হাফলং (অসম), ২২ আগস্ট (হি.স.) : ডিমা হাসাও জেলার পাহাড়ি নদী থেকে অবৈধভাবে পাথর খননের জেরে প্রাকৃতিক ভারসাম্য বিনষ্ট হওয়ার পথে। অথচ জেলার পাহাড়ি নদীগুলি থেকে অবৈধ ভাবে পাথর সংগ্রহ করে বাইরে পাচার অব্যাহত রয়েছে। অভিযোগ, মণিপুরগামী রেলওয়ের ব্রডগেজ লাইন সম্প্রসারণের কাজ চলছে। এই ব্রডগেজ সম্প্রাসরণ কাজের জন্য ডিমা হাসাও জেলা থেকে বিনা বাধায় পাথর তুলে নিয়ে কাজে লাগানো হচ্ছে।
অভিযোগ মতে, জাটিঙ্গা নদী, দিয়ুং নদী থেকে দিনের পর দিন অবৈধ ভাবে পাথর খননের জেরে ডিমা হাসাও জেলার প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষার ক্ষেত্রে প্রতিনিয়ত প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি হওয়ার পাশাপাশি পরিবেশের ওপর বিরূপ প্রভাব পড়ছে। পরিবেশপ্রেমিরা বলছেন, এর দরুন ডিমা হাসাও জেলায় বৃষ্টিপাতের পরিমাণও কমে আসছে। আর এমনটা হওয়ার দরুন ডিমা হাসাও জেলায় ক্রমশ জলের সমস্যা দেখা দিচ্ছে।
তাঁদের বক্তব্য, গোটা পাহাড়ি জেলার পানীয় জলের উৎস স্থল হচ্ছে এ সব পাহাড়ি নদী। কিন্তু পাহাড়ি নদী থেকে এভাবে অবাধে পাথর খনন অব্যাহত থাকায় হাফলং সহ তার আশপাশ এলাকার গ্রামগুলিতে পানীয় জলের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। কারণ পাথর খননের ফলে বৃষ্টিপাতের মাত্রা কমে যাওয়ার দরুন জলের উৎস স্থলগুলি শুকিয়ে যাচ্ছে। তাই ডিমা হাসাও জেলায় পাহাড়ি নদীগুলিতে অবৈধ পাথর খনন বন্ধ করতে প্রতিবাদে মুখর হয়ে উঠেছেন বিভিন্ন দল সংগঠন সহ সাধারণ মানুষ।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে জাটিঙ্গা ও দিয়ুং নদীর পাশে এভাবে অবৈধ পাথর খনন বন্ধ করার দাবিতে জাটিঙ্গার পার্শ্ববর্তী সাতটি গ্রামের মানুষ প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করেছেন। সেভ দিয়ুং রিভার, অবৈধ পাথর খনন বন্ধ করো ইত্যাদি প্ল্যা-কার্ড হাতে নিয়ে প্রতিবাদী কর্মসূচি পালন করে এল সিংসন বলেন, দিয়ুং নদী থেকে অবৈধ পাথর খননের জেরে পাহাড়ি জেলার প্রাকৃতিক ভারসাম্য হারিয়ে যাচ্ছে। তাছাড়া পরিবেশের ওপরও এর ব্যাপক প্রভাব পড়ছে। এমন-কি হাফলং সহ তার আশপাশ এলাকার গ্রামগুলি তীব্র জল সঙ্কটে ভুগছে। তাঁর ব্যাখ্যা, দিয়ুং নদী ওই সব গ্রামে জল সরবরাহের একমাত্র প্রধান উৎস। কিন্তু এভাবে পাথর খননের ফলে পানীয় জলের সমস্যা তীব্র আকার ধারণ করেছে হাফলং শহরেও। তাছাড়া দিয়ুং নদী ঘেঁষা গ্রামগুলিতে অন্যান্য বিভিন্ন সমস্যাও দেখা দিচ্ছে।
এল সিংসন বলেন, দিয়ুং নদীতে এলএনটি নিয়ে প্রবেশে বন বিভাগের নিষেধাজ্ঞা থাকার পরও ওই নদী থেকে এলএনটি দিয়ে পাথর সংগ্রহ করা হচ্ছে। তাই এভাবে অবৈধ পাথর খনন অবিলম্বে বন্ধ করার দাবি জানিয়ে উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের প্রধান সচিবের কাছে এক স্মারকলিপিও প্রদান করেছেন তাঁরা, জানান এল সিংসন।