নিলামবাজার (অসম), ১৭ জুলাই (হি.স.) : ভ্রমণ বৃত্তান্ত ছাড়াই একের পর এক ক্ষৌরকর্মীর করোনা আক্রান্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে সমগ্র করিমগঞ্জ জেলার জনমনে সামাজিক সংক্রমণের আতঙ্ক বিরাজ করছে। করোনা আক্রান্ত ক্ষৌরকর্মীদের সংস্পর্শে কতজন এসেছেন, এর কোনও সঠিক তথ্যও নেই প্রশাসনের কাছে। নিলামবাজারে চার ক্ষৌরকর্মীর শরীরে করোনার লক্ষণ ধরা পড়েছে। এ নিয়ে বৃহত্তর নিলামবাজার এলাকার জনমনে তীব্র চাঞ্চল্য বিরাজ করছে। অনেকেই এই চার করোনা আক্রান্ত ক্ষৌরকর্মীর সংস্পর্শে এসেছেন।
চলতি মাসের ৯ তারিখ নিলামবাজারের ৪৯ জন ক্ষৌরকর্মীর করোনা টেস্টের জন্য সোয়াব সংগ্রহ করেছিল কোভিড-১৯ মেডিক্যাল টিম। সে দিন থেকেই ওই সব ক্ষৌরকর্মীকে ১৪ দিনের হোম কোয়ারেন্টাইনে থাকার নির্দেশ দিয়েছিল স্বাস্থ্য দফফরের দল। কিন্তু তাঁরা কোভিড প্রোটোকল ভেঙে এবং প্রশাসনিক নির্দেশ লঙ্ঘন করে বাজারহাটে অবাধে চলাফেরা করেছেন। সোয়াব সংগ্রহের দিন থেকে ১৪ দিন অর্থাৎ ২২ জুলাই অবধি সেলুন বন্ধ রাখারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছিল প্রশাসনের পক্ষ থেকে। কিন্তু একাংশ ক্ষৌরকর্মী প্রশাসনিক নির্দেশিকাকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে সেলুন খোলা রেখে তাঁদের কাজ চালিয়ে যাচ্ছিলেন। আজ সকালেও নিলামবাজারের বেশ কয়েকটি সেলুন যথারীতি খোলা ছিল। অথচ নিলামবাজার থানা এবং সার্কল কার্যালয় থেকে ঢিলছোঁড়া দূরত্বে রয়েছে এই সকল সেলুন। প্রশাসনের সামনেই সেলুনের কাজ চলতে থাকলেও প্রশাসনিক কর্তারা ভাতঘুমে আচ্ছন্ন।
স্থানীয় সচেতন নাগরিকরা অভিযোগ করে বলেন, এক শ্রেণির দায়িত্বজ্ঞানহীন মানুষ এবং প্রশাসনিক উদাসীনতার কারণে করোনা ক্রমশ গোষ্ঠী সংক্রমণের দিকে এগোচ্ছে। শারীরিক দূরত্ব বজায় রেখে চলা, বাইরে বের হলেই মাস্ক লাগানো বাধ্যতামূলক, জমায়েত না হওয়া, গাড়িতে কম সংখ্যক যাত্রী নিয়ে চলাচল করার মতো সরকারি বিধি নিষেধ জারি থাকলেও, এ সবের কোন বালাই নেই করিমগঞ্জ শহর সহ জেলার গ্রামাঞ্চলে। প্রশাসনকে দস্তুরমতো চ্যালেঞ্জ জানিয়ে সর্বত্রই চলছে নিয়ম ভঙ্গের এক অঘোষিত প্রতিযোগিতা। আর প্রশাসন যন্ত্রও ঠুঁটো জগন্নাথ হয়ে বসে রয়েছে বলে গণ-অভিযোগ উঠছে। করোনা সংক্রমণ প্রতিরোধে প্রশাসনকে শক্ত হাতে লাগাম ধরতে আহ্বান জানিয়েছেন জেলার সচেতন নাগরিককুল।
এদিকে নিলামবাজারের করোনা আক্রান্ত ক্ষৌরকর্মীদের সংস্পর্শে আসার সন্দেহে গতকাল এবং আজ, এই দুদিনে করোনা টেস্টের জন্য মোট ৩৬ জন স্বেচ্ছায় সোয়াব দিয়ে এসেছেন। এঁদের রিপোর্ট আসার পরই বোঝা যাবে গোষ্ঠা সংক্রমণের আশঙ্কা আছে কি না।