নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৭ জুলাই৷৷ করোনা-র সংক্রমণ রুখতে ত্রিপুরায় ৩ দিনের লকডাউন শুরু হয়েছে৷ অবশ্য, রবিবার রাত ৯টা থেকেই কার্যত লকডাউন শুরু হয়ে গেছে৷ কারণ, কারফিউ শুরু হয়ে যাওয়ায় জরুরি পরিষেবা ছাড়া মানুষের বাড়ির বাইরে বের হওয়ায় নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷ আজ সকাল থেকেই লকডাউনে মানুষের স্বতঃস্ফূর্ত সাড়া মিলেছে৷ রাস্তাঘাট প্রায় শুনশান৷ বন্ধ দোকানপাট৷ বাস স্ট্যান্ডগুলি-তে ঠায় দাঁড়িয়ে রয়েছে বিভিন্ন রুটের যানবাহন৷ কয়েকটি বাজারে অল্পকিছু দোকান খুলেছে৷ একইসাথে করোনা-র খোঁজে বাড়ি বাড়ি সমীক্ষার কাজ জোর কদমে চলছে৷
প্রতিদিন সংক্রমণের সংখ্যাটা বেড়ে চলেছে৷ সেই সঙ্গে বাড়ছে মৃত্যুও৷ এই অবস্থায় রাজ্য সরকার লকডাউনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ ঘোষণা অনুযায়ী সোমবার ভোর ৫টা থেকে বৃহস্পতিবার ভোর ৫টা অব্দি চলবে লকডাউন৷ কি কি লকডাউনের আওতায় থাকবে এবং কি কি থাকবে না ইতিমধ্যেই সরকারের তরফে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ এদিকে, রবিবার থেকেই গোটা শহরে প্রচুর নিরাপত্তা বাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে৷
এ-বিষয়ে পশ্চিম জেলা পুলিশ সুপার মানিক দাস জানিয়েছেন, কোন জরুরি কাজ ছাড়া কেউ ঘর থেকে বের হলে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ চালাবে৷ যারাই বের হবে মোটর যানগুলিকে চেকিং এবং চালককে অবশ্যই প্রমাণপত্র দেখাতে হবে৷ লকডাউনের দিনগুলিতে আইন যারা ভঙ্গ করবে তাদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে৷ অন্যদিকে মাস্ক ছাড়া বের হলে এবং সামাজিক দূরত্ব বজায় না রাখলে ১ হাজার টাকা জরিমানা করা হবে৷
সে-মোতাবেক আজ সকাল থেকেই পুলিশ নজরদারি চালিয়েছে৷ যান চালাক-দের জিজ্ঞাসাবাদ করছে৷ আগরতলা ছাড়াও সারা ত্রিপুরাতেই একইভাবে লকডাউন পালনে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ গ্রামীণ এলাকাতেও জনজীবন স্তব্ধ হয়ে রয়েছে৷ মানুষ বাড়িঘরেই রয়েছেন৷
এদিকে, সোমবার থেকে তিন দিনের লকডাউন হলেও বাজারগুলিতে এক-তৃতীয়াংশ দোকান খোলা রাখা হবে৷ সিপাহীজলা জেলার বিশালগড় এবং মেলাঘর বাজার ও ধলাই জেলার কমলপুর বাজার সম্পূর্ণ বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ তবে বাকি সমস্ত বাজার লকডাউনের দিনগুলিতে এবং লকডাউনের পর কিভাবে সরকারি নির্দেশিকা মেনে দোকান খোলা রাখা হবে সেই বিষয়ে রবিবার অল ত্রিপুরা মার্চেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের কার্যালয়ে এক বৈঠক হয়েছে৷
রাজ্যের সমস্ত জেলাগুলির বাজার কমিটি এবং কো-অর্ডিনেটের সাথে তাঁরা আলোচনা করেছেন৷ অল ত্রিপুরা মার্চেন্ট এসোসিয়েশনের সভাপতি তুষার চক্রবর্তীজানান, তিনদিন মানুষের বাড়ি বাড়ি নিত্য সামগ্রী হোম ডেলিভারি দেওয়া যায় সেই বিষয়ে আলোচনা হয়েছে৷ এ-বিষয়ে সদর মহকুমা শাসক অসীম সাহা জানিয়েছেন, আজ সকাল থেকেই বাড়ি বাড়ি সবজি পাঠানোর ব্যবস্থা হয়েছে৷ লকডাউনে প্রবীণ ব্যক্তি-রা বাজারে আসতে পারবেন না৷ তাছাড়াও, অনেকেই বাজারমুখী এই তিনদিন বাজারমুখী হতে চাইবেন না৷ তাই, সাইকেল, ঠেলায় করে সবজি নিয়ে অলি-গলিতে যাচ্ছেন হকার-রা৷ তাঁর দাবি, অতীতেও এমন ব্যবস্থা করা হয়েছিল৷ মানুষের সুবিধার্থে তিন দিন বাড়িতেই পৌছে দেওয়ার ব্যবস্থা হয়েছে৷

