BRAKING NEWS

ভারত ও ভুটানের মধ্যে কোনও বিরোধ নেই, স্থানীয় সমস্যা ব্যবহার করে ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করছে চিনের থাপ্পলদার

গুয়াহাটি, ২৭ জুন (হি.স.) : ভারত ও চিনের মধ্যে বিতর্ককে হাতিয়ার করে বামপন্থী এবং তাদের মনোভাবাপন্ন সংবাদ মাধ্যম ভারতের ভাবমূর্তি নষ্ট করার জন্য জঘন্য ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয়েছে। চিন ও পাকিস্তানের সাথে বিরোধের জেরে নেপাল ও বাংলাদেশের ছবি ভারত বিরোধী হিসেবে তুলে ধরার পাশাপাশি এখন ভুটানকেও একই জালে জড়িয়ে ফেলার জোরদার চেষ্টা চলছে। যে ঘটনাকে কেন্দ্র করে রাজ্যের মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণকে স্পষ্টীকরণ দিতে হয়েছে। তিনি বলেছেন, ভারত, বিশেষ করে ভুটান অসমে জল বন্ধ করে দিয়েছে বলে যে খবর সম্প্রচারিত হচ্ছে, তার কোনও সত্যতা নেই। এ ধরনের খবর সর্বৈব মিথ্যা।

নিম্ন অসমের বাকসা জেলার ভারত-ভুটান সীমান্ত এলাকায় বৃহস্পতিবার একটি সাধারণ সমস্যাকে নিয়ে ভুটানগামী রাস্তা অবরোধ করে ভারতের স্থানীয় কৃষকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন। ওই বিষয়টিকে ভারত এবং ভুটানের মধ্যে মারাত্মক জল-বিরোধ হিসেবে ব্যাখ্যা করে জাতীয় সংবাদ মাধ্যমে প্রচারিত হয়েছে।

এরই পরিপ্রেক্ষিতে রাজ্যের মুখ্যসচিব কুমার সঞ্জয় কৃষ্ণ প্ৰকাশিত খবরের সত্যতা নেই বলে তা খণ্ডন করছেন। এর প্রকৃত কারণ বর্ণনা করে মুখ্যসচিব বলেন, অসমের ভারত ভুখণ্ডে যে পথে জল ভুটান থেকে নেমে আসে সেই নালাগুলোয় প্ৰাকৃতিক অবরোধ ঘটেছিল। ওই সব অবরোধ সারাই করতে মূলত ভুটানই সহায়তা করে আসে। এ ধরনের নতুন নয়। প্রায়ই হয়। প্রায়ই অবস্ট্রাকশনগুলি দূর করে ভুটান। যে সব নালায় সাম্প্রতিক অবস্ট্রাকশনের সৃষ্টি হয়েছিল, সেগুলি সাফাই করার স্টিল ফটেগ্রাফিও ভুটানের সরকারি কৰ্তৃপক্ষ শেয়ার করেছেন।

প্রসঙ্গত, ভারত-ভুটান সীমান্তে অসমের বাকসা জেলার ২৫টি গ্রামের কৃষকরা অভিযোগ করেছিলেন, ভুটান সরকার জলসেচের জন্য নেমে আসা নালাগুলি বন্ধ করে দিয়েছে। এ-বিষয়ে বাকসার সীমান্তবর্তী গ্রামে বসবাসকারী সমাজসেবক জনৈক মেঘনাথ মুশাহারি, স্থানীয় নাগরিক রাজু দৈমারি হিন্দুস্থান সমাচার-কে বলেন, ভুটানের চান্দ্রুপ জাঁখার জেলার অন্তর্গত ভোগজুলিতে জমিতে সেচের জন্য জল না পেয়ে ভারতীয় নাগরিকরা বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছিলেন। তবে, ভুটানের চান্দ্রুপ জাঁখার জেলা প্রশাসন এবং ভারতের পক্ষে এসএসবি কর্মকর্তারা বিষয়টি নিয়ে আলোচনা করেছেন এবং তাৎক্ষণিকভাবে সমস্যার সমাধানও হয়ে গেছে।

এখানে উল্লেখ করা যেতে পারে, বাকসা জেলা সংলগ্ন অনেক গ্রামের কৃষকরা তাদের জমিতে সেচের জন্য ভুটান থেকে উৎপত্তি ছোট ছোট নদীর জল অস্থায়ীভাবে অবরুদ্ধ করে বন্ধ করে দেয়। জলের স্রোত ঘুরিয়ে কৃষকরা তাদের জমিতে নিয়ে যান। এই পদ্ধতি দীর্ঘকাল ধরে চলে আসছে। এর জন্য কৃষকদের ভুটানে গিয়ে নদীর স্রোত বন্ধ করতে হয়। কিন্তু, করোনা মহামারির কারণে ভুটান সরকার সে দেশে প্রবেশে পুরোপুরি নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে। যদি কেউ ভুটানে প্রবেশ করেন তবে তাঁকে ২১ দিনের জন্য একান্তবাসে থাকতে হবে। ফলে ভারতের কৃষকরা ভুটানে গিয়ে নদীর জলের স্রোত বন্ধ করতে পারছেন না।

ভারতীয় কৃষকদের বিক্ষোভের পর এসএসবি এবং ভুটান প্রশাসনের মধ্যে পারস্পরিক সহমতের ভিত্তিতে ভুটান প্রশাসন জেসিবি-র মাধ্যমে নদীতে জলের স্রোত আটকে ভারতীয় কৃষকদের জমিতে জলের গতিপথ বদলের আশ্বাস দিয়ে কাজও শুরু হয়েছে। এর পরই ওই বিরোধের অবসান হয়ে যায়।

অথচ, চিনের থাপ্পলদাররা ভারতে বসে ইচ্ছাকৃতভাবে ওই বিষয়টিকে ভারত-ভুটানের মধ্যে বিরোধ হিসেবে তুলে ধরে দেশের ছবি বদলে দেওয়ার অপচেষ্টা করেছে। সত্যের সাথে এর কোনও মিল নেই। উল্লেখ্য, ভুটান সরকার সম্প্রতি ওই দেশে সফরকারীদের জন্য কিছু ফি নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। এই সিদ্ধান্তকেও ভারতের বিরুদ্ধে উপস্থাপনের চেষ্টা করা হচ্ছে।

ভুটান সরকারের এই সিদ্ধান্তের ফলে প্রতিবেশী দেশ সংলগ্ন ভারতীয় নাগরিকদের কোনও প্রভাব নেই। প্রাপ্ত তথ্য অনুসারে, স্থানীয় ভারতীয় নাগরিকরা সকাল ৮ টা থেকে রাত ৯ টা পর্যন্ত চান্দ্রুপ জাঁখার জেলায় প্রবেশ করতে পারবেন। এছাড়াও, যদি ভারতীয়দের আইডি কার্ড থাকে তবে তাঁরা রাতেও ওই অঞ্চলগুলিতে থাকতে পারবেন। অবশ্য, করোনা-র সময়কালে ভুটানে প্রবেশ নিষিদ্ধ করা হয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *