পাথারকান্দি (অসম), ১৯ জুলাই (হি.স.) : আন্তর্জাতিক সীমান্ত ডিঙিয়ে ভারত ভূখণ্ডের জনবসতিপূর্ণ গ্রাম থেকে গরু চুরি করতে এসে গণপিটুনিতে মৃত্যু হয়েছে তিন বাংলাদেশির। ঘটনা আজ (রবিবার) ভোর প্রায় চারটে নাগাদ করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি থানার অন্তর্গত বুবরিঘাট চা বাগানে সংঘটিত হয়েছে।
প্রাপ্ত খবরে প্রকাশ, আন্তর্জাতিক সীমান্ত ঘেঁষা বুবরিঘাট চা বাগানে বিগত বেশ কয়েক মাস ধরে গৃহস্থদের গবাদি পশু চুরি হচ্ছিল। গতকাল রাতেও এক দল গবাদি পশুচোর বাগানের ১০ নম্বর লাইন তেলেঙ্গাবস্তিতে হানা দিয়েছিল। রাত তখন প্রায় দুটো। বাগান পঞ্চায়েতের সচিব রাজু তেলঙ্গা সহ দুই গৃহস্থ তাদের গোয়ালঘরে চোর পড়েছে টের পেয়ে মোবাইল ফোনে প্রতিবেশীদের ঘটনাটি জানান। এক এক করে মানুষ জমায়েত হয়ে চোরের দলকে ঘিরে ধরেন। কিন্তু সুযোগের সদ্ব্যবহার করে সাতজনের চোরের দলটি লাগোয়া জঙ্গল, ছড়া ও ঝোপে আত্মগোপন করে থাকে। বাগানের মানুষও নাছোড়বান্দা। তাঁরা লাঠিসোঁটা নিয়ে চোরের দলকে খুঁজতে থাকেন।
রাত গড়িয়ে ভোরের আলো ফুটতে থাকে। ইত্যবসরে তিন চোর হাতে হাতে ধান কাটার কাঁচি নিয়ে ঝোপ থেকে তেলেঙ্গাবস্তির মানুষের ওপর হামলা করে বসে। দুই নাগরিক জখমও হন। রক্ত দেখে শুরু হয় গণ-পেটাই। লাঠিসোঁটার ঘায়ে তিন গরু চোর ধরাশায়ী হয়ে যায়। এদিকে বেগতিক দেখে চার বাংলাদেশি কাঁটাতার ডিঙিয়ে তাদের দেশে পালিয়ে গেছে বলে খবর।
ঘটনার খবর দাবানলের মতো চাউর হয়ে যায়। খবর পেয়ে কালবিলম্ব না করে ঘটনাস্থলে ছুটে যায় পাথারকান্দি থানা থেকে পুলিশের দল। করিমগঞ্জ জেলা সদর থেকে আসেন পুলিশের পদস্থ আধিকারিকরা। পুলিশের প্রাথমিক তদন্তে চোরদের নাম জানা যায়নি। তবে তারা বাংলাদেশের মৌলভিবাজার জেলার জুরি উপজেলার অন্তর্গত জমকান্দি গ্রামের বাসিন্দা বলে আপাতত পরিচয় বের করেছে পুলিশ। মৃত তিন চোরের কাছ থেকে উদ্ধার হয়েছে তার কাটার সরঞ্জাম সহ কিছু সামগ্ৰী। প্রসঙ্গত, বুবরিঘাটে গত ৭ জুনও সংঘটিত হয়েছিল এ ধরনের এক গণপিটুনির ঘটনা।
এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, গত ৩১ মে রাতে এই পাথারকান্দির পুতনি চা বাগানে অনুরূপ ঘটনা সংঘটিত হয়েছিল। গণপেটাইয়ে মৃত্যু হয়েছিল এক বাংলাদেশি গরুচোরের। পরে অনেক জল ঘোলা করার পর ৫ মে বাংলাদেশ কর্তৃপক্ষ নিহত গরুচোরের লাশ সমঝে নিয়েছিল।