নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৪ সেপ্ঢেম্বর৷৷ মিজোরামের ব্রো রিয়াং শরণার্থী পুনর্বাসন নিয়ে উত্তরে প্রতিবাদ তুঙ্গে৷ দীর্ঘদিন থেকে উত্তর জেলার কাঞ্চনপুর মহাকুমায় ৫১০০ শরণার্থী পরিবারকে পুনর্বাসন নিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছিল বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা৷ কিন্তু বিগত জুলাই মাসে রাজ্য সরকার কাঞ্চনপুর এবং পানিসাগর মহকুমায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য সিদ্ধান্তের তীব্র প্রতিবাদ জানায় কাঞ্চনপুরের জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটি সহ বিভিন্ন সামাজিক সংস্থা স্থানীয় নাগরিকরা৷
তা নিয়ে ১২ ঘণ্টা কাঞ্চনপুর মহকুমা বন্ধ কর্মসূচি পালন করা হয় কাঞ্চনপুর জয়েন্ট মুভমেন্ট কমিটির উদ্যোগে৷স্থানীয় সংস্থা ও জনগণের দাবি, রাজ্যের ৮ টি জেলাতে সমানভাবে ব্রো রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়া হোক৷ এ মর্মে উত্তর জেলার ধর্মনগর মহকুমাধীন লক্ষীনগরের মিশ্র স্থানীয় জনগণ গত ৯ জুলাই জেলাশাসকের কাছে একটি লিখিত অভিযোগে বলেন, লক্ষীনগর, চাঁদপুর মৌজার ফরেস্ট ল্যান্ডের কাটোয়াছড়া ও মইজুইরাম পাড়ায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন যাতে দেওয়া না হয়৷ কিন্তু আজ সকালবেলা লক্ষীনগর ,চাঁদপুর মৌজার কাটোয়া ছড়া ও মইজুইরাম এলাকার ফরেস্ট ল্যান্ডে রিয়াং ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য ৩ জনের সার্ভের একটি টিম আসে৷ সার্ভের টিমকে দেখতে পেয়ে স্থানীয় মিশ্র সম্প্রদায়ের জনগণ সার্ভের টিমকে ওই এলাকায় সার্ভে করতে বাধা প্রদান করেন৷ এবং স্থানীয় হিন্দু-মুসলিম মনিপুরী দেববর্মা রাংলং সহ সকল সম্প্রদায়ের মিশ্র জনগণ ৮ নং জাতীয় সড়কের পাশে প্রতিবাদ করতে শুরু করেন৷
তাদের একটাই দাবি কাটোয়া ছড়া ও মইজুইরাম পাড়ায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন কোন ভাবে দেওয়া চলবে না৷ অবশেষে পরিস্থিতি বেগতিক দেখে ধর্মনগর মহাকুমার অতিরিক্ত মহকুমা শাসক সূর্যকুমার দেববর্মা ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন৷ ঘটনাস্থলে এসে স্থানীয় জনগণকে আশ্বস্ত করেন, ওই এলাকায় রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসন ইতিমধ্যে হচ্ছে না৷ রাজ্য সরকারের নির্দেশে শরণার্থীদের পুনর্বাসনের জন্য পর্যাপ্ত পরিমাণে ফরেস্ট ল্যান্ড আছে কিনা তা চিহ্ণিত করার জন্যই এই সার্ভে৷ অতিরিক্ত মহকুমা আধিকারিক স্থানীয় জনগণকে আরো বললেন যে, উনাদের দাবি-দাওয়া গুলি লিখিতভাবে জেলা শাসকের কাছে একটি ডেপুটেশন আকারে প্রদান করার জন্য৷ উনার আশ্বাসে আশ্বস্ত হয়ে স্থানীয় প্রতিবাদকারীরা উনাদের প্রতিবাদ আজকের মত প্রত্যাহার করেন৷ তবে স্থানীয়দের বক্তব্য, লক্ষী নগর, চাঁদপুর মৌজার অন্তর্গত চুরাইবারি ফরেস্ট বিটের আওতাধীন কাটোয়া ছড়া ও মইজুরাম পাড়ায় মিজোরাম ভ্রু শরণার্থীদের কোনভাবে পুনর্বাসন উনারা মেনে নেবেন না৷
প্রয়োজনে ৮ নং আসাম আগরতলা জাতীয় সড়ক অবরোধ করে অমরণ প্রতিবাদ করবেন৷ উনাদের দাবি যুগ যুগ থেকে ওই এলাকার ফরেস্ট ল্যান্ডে জুম চাষ করে উনারা জীবিকা নির্বাহ করে আসছেন৷ জুম চাষই তাদের একমাত্র সম্বল৷ তাছাড়া স্থানীয় জনগণ দখলকৃত সরকারি ফরেস্ট ল্যান্ডে নিজের নামে পাট্টা পেয়েছেন৷ অনেকে আবার পাট্টা পাওয়ার আবেদনও জমা করেছেন৷ সোর্স মারফত স্থানীয়রা জানতে পেরেছেন উত্তর জেলার ৭ টি জায়গাতে ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে৷ তারমধ্যে কাটোয়া ছড়া ও মইজুইরাম পাড়ায় ১ হাজার ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসন দেওয়া হবে৷ আর তারই প্রতিবাদে স্থানীয়রা আজ প্রতিবাদ সাব্যস্ত করে৷ এখন দেখার বিষয় উত্তর জেলার জেলাশাসক কাটোয়া ছড়া ও মইজুরাম পাড়ায় মিজোরাম ব্রো শরণার্থীদের পুনর্বাসন নিয়ে কি ভূমিকা পালন করেন৷