বিলোনীয়ায় রক্তদান শিবিরে হামলা সিপিএমের অপপ্রচার বলে দাবি বিজেপির

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ জুন৷৷ বিলোনীয়ায় রক্তদান শিবিরে হামলা করার ঘটনা সিপিএমের অপপ্রচার বলে দাবি করেছে বিজেপি৷ দলের পক্ষ থেকে সোমবার এক বিবৃতিতে পাল্টা অভিযোগ করা হয়েছে, অন্য কোন এক মারপিটের ঘটনাকে রক্তদান শিবিরে হামলা বলে মিথ্য প্রচার করা হয়েছে৷ বিজেপি বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করেছে রক্তদান শিবির করার জন্য রাজ্য সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রী সকলের প্রতি আহ্বান রাখছেন৷


বিজেপি বিবৃতিতে আরও উল্লেখ করেছে, বিশ্বব্যাপী করোনা অতিমারির যে পরিস্থিতি, এ থেকে আমাদের দেশ ও মুক্ত নয়৷ করোনাআক্রান্ত মানুষের সংখ্যা ক্রমশ বাড়ছে৷ আমাদের রাজ্যে বর্তমানে করোনা আক্রান্ত মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি পাচ্ছে৷ বিশেষতঃ পরিযায়ী শ্রমিকরা রাজ্যে ফিরে আসার পর এই প্রবণতা খানিকটা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ এই জায়গায় দাঁড়িয়ে রাজ্য সরকার মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে এই পরিস্থিতি মোকাবিলায় সর্বাত্বক উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে৷ এই উদ্যোগে রাজ্যের চিকিৎসক, নার্স, স্বাস্থ্য কর্মীসহ, সাফাইকর্মী থেকে শুরু করে জরুরী পরিষেবার সাথে যুক্ত সকল সামনের সারির যোদ্ধারা সার্বিক সহযোগিতা করে আসছেন৷ এ হেন পরিস্থিতিতে যখন সম্মিলিতভাবে এই পরিস্থিতিকে মোকাবিলা করে রাজ্যকে এগিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন তখন কোন কোন অংশ থেকে উদ্দেশ্য প্রণোদিতভাবে নানা অপপ্রচার করে পরিস্থিতিকে ঘোলাটে ও বিভ্রান্ত করার প্রয়াস নিয়েছে৷

তাই আমরা লক্ষ্য করছি কখনো ত্রাণ সামগ্রী বিলি করতে পারছে না, বাধার সম্মুখীন হচ্ছে বলে চিৎকার করছে, কখনো রক্তদান কর্মসূচী আক্রান্ত বলে চিৎকার করছে৷ অথচ, এই রাজ্যে সরকার যেমন ব্যাপক মাত্রায় ত্রাণ সামগ্রী বন্টন করেছে, তেমনি বিজেপিসহ অন্যান্য রাজনৈতিক দল স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন ব্যাক্তি বিশেষ ত্রাণ বন্টনে এই সময়ে এক নয়া নজির সৃষ্টি করেছে৷ রাজ্যের বিরোধী দল বিশেষত সিপিআইএম এর বক্তব্য হচ্ছে, উনারা ৬০ হাজারেরও বেশি পরিবারের কাছে ত্রাণ সামগ্রি পৌছে দিয়েছে বলে৷ তাই যদি ঘটনা হয়৷ তাহলে ত্রাণ বন্টনে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে যে চিৎকার দেওয়া হচ্ছিল, তার যথার্থতা কোথায়? আমরা এও লক্ষ্য করছি, যে রাজ্যে লকডাউন পরিস্থিতির পর সর্বত্র নিয়ম শৃঙ্খলা মেনেই রাজ্যের মানুষ কাজে বেরিয়েছে, তখন হাসপাতালগুলিতে রক্তের স্বল্পতার কথা বলে সিপিআই(এম) দল ও তার শাখা সংগঠনগুলিও রক্তদান কর্মসূচী গ্রহন করে আসছে৷ আমরা বিজেপি দল বরাবরই রক্তদানের মত কর্মসূচীকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করি৷ এক্ষেত্রে সকলকে উৎসাহিত করি, কারণ আমরা মনে করি রক্তদানের মত মহৎ দানের কর্মসুচী এটা নিছক কোন দলের নয়৷


এটা সার্বজনীন, এর কোন বিকল্প নেই৷ তাই বিজেপির কার্যকর্তারা অত্যন্ত গুরুত্বসহকারে স্বেচ্ছা রক্তদান কর্মসূচী প্রতিপালন করে আসছে এবং সকলকে এই কাজে উৎসাহিত করে আসছে৷ এই রক্তদান কর্মসূচী বাধাপ্রাপ্ত হচ্ছে, আক্রান্ত হচ্ছে বলে কল্পিত প্রচার সংগঠিত করা হচ্ছে৷ যার আদৌ কোন বাস্তব ভিত্তি নেই৷ গতকাল বিলোনিয়া মহকুমা ঋষ্যমুখ বিধানসভা কেন্দ্রে দক্ষিণ সোনাইছড়ি গ্রামে রক্তদান কর্মসূচী আক্রান্ত হয়েছে বলে আজ প্রভাতী দৈনিকগুলিতে সিপিআই(এম)এর অভিযোগ৷ অথচ প্রকৃত ঘটনা হচ্ছে গতকাল এমন কোন ঘটনাই সোনাইছড়ি গ্রামে সংঘটিত হয়নি৷ তাদের রক্তদান কর্মসূচী বলে কিছু ছিল বলে গ্রামের মানুষ, প্রধান কেউ জানেনা৷ আমাদের মন্ডল সভাপতি ঘটনার খোজখবর নিয়ে আমাদের তা অবহিত করেন এবং আরো বলেন যে সোনাইছড়ি গ্রামে কোন এক বাড়িতে সিপিআই(এম) দলের আশ্রিত কিছু দুর্বত্ত জড়ো হচ্ছিল৷ গ্রামের মানুষ তা দেখে তাদেরকে জড়ো হওয়ার কারণ জানতে চান যে, এখানে জড়ো হওয়ার কারণ কি? তখন ওরা বলে, এখানে রক্তদান করা হবে৷ তখন গ্রামের মানুষ বলে এই গ্রামেই নাট মন্দিরে যুব মোর্চার রক্তদান কর্মসূচী হচ্ছে৷ আপনারা সেখানে এসে রক্ত দিতে পারেন৷ তারা এতে সারা না দিয়ে হই হট্টগােল শুরু করে৷ গ্রামের মানুষ তাদেরকে বারংবার বলে এখানে হট্টগোল না করে চলে যাওয়ার জন্য৷ এরা কর্ণপাত না করে হট্টগোল চালাতেই থাকে প্রধানসহ গ্রামের মানুষ যুব মোর্চার নির্ধারিত রক্তদান কর্মসূচীতে চলে আসে৷

এরপর জানা যায়, সোনাইছড়ির একটি দূরবর্তী অঞ্চলে কোন এক ঘটনায় কিছু মানুষ আহত হয়৷ পুলিশ ঘটনাস্থলে ছুটে যায়, সোনাইছড়ির ঐ বাড়িতে জড়ো হওয়া দুর্বত্তদের সরিয়ে দেয় এবং আহতদের হাসপাতালে পাঠানোর বন্দোবস্ত করে৷ একে কেন্দ্র করে সিপিআই(এম) দল তার পলিটব্যুরোর সদস্য, রাজ্য সম্পাদক, বিরোধী দলের উপনেতা, শাখা সংগঠনসমূহের কর্মকর্তারা সকলে বলতে শুরু করে তাদের রক্তদান শিবির আক্রান্ত হয়েছে বলে৷ এসবই রাজ্যের মানুষকে বিভ্রান্ত করে তাদের দলের প্রতি সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা৷ কারণ রাজনৈতিক বক্তব্য বা কর্মসূচী দিয়ে রাজ্যের মানুষকে জড়ো করতে পারছে না৷ ক্রমশ দুর্বল হয়ে যাচ্ছে বলে কখনো ত্রান সামগ্রি বন্টনে বাধা, কখনো রক্ত দান কর্মসূচীতে বাধা দেওয়া হচ্ছে বলে সম্পূর্ণ গোয়েবলসিও কায়দায় অপপ্রচার সংগঠিত করে মানুষের সহানুভূতি আদায়ের অপচেষ্টা৷


আমরা বিজেপির তরফ থেকে আবারও রাজ্যের সবকটি রাজনৈতিক দল, সংগঠন, স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা সকলের নিকট আবেদন করছি, রক্ত দানের মত মহৎ দানের কর্মসূচী পরিকল্পনা মাফিক ব্যাপকভাবে সংগঠিত করার জন্য৷ সাথে সাথে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিজেপি দলের রাজ্য সভাপতিসহ নেত্রীবৃন্দের যে আহ্বান ত্রাণ বন্টন, রক্তদান কর্মসূচীর মত কর্মসূচীগুলি দলমতের উর্ধে উঠে নির্দ্বিধায় যাতে করা যায় এতে যাতে কোন বাধা বিপত্তি সৃষ্টি না হয় তা দেখার জন্য বিজেপির সকল স্তরের কার্যকর্তাদের নজর রাখার জন্য৷