুখি হচ্ছেন৷ জনৈক রোগীর পরিবারের সদস্য বলেন, অতীতে অনেক বনধ হয়েছে৷ কিন্তু, হাসপাতাল যাত্রী, অ্যাম্বুলেন্স ইত্যাদিকে বনধ-এর আওতার বাইরে রাখা হতো৷ কিন্তু, আজ অনেক কাকুতি-মিনুতি করেও কোনও ফল মিলেনি৷ বনধ সমার্থকরা রোগী নিয়ে হাসপাতালে যাওয়ার জন্য গাড়ি যেতে দেননি৷ বাধ্য হয়ে ফিরে যাচ্ছি, হতাশার সুরে বলেন তিনি৷ এদিন টিপিএফ কর্মীরা অসম-আগরতলা জাতীয় সড়কও অবরোধ করেছেন৷ চম্পকনগরে অবস্থিত মাধববাড়ি এবং আঠারোমুড়া পাহাড়ের ৩৬ মাইল এলাকায় টিপিএফ দলের কর্মী সমর্থকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করছেন৷
টিপিএফ-এর ডাকা বনধ-এ ধলাই, উত্তর ত্রিপুরা, দক্ষিণ ত্রিপুরা এবং গোমতি জেলায়ও প্রভাব পড়েছে৷ বিশেষ করে ধলাই জেলা পুরো শুনশান হয়ে পড়েছে৷ বাজার হাট, দোকানপাট খুলেনি৷ যানবাহন চলাচল স্তব্ধ হয়ে রয়েছে৷ এই বনধ-কে ঘিরে সমগ্র ত্রিপুরায় আতঙ্কের পরিবেশ কায়েম হয়েছে৷ ফলে, পাহাড়ে মানুষজন বাড়িঘর থেকে বের হচ্ছেন না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *