নয়াদিল্ল, ২০ জুন (হি. স.):বড়সড় সাফল্য ভারতের। ভারত-চিন উত্তেজনার মধ্যেই পূর্ব লাদাখ অঞ্চলের গালওয়ানে শ্যোক নদীর ওপরে ৬০ মিটার লম্বা একটি ব্রেইলি ব্রিজ তৈরি করে ফেললেন সেনার ইঞ্জিনিয়াররা। ব্রিজটি শেষ করা হয় বৃহস্পতিবার। যেটা ভারতকে সাহায্য করবে এই সেক্টরে নিজেদের অবস্থান শক্ত করতে। এরফলে ওই এলাকায় সহজেই ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইনফ্যান্টি ডিভিশন গালওয়ান নদী পেরিয়ে ঢুকে পড়তে পারবে।
গত সোমবার গালওয়ান উপত্যকার ঘটনায় ২০ জন ভারতীয় সেনা নিহত হওয়ার পরে মঙ্গলবার (১৬ জুন) সকালে চিনের সঙ্গে উত্তেজনা অব্যাহত থাকায় সেনাবাহিনী সেনার ইঞ্জিনিয়ার বিভাগকে শ্যোক নদীর উপরে ৬০ মিটার দীর্ঘ ‘বেইলি ব্রিজটি নির্মাণের কাজ দ্রুত করার নির্দেশ দেয়। এরপরই ফলে অত্যন্ত কঠিন পরিস্থিতিতেই ৬০ মিটার লম্বা এই ব্রিজটি বানিয়ে ফেলেছেন ভারতীয় সেনার ইঞ্জিনিয়াররা। তাঁদের সাহায্য করেছে বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন (বিআরও)। চার লেনের এই ব্রিজটি গালওয়ান ও শ্যোক নদীর সংযোগস্থল থেকে তিন কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। আর চিন-ভারত সেনাবাহিনীর সংঘর্ষস্থলের থেকে মাত্র ২ কিমি দুরে।
এর ফলে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার খুব কাছে ভারতীয় সেনার ফরোয়ার্ড পোস্টগুলিতে ভারী যুদ্ধাস্ত্র, সামরিক সরঞ্জাম, রসদ, সেনা, যানবাহন সবই মসৃণভাবে যাতায়াত করতে পারবে বলে জানিয়েছে সেনা আধিকারিকরা। বৃহস্পতিবার ব্রিজটির নির্মাণ শেষ হয়েছে। এক সেনাকর্তার দাবি, ভারতীয় সেনার ফর্মেশন ইঞ্জিনিয়াররা এবং বর্ডার রোডস অর্গানাইজেশন নিজের কাজ চালিয়ে যাবে। চিনের সেনার কোনও অভিসন্ধিই সার্থক হবে না। এই ব্রিজটি বহুদিন ধরেই তৈরি করার চেষ্টা করছিল ভারত। আর তাতেই চাপে পড়ে যায় চিন। যার ফলশ্রুতিতেই গত ১৫ জুনের হামলা। তবে দুদেশের মধ্যে এত উত্তেজনা সত্ত্বেও মাত্র ৭২ ঘণ্টার মধ্যে সেনার ইঞ্জিনিয়ারদের নিরাপত্তা দিয়ে যুদ্ধকালীন তত্পরতায় ব্রিজটি শেষ করা হয়।শুধু ব্রিজ নির্মাণ নয়, ২৪ ঘণ্টা তার উপর দিয়ে যানবাহনও চালিয়ে তার পরীক্ষা করা হয় বলে জানিয়েছে সেনা ।
সেনা সূত্রে জানা যাচ্ছে, দারবুক থেকে দৌলত বাগ ওল্ডি ‘এয়ারস্ট্রিপ’ পর্যন্ত দীর্ঘ ২৫৫ কিমি রাস্তাকে সংযুক্ত করল এই বেইলি ব্রিজটি। ভারতীয় ইঞ্জিনিয়ারিংয়ের এক অনন্য নজীর হয়ে দাঁড়াল এই ব্রিজটি। এখানে কোনও সমতল জমি যেমন নেই, তেমনই খুবই সংকীর্ণ গিরিখাত। গরমের সময়ও এই এলাকার তাপমাত্রী হিমাঙ্কের নীচে থাকে। এটি এক ধরণের বহনযোগ্য সেতু যা সেনাবাহিনী এমন জায়গাগুলিতে প্রয়োজনীয়তার জন্য তৈরি করে, যেখানে চলাচলের কোনও সঠিক পথ নেই। মিশন শেষ হওয়ার পরে সেনাবাহিনী এই অস্থায়ী সেতুটি ফেলে দেয়।