নয়াদিল্লি, ২০ আগস্ট (হি. স.) : শ্রম ব্যুরোকে তার পরিধি আরও বাড়ানোর জন্য ডিজিটাল পদ্ধতিকে কাজে লাগানোর পরামর্শ দেওয়া হল। বৃহস্পতিবার এখানে এক বিভাগীয় অনুষ্ঠানে একথা বলেন বিভাগীয় প্রতিমন্ত্রী সন্তোষ কুমার গাঙ্গোয়ার।
তিনি বলেন, বর্তমানের আধুনিক ডেটা অ্যানালিটিক্স ও কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার মতো আধুনিক প্রযুক্তি-নির্ভর পদ্ধতিগুলি দৈনন্দিন কাজকর্মে আরও দক্ষতা নিয়ে আসতে পারে। নীতি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ডাটা বেস বা তথ্য-সংগ্রহের প্রয়োজনের উল্লেখ করে গাঙ্গোয়ার আরও বেশী তথ্য সংগ্রহ ও স্বল্প সময়ের মধ্যে তা যাচাইয়ের জন্য তথ্যপ্রযুক্তির ব্যবহার বাড়ানোর ওপর গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, কাগজপত্রবিহীন কাজকর্মের লক্ষ্য পূরণে ডিজিটাল পদ্ধতি গ্রহণ করা এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার সাহায্য নেওয়া বর্তমান সময়ের চাহিদা হয়ে উঠেছে। তথ্য সংগ্রহ ও সেগুলি বিশ্লেষণের কাজে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার বড় গুরুত্ব রয়েছে বলেও তিনি অভিমত প্রকাশ করেন।
সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় শ্রম ও কর্মসংস্থান মন্ত্রকের অধীন শ্রম ব্যুরোর সরকারি প্রতীক এদিন এখানে প্রকাশ করেন সন্তোষ কুমার গাঙ্গোয়ার। প্রতীক প্রকাশ অনুষ্ঠানে মন্ত্রকের সচিব হীরালাল সামারিয়া, লেবার ব্যুরোর মহানির্দেশক শ্রী ডি পি এস নেগি সহ মন্ত্রকের উচ্চপদস্থ আধিকারিকরা উপস্থিত ছিলেন। নতুন দিল্লির শ্রমশক্তি ভবনে আয়োজিত এই অনুষ্ঠানে শ্রম ব্যুরোর চেষ্টার প্রশংসা করে শ্রী গাঙ্গোয়ার বলেন, ১৯৪১-এ সিমলায় জীবনযাপনের খরচ সংক্রান্ত নির্দেশালয় স্থাপিত হয়। সে সময় এই ধরনের কার্যালয় স্থাপনের উদ্দেশ্য ছিল পারিবারিক ব্যয়বরাদ্দের ব্যাপারে অনুসন্ধান এবং এ সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করা। এছাড়াও, পারিবারিক খরচের সূচক সম্বলিত তথ্য একত্রিত করা হত। দেশে সেই সময়ে অভিন্ন পদ্ধতিতে এ ধরনের তথ্য সংগ্রহের বড় ভূমিকা ছিল। পরবর্তী সময়ে আরও বৃহত্তর স্বার্থে
শ্রমনীতি প্রণয়নের প্রেক্ষিতে আরও সুসংবদ্ধ শ্রমক্ষেত্র সংক্রান্ত পরিসংখ্যান সংগ্রহের প্রাথমিক উদ্দেশ্য নিয়ে ১৯৪৬-এর ১ অক্টোবর শ্রম ব্যুরো স্থাপন করা হয়। তখন থেকে এই ব্যুরো বা কার্যালয় সর্বভারতীয় স্তরে শ্রমক্ষেত্রের বিভিন্ন তথ্য সংগ্রহ, সংগৃহীত তথ্যের সমাবেশ, বিশ্লেষণ ও পরিসংখ্যা প্রচারের কাজে যুক্ত রয়েছে।
গাঙ্গোয়ার বলেন, সরকার কর্মসংস্থান বাড়ানোর লক্ষ্যে নিরন্তর কাজ করে চলেছে এবং এই প্রচেষ্টাকে
সফল করে তোলার জন্য প্রকৃত তথ্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এই উপলক্ষে তিনি ও মন্ত্রকের সচিব সংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের উদ্দেশে বলেন, শতক পুরনো ৪৪টি শ্রম আইন একত্রিত করে চারটি বিধিতে পরিণত করা হচ্ছে। এই চারটি বিধির মধ্যে ইতিমধ্যেই একটি সারা দেশে কার্যকর হয়েছে। বাকি তিনটি আইনে পরিণত করার জন্য ইতিমধ্যেই লোকসভায় পেশ হয়েছে। বাকি তিনটি বিধি আইনে পরিণত হলে ব্যবসা-বাণিজ্যের অনুকূল পরিবেশ গড়ে তোলার ক্ষেত্রে ভারতের স্থান ক্রমতালিকায় আরও ওপরে উঠে আসবে বলে তাঁরা অভিমত প্রকাশ করেন। এর ফলস্বরূপ, বিনিয়োগের ক্ষেত্রে ভারত আকর্ষণীয় গন্তব্য হয়ে উঠবে। এমনকি, শ্রম ব্যুরো আরও সহজভাবে শ্রম সংক্রান্ত তথ্য
সংগ্রহ করতে পারবে।
শ্রম সচিব লেবার ব্যুরোকে তাঁর দৈনন্দিন কাজকর্ম পরিচালনার জন্য ডিজিটাল পদ্ধতি গ্রহণ করার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, শ্রম আইন সংস্কারের প্রেক্ষিতে তথ্য সংগ্রহের জন্য লেবার ব্যুরোকে আরও বেশি দক্ষ হয়ে উঠতে হবে। শ্রম ব্যুরোর নতুন লোগোটিকে এমনভাবে রূপ দেওয়া হয়েছে যাতে এই কার্যালয় যে প্রকৃতপক্ষেই তথ্য-ভিত্তিক প্রতিষ্ঠান তা যেন সুস্পষ্টভাবে প্রতিফলিত হয়। এছাড়াও লোগোটিতে ব্যুরোর তিনটি উদ্দেশ্যকে তুলে ধরা হয়েছে। এগুলি হল– কর্মদক্ষতা, তথ্য যাচাই এবং প্রকাশিত তথ্যের বিশ্বাসযোগ্যতা। তিনটি রং বিশিষ্ট লোগোচিত্রটি জাতীয় পতাকার রঙের সঙ্গে সামঞ্জস্য রেখে তৈরি করা হয়েছে। এর পাশাপাশি, গ্রামীণ কৃষি শ্রমিকদের সাফল্যের প্রকৃত চিত্রটিকেও অনুপম রূপ দিয়ে তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে।