নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১০ জুন৷৷ রাজ্যে গ্রামীণ এলাকায় কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে গুরুত্ব দিতে হবে৷ এজন্য গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের কাজের গতি বাড়ানোর নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ আজ গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের এক পর্যালোচনা সভা সচিবালয়ে অনুষ্ঠিত হয়৷ মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেবের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এই বৈঠকে উপ-মুখ্যমন্ত্রী যীষ্ণু দেববর্মা, মুখ্যসচিব মনোজ কুমার, গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের অতিরিক্ত সচিব বিকাশ সিং, বিশেষ সচিব প্রশান্ত কুমার গোয়েল, পরিকল্পনা ও সমন্বয় দপ্তরের সচিব অপূর্ব রায়, পঞ্চায়েত দপ্তরের অধিকর্তা আর কে নোয়াতিয়া ও গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিভিন্ন পদস্থ আধিকারিকগণ ও প্রকৌশলীগণ সভায় উপস্থিত ছিলেন৷ বৈঠকে পঞ্চায়েতের কাজের বিষয়সমূহ নিয়েও আলোচনা হয়৷ গ্রামীণ কর্মসংস্থান বৃদ্ধিতে মৎস্য চাষ, ফুল চাষ, মৌমাছি পালন ইত্যাদি ক্ষেত্রকে প্রাধান্য দিতে মুখ্যমন্ত্রী গুরুত্ব আরোপ করেন৷ স্ব-সহায়ক দলগুলিকে ক্লাস্টার অনুসারে যুক্ত করার বিষয়ে তিনি অভিমত ব্যক্ত করেন৷
এর ফলে স্ব-সহায়ক দলগুলির পারস্পরিক অভিজ্ঞতা বিনিময়ের মাধ্যমে নিজেদের আরও সম’দ্ধ করার সুুযোগ তৈরি হবে বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ গ্রামীণ রাস্তা তৈরির সময় রাস্তার পাশে ড্রেইন নির্মাণ ও পরবর্তীতে প্রাক বর্ষা মরশুমের আগেই এগুলিকে মেরামতি করার উপর তিনি গুরুত্ব আরোপ করেন৷ সভায় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব সৌম্যা গুপ্তা সচিত্র প্রতিবেদনের মাধ্যমে গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের বিভিন্ন প্রকল্পগুলির বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে মুখ্যমন্ত্রীকে অবহিত করেন৷ এম জি এন রেগা, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ), দীনদয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা, জাতীয় গ্রামীণ জীবিকা মিশন, দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল বিকাশ যোজনা, শ্যামাপ্রসাদ মুখার্জী ন্যাশানাল রুরবান মিশন ও সাংসদ আদর্শ গ্রাম যোজনার কাজের অগ্রগতি নিয়ে সভায় আলোচনা হয়৷
আলোচনায় প্রদত্ত তথ্যে জানা যায়, রেগায় ৬ জন ২০২০ পর্যন্ত রাজ্যে মোট ৪৬ লক্ষ ৪৩ হাজার শ্রমদিবস সৃষ্টি করা হয়েছে৷ জেলাভিত্তিক লক্ষ্যমাত্রা ও কাজের অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা করা হয়৷ অ্যাসপিরেশানাল ব্লকগুলির ক্ষেত্রে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়ার বিষয়টি বৈঠকে আলোচিত হয়৷ গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব জানান, চলতি বছরে দপ্তরের যে চার কোটি শ্রমদিবস স’ষ্টির লক্ষ্যমাত্রা রয়েছে, তা ২০২১ এর জানুয়ারী মাসের মধ্যে সম্পর্ণ করার লক্ষে নিয়ে দপ্তর কাজ করছে৷ পরবর্তীতে লেবার বাজেট আরও বাড়ানোর জন্য দপ্তর উদ্যোগ নেবে৷ দপ্তরের সচিব উল্লেখ করেন, চলতি বছরে ৩,৬০০ পরিবারকে নতুন জবকার্ড দেওয়া হয়েছে৷ গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব আরও জানান, রেগায় শ্রমদিবস স’ষ্টির পাশাপাশি স্থায়ী সম্পদ তৈরির উপর গুরুত্ব দিচ্ছে দপ্তর৷ কোন কোন ক্ষেত্রে রেগায় স্থায়ী সম্পদ স’ষ্টিতে ব্যক্তিগত সুুবিধাভোগীদেরকেও উৎসাহিত করতে দপ্তর প্রাধান্য দিচ্ছে৷ আগে যারা এই প্রকল্পে সুুবিধা পাননি তাদেরকেও অগ্রাধিকার দেওয়া হচ্ছে৷ মূলতঃ ফার্ম পণ্ড চেকড্যাম, অ্যানিমেল শেলটার ইত্যাদি ক্ষেত্রে দপ্তরের বিশেষ প্রাধান্য রয়েছে৷
রেগায় পশ্চিম ত্রিপুরা জেলায় ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশন, প্রাণীসম্পদ বিকাশ, ক’ষি ও মৎস্য দপ্তরকে যুক্ত করে ৩৭৫ পরিবারকে স্ব-নির্ভর করার লক্ষ্যে একটি বিশেষ প্রকল্প রূপায়ণ করা হচ্ছে বলে দপ্তরের সচিব বৈঠকে জানিয়েছেন৷ এই প্রকল্পে ৫ কোটি ১৭ লক্ষ টাকা ব্যয় ধরা হয়েছে এবং প্রকল্পের সুুবিধাভোগীদের হাঁস, পোল্টি, শূকর, ছাগল পালনের জন্য শেড নির্মাণ করে দেওয়া হবে৷ রেগা প্রকল্পে গোমতী জেলায় কিল্লা ব্লকের রাইয়াবাড়ি ভিলেজে ১৫০ পরিবারকে স্ব-নির্ভর করার জন্য একটি বিশেষ প্রকল্প নেওয়া হয়েছে৷ বনায়ন, মৎস্যচাষ ও হাঁস পালনের সুুযোগ দেওয়া হবে এবং এর জন্য ১ কোটি ৭১ লক্ষ টাকা ব্যয় হবে বলে সচিব সভায় উল্লেখ করেন৷ প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনা (গ্রামীণ) সর্ম্পকে সভায় পর্যালোচনা করা হয়৷ এই যোজনার দ্বিতীয় পর্যায়ে যে সকল ঘরের নির্মাণ কাজ বিভিন্ন অসুুবিধার কারণে শেষ করা যায়নি সেগুলি দ্রত শেষ করার জন্য গ্রামোন্নয়ন দপ্তরকে নির্দেশ দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷
সভায় গ্রামোন্নয়ন দপ্তরের সচিব সৌম্যা গুপ্তা জানান, দীন দয়াল অন্ত্যোদয় যোজনা, জাতীয় গ্রামীণ জীবীকা মিশনের অধীনে ত্রিপুরা গ্রামীণ জীবিকা মিশনে ধলাই, গোমতী ও দক্ষিণ জেলায় ১১৯৮৩টি মহিলা পরিচালিত স্ব-সহায়ক দল রয়েছে৷ মোট সদস্য সংখ্যা ১ লক্ষ ৫৮ হাজার ৭১২ জন৷ ৮৮৬৯টি স্ব-সহায়ক দল ব্যাঙ্ক থেকে ঋণ পেয়েছেন৷ স্ব-সহায়ক দলগুলিকে বিভিন্ন কাজের সাথে যুক্ত করে তাদের আর্থ-সামাজিক মান কিভাবে আরও উন্নত করা যায় সে সম্পর্কে পর্যালোচনা করা হয়৷ চলতি বছরে আরও ৩,৩০০ নতুন স্ব-সহায়ক দল গঠনের লক্ষ্যমাত্রার স্থির করা হয়েছে৷
এদিনের সভায় প’ায়েত দপ্তরের বিভিন্ন কাজকর্ম নিয়েও আলোচনা করা হয়৷ প’ায়েতী রাজ ইনস্টিটিউশনস অ্যাক্যাউন্টিং সফটওয়্যার, গ্রাম পঞ্চায়েত ডেভেলপমেন্ট প্ল্যান, পঞ্চায়েত মনিটরিং সিস্টেম, ই-গ্রাম স্বরাজ অ্যাপ্লিকেশন, অনলাইন অডিট ইত্যাদি বিভিন্ন বিষয়ে আলোচনা করা হয়৷
নিরাপত্তা বলয়ের মধ্যে এধরনের চুরির ঘটনা নিয়ে জনগণ রীতিমতো আতঙ্কিত৷ এলাকায় রাত্রিকালীন পুলিশি টহল বাড়ানোর জন্য এলাকাবাসী এবং ব্যবসায়ীরা জোরালো দাবি জানিয়েছেন৷ উল্লেখ্য লকডাউন চলাকালে রাজধানী আগরতলা শহর ও শহরতলীর এলাকায় ব্যাপক হারে চুরির ঘটনা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ স্বাভাবিক কারণেই রাজধানী আগরতলা শহর ও শহরতলীর এলাকার জনগণের জীবন সম্পত্তি রক্ষা নিয়ে নানা প্রশ্ণ উঠতে শুরু করেছে৷ অনেকেই পুলিশের দায়িত্ববোধ নিয়ে প্রশ্ণ তুলতে শুরু করেছেন৷