কলকাতা, ১৭ আগস্ট (হি. স.) : সেপ্টেম্বর মাসে লোকসভার বাদল অধিবেশন বসানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে মোদী সরকার। এ ব্যাপারে তৃণমূল-সহ দুতিনটি দলের অবস্থান ও সংক্রমণের কথা মাথায় রেখে ভার্চুয়াল সভার ব্যবস্থা হচ্ছে।
২৫ মার্চ জনতা কার্ফুর মধ্যে দিয়েই শুরু হয়ে গিয়েছিল দেশ জোড়া লকডাউন। তার আগে ২৩ মার্চ তড়িঘড়ি করে শেষ করে দেওয়া হয়েছিল সংসদের অধিবেশন। এই লকডাউন আর সংক্রমণের জেরে এবারে সংসদে বাদল অধিবেশন বসানো যায়নি সময় মতন। কিন্তু সাংবিধানিক ভাবে দুটি অধিবেশনের মধ্যেকার ব্যবধান ১৮০দিনের বেশি রাখা যায় না। সেই কথা মাথায় রেখেই কেন্দ্র সরকার উদ্যোগী হয়েছিল সংসদে ফের অধিবেশন চালু করার। তার জেরেই লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লা সব কটি রাজনৈতিক দলগুলির সঙ্গেই এই বিষয়ে কথাবার্তা বলেন জুলাই মাসে।
তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, সেই সময়েই বাংলার শাসক দল তরফে লোকসভায় দলের নেতা সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায় জানিয়ে দেন এই করোনাকালে তাঁরা সশরীরে উপস্থিতের মাধ্যমে অধিবেশন চান না। কেন্দ্র সরকার জোর করে এই বিষয়ে কিছু করতে চাইলে তৃণমূলের কেউই অধিবেশনে যোগ দেবে না।
জানা যাচ্ছে সমস্তরকম স্বাস্থ্যবিধি মেনে সেপ্টেম্বর মাসেই সংসদে অধিবেশন বসাতে উদ্যোগী হয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। ভার্চুয়াল সভার দাবি কিছুটা হলেও মেনে নিয়ে এমন ব্যবস্থা করা হচ্ছে যাতে কেউ সংক্রমিত না হন আবার সভাও চলতে পারে। এক তো সংসদের উভয় কক্ষের সাংসদদের বসার ব্যবস্থা হবে দূরত্ববিধি মেনে, তার ওপর বসার জন্য দুই কক্ষের চেম্বারের পাশাপাশি ব্যবহৃত হবে গ্যালারিও। শক্তি অনুযায়ী বিভিন্ন দলের সাংসদদের চেম্বার এবং গ্যালারিতে দূরত্ববিধি মেনে বসানো হবে।
অধিবেশন দেখতে বা শুনতে যাতে কোনও সমস্যা না হয় তার জন্য ১০টি স্ক্রিন বসানো হচ্ছে সংসদ ভবনে। চারটি বড় ডিসপ্লে স্ক্রিন বসানো হবে সাংসদদের চেম্বারে আর ৬টি স্ক্রিন বসবে গ্যালারিতে। একই সঙ্গে রাজ্যসভা ও লোকসভা অধিবেশন চালানো হবে না। আলাদা আলাদা সময়ে মাত্র ৪ ঘণ্টা করে দুই কক্ষের অধিবেশন চলবে। প্রথমে বসবে লোকসভার অধিবেশন, তারপর বসবে রাজ্যসভার অধিবেশন। সংসদের ভেতরে এসির মাধ্যমে অতি বেগুনি রশ্মি ব্যবহার করে ভাইরাস দমনের চেষ্টা করা হতে পারে বলেও সুত্র মারফত জানা গিয়েছে।
বিধিনিষেধ আরোপিত হচ্ছে সংসদের আধিকারিক ও সাংবাদিকদের ক্ষেত্রেও। উভয়কেই গ্যালারিতে সামাজিক দূরত্ব বিধি মানতে হবে। লোকসভায় ১৫ এবং রাজ্যসভায় সর্বোচ্চ ৭ জনকে প্রবেশের অনুমতি দেওয়া হতে পারে। মানে একই সময়ে ১৫জন আধিকারিক ও ১৫জন সাংবাদিক প্রবেশাধিকার পাবেন লোকসভার অধিবেশনের ক্ষেত্রে। রাজ্যসভায় তা ৭জন করে। একই সঙ্গে সাংবাদিকদের সেন্ট্রাল হলে প্রবেশের অনুমতিও দেওয়া হচ্ছে না। এমনকী প্রাক্তন সাংসদরাও অনুমতি পাবেন না সেন্ট্রাল হলে ঢোকার অনুমতি। তবে এত কিছু ব্যবস্থা নিয়েও সংক্রমণ কতখানি ঠেকানো যাবে তা নিয়ে যেমন প্রশ্ন রয়ে গিয়েছে।