নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ জুলাই৷৷ ধর্মীয় ভাবাবেগ ত্রিপুরায় ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে৷ কারণ, বেড়া নির্মাণের ফলে মসজিদ কাঁটাতারের ওপাড়ে চলে যাচ্ছে৷ তবে ওই মসজিদ জিরো পয়েন্ট থেকে ১৫০ গজের মধ্যে ভারতীয় ভূখণ্ডেই থাকছে৷ তবুও, স্থানীয় তিনটি পরিবারের আপত্তিতে বেড়া নির্মাণের কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে৷ সিপাহিজলা জেলার কলসিমুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নগর এলাকায় ওই উদ্ভূত সমস্যার সমাধান হয়ে যাবে বলে নিশ্চিত করেছেন জেলাশাসক সিকে জমাতিয়া৷
সীমান্ত অপরাধ দমনে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ অত্যন্ত জরুরি৷ কারণ, ত্রিপুরায় এখনও উন্মুক্ত সীমান্ত রয়েছে৷ সে-মোতাবেক উন্মুক্ত সীমান্তে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে৷ এ-বিষয়ে সিপাহিজলার জেলাশাসক সি কে জমাতিয়া জানিয়েছেন, সোনামুড়া মহকুমায় পাঁচটি স্থানে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ বাকি রয়েছে৷ দেড় কিমি উন্মুক্ত সীমান্তে ইতিমধ্যে ডাবল লাইন (কম্পোজিট রুফ ফেন্সিং) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু হয়েছে৷ সাথে তিনি যোগ করেন, সাড়ে ছয় কিমি উন্মুক্ত সীমান্তে সিঙ্গল লাইন (সিঙ্গল রুফ ফেন্সিং) কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ শুরু হবে৷ আগামী ১০ জুলাই নাগাদ উন্মুক্ত সীমান্তে সিঙ্গল লাইন কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ শুরু করার জন্য নির্মাণ সংস্থাকে জমি হস্তান্তর করা হয়েছে৷ কিন্তু স্থানীয়দের আপত্তিতে এই কাজ বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে৷
তাঁর কথায়, কলসিমুড়া গ্রাম পঞ্চায়েতের নগর এলাকায় ৯টি পরিবার নির্মাণ কাজে বাধা দিচ্ছে৷ তাদের মধ্যে ৬ পরিবারকে জমি অধিগ্রহণ বাবদ ক্ষতিপূরণের টাকা মিটিয়ে দেওয়া হয়েছে৷ কিন্তু মসজিদ লাগোয়া তিন পরিবার ওই জায়গা ছেড়ে যেতে চাইছে না এবং মসজিদ কাঁটাতারের ভেতরে রেখে নির্মাণ করার দাবিতে অনড় হয়ে বসে রয়েছে৷ তিনি বলেন, পূর্বের ছক অনুযায়ী ওই স্থানে ২৬৫ মিটার জমিতে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণে সমস্যা দেখা দিয়েছে৷ অবশ্য, তার মধ্যে ১৪০ মিটার কাজ হয়ে গেছে৷ বাকি, জমিতে কাজে বাধা দেওয়া হচ্ছে৷
জেলাশাসকের বক্তব্য, গতকাল নির্মাণ সংস্থা মাটি ফেলতে গিয়ে বাধাপ্রাপ্ত হয়েছে বলে অভিযোগ করেছে৷ তাই আজ পুলিশ পাঠিয়ে ওই তিন পরিবারকে বোঝানো হয়েছে৷ পরে তারা মাটি ফেলতে দিয়েছে৷ কিন্তু ওই সমস্যার স্থায়ী সমাধান জরুরি৷ তাঁর বক্তব্য, ওই তিন পরিবারের দাবি মেনে কাজ করার ক্ষেত্রে প্রচুর সময়ের প্রয়োজন৷ কারণ তাতে নতুন করে প্রস্তাব ত্রিপুরা সরকারের মাধ্যমে যাবে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে৷ কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক থেকে বিদেশমন্ত্রক এবং সেখান থেকে বাংলাদেশ সরকারের অনুমতির জন্য পাঠাতে হবে৷ ওই প্রক্রিয়ায় প্রচুর সময়ের প্রয়োজন৷
তিনি বলেন, আগামী সোমবার ওই পরিবারের সাথে এ-বিষয়ে আলোচনা করব৷ পূর্বের ছক মেনে কাজ হোক তাঁদের এ-বিষয়ে বোঝানো হবে৷ তাতে তাঁরা বুঝবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন৷ তাঁর কথায়, ধর্মীয় ভাবাবেগে আঘাত না করে কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণের কাজ সম্পাদন করতে হবে৷
2020-07-03