নিজস্ব প্রতিনিধি, চড়িলাম, ২৮ অক্টোবর৷৷ স্ত্রী-র বিরুদ্ধে স্বামীকে খুনের অভিযোগ উঠেছে৷ পরকীয়া সম্পর্কের এই পরিণতি বলে এলাকাবাসী দাবি করেছেন৷ পুলিশ মৃতের পরিবার এবং এলাকাবাসীর অভিযোগের ভিত্তিতে স্ত্রী-কে গ্রেফতার করেছে৷ এলাকাবাসী মৃতের শ্বশুর ও শাশুড়িকেও গ্রেফতারের দাবি জানিয়েছেন৷ সিপাহিজলা জেলার বিশালগড় থানাধীন গকুলনগর ভৌমিকপাড়ায় সংগঠিত ঘটনায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে৷
দীপঙ্কর ভৌমিককে তার স্ত্রী অনামিকা শর্মা ভৌমিক খুন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে৷ মঙ্গলবার রাতে দীপঙ্করকে ঘরের মধ্যেই অচৈতন্য অবস্থায় উদ্ধার করে পরিবারের সদস্যরা হাঁপানিয়ায় ত্রিপুরা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে যান৷ সেখানে চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷
এই ঘটনায় মৃতের মা জানিয়েছেন, প্রায় পুত্রবধূ অনামিকা তাঁর ছেলেকে মারধর করতেন৷ বিয়ের পর থেকে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া প্রায় লেগেই থাকত৷ পুত্রবধূর হাতে তাঁর ছেলে একাধিকবার প্রহৃত হয়েছেন৷ মৃতের মা অভিযোগ করে বলেন, তাঁর পুত্রবধূ দুবার স্বামীর মাথা ফাটিয়েছেন এবং একবার দাঁত ভেঙে দিয়েছেন৷ গতকাল রাতেও তাঁদের মধ্যে ঝগড়া হয়েছিল৷ তখন তাঁর দীপঙ্করকে অনামিকা খুন করেছে৷ এখন মৃত্যুর কারণ নিয়ে নাটক করছেন, পুত্রবধূ অনামিকার বিরুদ্ধে এই গুরুতর অভিযোগ এনেছেন সদ্য পুত্রহারা মা৷
একই অভিযোগ এনেছেন এলাকাবাসীও৷ জনৈক প্রতিবেশী মহিলা বলেন, ভালোবেসে তারা বিয়ে করেছিল৷ তাদের চার বছরের একটি কন্যা সন্তান রয়েছে৷ কিন্তু প্রায়ই তাদের মধ্যে ঝগড়া লেগেই থাকত৷ ঝগড়া হলেই স্বামী দীপঙ্করকে প্রচণ্ড মারধর করত তার স্ত্রী৷ তাতে মৃতের শ্বশুর-শাশুড়িও ইন্ধন দিতেন বলে ওই মহিলা অভিযোগ করেছেন৷ তিনি বলেন, গতকাল রাতে চিৎকার শুনে আমরা ছুটে গিয়ে দেখি দীপঙ্কর খাটে শুয়ে রয়েছেন৷ তার গলায় ফাঁস লাগানোর চিহ্ণ ছিল৷ তার অবস্থা দেখে সকলে মিলে তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল৷ কিন্তু চিকিৎসকরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন৷ তিনি অভিযোগ করে বলেন, দীপঙ্করের স্ত্রী তাকে খুন করে এখন ঘটনা ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করছে৷
এই ঘটনায় প্রতিবেশী আরেক মহিলা বলেন, দীপঙ্করদের বাড়িতে অনেকের আনাগোনা ছিল৷ তাতে মানে হচ্ছে, পরকীয়ার জেরেই তাকে খুন করা হয়েছে৷ তাছাড়া তার স্ত্রী তাকে মারধর করলেও কখনও দীপঙ্করের শ্বশুর-শশুড়ি তাদের মীমাংসার জন্য এগিয়ে আসেননি৷ তাতে স্পষ্ট, স্বামীকে অত্যাচারের পেছনে মেয়েকে তার মা-বাবা ইন্ধন দিতেন৷ তাদের প্ররোচনায় স্বামীকে খুন করেছেন অনামিকা, অভিযোগ করেছেন ওই মহিলা৷
স্বামী খুনের অভিযুক্ত স্ত্রী অনামিকা জানিয়েছেন, গতকাল রাতে আহারের পর ঘরে ফিরে দেখেন দীপঙ্কর গলায় গামছা জড়িয়ে ঝুলে রয়েছেন৷ তখন স্বামীর গলা থেকে গামছা খুলে খাটে শুয়ে দিয়েছিলেন তিনি৷ অনামিকার দাবি, পরিবারের সকলে এসে তাকে এই অবস্থায় দেখে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন৷ কিন্তু, তার মৃত্যু কীভাবে এবং কী কারণে হয়েছে তা বুঝতে পারছেন না৷
এদিকে ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে বিশালগড় থানার পুলিশ অভিযুক্ত স্ত্রীকে গ্রেফতার করেছে৷ ময়না তদন্তের রিপোর্ট পাওয়ার পর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে প্রাথমিক ধোঁয়াশা মিটবে পুলিশ আশা করছে৷ ওই খুনের পেছনে রহস্য উন্মোচনে পুলিশ তদন্ত শুরু করেছে৷