BRAKING NEWS

দু’পাতার দীর্ঘ চিঠি লিখে ধোনি শুভেচ্ছা জানালেন প্রধানমন্ত্রী

নয়াদিল্লি, ২০ আগস্ট (হি.স.) : “মহেন্দ্র সিং ধোনি নামটা শুধুমাত্র পরিসংখ্যান বা হার-জিতের নিরিখে লোকে মনে রাখবে না। যদি একমাত্র ক্রীড়াবিদ হিসেবে তোমাকে বিবেচনা করা হয়, তবে সেটা যথাযথ হবে না। আসল বিষয় হল তোমার প্রভাব।” আন্তর্জাতিক ক্রিকেট থেকে অবসর নেওয়ার পর মহেন্দ্র সিং ধোনিকে চিঠি লিখে এভাবেই শুভেচ্ছা জানান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। দু’পাতার দীর্ঘ চিঠিতে উত্থাপন করেছেন নানা প্রসঙ্গ ।

দু’পাতার দীর্ঘ চিঠিতে প্রধানমন্ত্রী লেখেন,  ‘১৫ আগস্ট তুমি পরিচিত চমকের ঢংয়েই একটা ছোট্ট ভিডিও শেয়ার করেছ, যেটা সারা দেশের দীর্ঘ ও আগ্রহজনক আলোচনার বিষয়ে পরিণত হওয়ার পক্ষে যথেষ্ট ছিল। ১৩০ কোটি ভারতবাসী হতাশ নিশ্চিত তবে গত দেড় দশকে তুমি ভারতীয় ক্রিকেটের জন্য যা করেছ, তার জন্য সকলে একযোগে কৃতজ্ঞও বটে।

যদি পরিসংখ্যানের নিরিখে তোমার কেরিয়ারের দিকে তাকানো যায়, তবে তুমি একজন অন্যতম সফল অধিনায়ক, যে ভারতকে বিশ্বের শিখরে নিয়ে গিয়েছ। তোমার নাম ক্রিকেটের ইতিহাসে অন্যতম সেরা ব্যাটসম্যান, সেরা ক্যাপ্টেন এবং অবশ্যই সেরা উইকেটকিপারের তালিকায় লেখা থাকবে।

যে কোনও পরিস্থিতিতে তোমার নির্ভরযোগ্যতা ও ম্যাচ ফিনিশ করার স্টাইল, বিশেষ করে ২০১১ বিশ্বকাপ ফাইনালের কথা প্রজন্মের মনে গাঁথা থাকবে।

তবে মহেন্দ্র সিং ধোনি নামটা শুধুমাত্র পরিসংখ্যান বা হার-জিতের নিরিখে লোকে মনে রাখবে না। যদি একমাত্র ক্রীড়াবিদ হিসেবে তোমাকে বিবেচনা করা হয়, তবে সেটা যথাযথ হবে না। আসল বিষয় হল তোমার প্রভাব।

একটা ছোট শহর থেকে উঠে এসে জাতীয় স্তরে জায়গা করে নিয়েছ, নিজের সুনাম অর্জন করেছ এবং দেশকে গর্বিত করেছ। তোমার উত্থান যুব সমাজকে কোন পরিবারের থেকে উঠে আসছে না ভেবে নিজেদের সর্বোচ্চ মঞ্চে প্রতিষ্ঠিত করার শক্তি জোগাবে।

তুমি নতুন ভারত অভিযানের যথার্থ বার্তাবাহক, যেখানে পরিবারের নাম গুরুত্বপূর্ণ নয়। যুবসমাজের লক্ষ্য নিজের নাম ও পরিচয় তৈরি করা।

তোমার মাঠের অনেক ঘটনা বর্তমান প্রজন্মের কাছে উদাহরণ হয়ে থাকবে। বর্তমান প্রজন্মের ভারতবাসী কঠিন সময়েও একে অপরের ক্ষমতাকে সমর্থন করার ঝুঁকি নিতে পিছপা হবে না। ২০০৭ টি-২০ বিশ্বকাপের ফাইনালই সেই স্পিরিটের যথার্থ নমুনা।

তোমার বহু ম্যাচ ও ইনিংস দেখে বর্তমান প্রজন্ম সিদ্ধান্ত নেওয়ার সময় স্নায়ুর চাপ অনুভব করবে না। আমাদের যুবসমাজ প্রতিকূলতাকে ভয় পাবে না এবং তোমার দলের মতোই নির্ভিকভাবে প্রতিকূলতার মুখোমুখি হবে।

তোমার হেয়ার স্টাইল যাই হোক না কেন, হার ও জিত, উভয় ক্ষেত্রেই তোমার ঠান্ডা মাথা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ শিক্ষা হয়ে থাকবে যুব সমাজের কাছে।

আলাদা করে উল্লেখ করা উচিত সশস্ত্র বাহিনীর সঙ্গে তোমার সংযোগের কথা। আমাদের সেনা জওয়ানদের সঙ্গে সময় কাটানোর মুহূর্তে সম্ভবত তুমিই সবথেকে খুশি ছিলে। তাঁদের কল্যাণের জন্য তোমার চিন্তা-ভাবনা এককথায় অসাধারণ।

আশা করি সাক্ষী ও জিভা তোমার সঙ্গে আরও বেশি করে সময় কাটানোর সুযোগ পাবে। ওদের জন্যও আমার শুভেচ্ছা রইল। কারণ, ওদের সমর্থন ও স্বার্থত্যাগ ছাড়া কোনও কিছুই সম্ভব হতো না। আমাদের যুব প্রজন্ম পেশাদার ও ব্যক্তিগত জীবনের মধ্যে ভারসাম্য বজায় রাখা শিখতে পারে তোমার কাছ থেকে। আমার একটা ছবির কথা মনে আছে, যেখানে সবাই জয়ের উৎসব পালনে ব্যস্ত, অথচ তুমি তোমার মিষ্টি মেয়ের সঙ্গে খেলা করছ। এটাই হল ধোনির সম্মোহন। ভবিষ্যতের জন্য তোমাকে শুভেচ্ছা জানাই।’

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *