নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৪ সেপ্ঢেম্বর৷৷ কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতির কারণে ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরী কমিশন রাজ্যে ২০২০-২১ আর্থিক বছরের জন্য বিদ্যুৎ মাশুল বৃদ্ধি না করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ২০১৪ সাল থেকে বিভিন্ন ক্ষেত্রে যে হারে বিদ্যুৎ মাশুল কার্যকর রয়েছে তাই বজায় রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ আজ দুপুরে আগরতলা প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরী কমিশনের চেয়ারম্যান এস রাধাকৃষ্ণান এই তথ্য জানিয়েছেন৷
তিনি জানান, সমগ্র দেশ এবং রাজ্য কোভিড-১৯ জনিত কারণে এমন এক পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে চলেছে যা অভূতপূর্ব৷ এই অস্বাভাবিক পরিস্থিতির বিচার বিশ্লেষণ করে কমিশন ভোক্তাদের রিলিফ দেবার জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে৷ কমিশনের চেয়ারম্যান জানান, বিদ্যুতের বিল পরিশোধ না করার জন্য গত কয়েকমাসে কোন ভোক্তারই বিদ্যুৎ লাইন ছিন্ন করা হয়নি৷ উপরন্তু যে সমস্ত ভোক্তা দ্রত বিদ্যুৎ বিল পরিশোধ করবেন তাদের পাঁচ শতাংশ ছাড় দেবার সিদ্ধান্ত নিয়েছে কমিশন৷ ম্যানুয়েলী অথবা যারা ক্রেডিট কার্ড, ডেবিট কার্ড, ইউ পি আই, ভীম, ইন্টারনেট ব্যাঙ্কিং, মোবাইল ব্যাঙ্কিং, মোবাইল ওয়েনেট ইত্যাদির মত ডিজিটাল মোডে যারা বিদ্যৎ বিল পরিশোধ করে থাকেন তাদের সবার ক্ষেত্রেই এই পাঁচ শতাংশ ছাড় কার্যকর হবে৷ চেয়ারম্যান এস রাধাকৃষ্ণান বলেন, কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতির কারণে যখন অধিকাংশ এলাকাতেই বিল করা এবং অর্থ সংগ্রহ করা কষ্টসাধ্য হয়ে পড়েছে সে সময় কমিশনের এই সিদ্ধান্তে টি এস ই সি এল-এ অর্থ রাশির যোগান বাড়বে৷ সমস্ত ক্ষেত্রের ভোক্তাদের পাঁচ শতাংশ ছাড় দেবার পাশাপাশি ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরী কমিশন আজ কফি ও রাবার বাগানের ভোক্তাদের ক্ষেত্রেও দ্রত বিল পরিশোধ করলে দশ শতাংশ ছাড় দেবার কথা ঘোষণা করেছে৷ প্রি-পেইড মিটার ব্যবহারকারীদের উৎসাহিত করার জন্য সমগ্র বিদ্যৎ বিলের উপর সব স্তরের ভোক্তাদের পাঁচ শতাংশ ছাড় দেবার কথাও কমিশন আজ ঘোষণা করেছে৷ হার্ডকপির পরিবর্তে কোন ভোক্তা বিদ্যৎ বিলের ডিজিটাল কপি ব্যবহার করলে সে ক্ষেত্রে ভোক্তাকে গো-গ্রীণ পদক্ষেপের অঙ্গ হিসাবে ১০ টাকা ছাড় দেওয়া হবে৷
ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরী কমিশনের চেয়ারম্যান এস রাধকৃষ্ণান বলেন, ত্রিপুরায় সর্বশেষ বিদ্যুৎ মাশুল পুননির্ধারণ করা হয়েছিল ২০১৪ সালে৷ এই সময়ের পর থেকে গ্যাসের দাম অনেক বেড়েছে৷ কিন্তু কোভিড-১৯ জনিত পরিস্থিতিতে বিদ্যুৎ মাশুল বাড়ানো উচিৎ নয় বলে কমিশন মনে করে৷ উপরন্তু ভোক্তাদের রিলিফ দেবার জন্য একাধিক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে৷ ইতিমধ্যেই ২০২০’র ৪ এপ্রিলের কমিশনের এক আদেশে বিদ্যুৎ উৎপাদনকারী সংস্থা, লাইসেন্সধারীগণ এবং রাজ্যের ভোক্তাদের কিছু ছাড় দেওয়া হয়েছে৷ তিনি বলেন, বিদ্যৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে নিরাপত্তার বিষয়টির উপর বিশেষ জোর দেওয়া হয়েছে৷ বিদ্যুৎ উৎপাদনের খরচ কিভাবে কমানো যায় সেদিকে বিশেষভাবে নজর দেওয়া হচ্ছে৷ তিনি বলেন, ত্রিপুরা বিদ্যৎ উৎপাদনে উদ্বৃত্ত৷ এর সুুবিধা কিভাবে আরও ভালভাবে কাজে লাগানো যায় তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে৷
বিদ্যুৎ ব্যবহারের ক্ষেত্রে কমিশন আজ ভোক্তাদের যে সমস্ত ছাড় দেওয়ার কথা ঘোষণা করেছে তা ১লা সেপ্ঢেম্বর, ২০২০ থেকে কার্যকর হবে৷ সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা ইলেকট্রিসিটি রেগুলেটরী কমিশনের সদস্য জীবন কৃষ্ণ সেনও উপস্থিত ছিলেন৷