নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ জুন৷৷ সুপ্রিম কোর্টের নির্দেশ মেনে পরিযায়ী শ্রমিকদের সমস্ত দায়ভার নেবে ত্রিপুরা সরকার৷ তাঁরা বাড়ি ফিরতে চাইলে, সেই ব্যবস্থা করা এবং বহিঃরাজ্য থেকে করোনা-র জন্য চাকরি ছেড়ে এসেছেন তাঁদের কর্মসংস্থানের সুযোগ সৃষ্টি করা, সবই দেখবে রাজ্য সরকার৷ সেই মোতাবেক আজ মঙ্গলবার ত্রিপুরা মন্ত্রিসভা সুপ্রিম কোর্টের রায় কার্যকরের সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
এ-বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব টুইট বার্তায় জানান, বহিঃরাজ্য থেকে ত্রিপুরায় ফেরত পরিযায়ী শ্রমিকদের কর্মসংস্থানের প্রশ্ণে গুচ্ছ প্রকল্পে অনুমোদন দিয়েছে মন্ত্রিসভা৷ তাঁর কথায়, এখন পর্যন্ত ১৫,৮৬৫ জন পরিযায়ী শ্রমিক বহিঃরাজ্য থেকে ত্রিপুরায় ফিরেছেন৷ তাঁদের জন্য রাজ্যভিত্তিক, জেলাস্তরে এবং ব্লকস্তরে হেল্পডেস্ক খোলা হবে এবং তাঁদের দক্ষতা অনুযায়ী নথিভুক্ত করা হবে৷ তাঁর দাবি, তাঁদের কর্মসংস্থানের প্রশ্ণে রাজ্য এবং কেন্দ্রীয় সরকারের বিভিন্ন প্রকল্পের সুযোগ-সুবিধা পৌঁছে দেওয়া হবে৷
সাথে তিনি যোগ করেন, প্রধানমন্ত্রী এমপ্লয়মেন্ট জেনারেশন প্রোগ্রাম, স্বাবলম্বন, মাইক্রো ফুড প্রসেসিং এন্টারপ্রাইসেস, ন্যাশনাল আরবান লিভলিহুড মিশন, ত্রিপুরা রুরাল লিভলিহুড মিশন, এসসি, এসটি, ওবিসি, সংখ্যালঘু উন্নয়ন প্রকল্প, রেগা, ত্রিপুরা আরবান এমপ্লয়মেন্ট প্রোগ্রাম, প্রধানমন্ত্রী কৌশল বিকাশ যোজনা এবং দীনদয়াল উপাধ্যায় গ্রামীণ কৌশল যোজনায় বাজেট বরাদ্দ বৃদ্ধি করা হবে৷
আজ সাংবাদিক সম্মেলনে শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ বলেন, ত্রিপুরা সম্ভবত প্রথম রাজ্য, সুপ্রিম কোর্টের রায় সঙ্গে সঙ্গে কার্যকর করছে৷ আজ ত্রিপুরা মন্ত্রিসভা পরিযায়ী শ্রমিকদের নিয়ে সুপ্রিম কোর্টের রায় হুবহু কার্যকরে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
এদিকে, পরিযায়ী শ্রমিকদের স্বার্থে বিভিন্ন রাজ্য সরকারগুলিকে কড়া নির্দেশ দিল সুপ্রিম কোর্ট৷ মঙ্গলবার শীর্ষ আদালত সমস্ত রাজ্য সরকারগুলিকে স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিয়েছে, ১৫ দিনের মধ্যে নিজ নিজ শহরে ফেরত পাঠাতে হবে পরিযায়ী শ্রমিকদের৷ পাশাপাশি করোনাভাইরাস-সংক্রমণ রুখতে লাগু হওয়া লকডাউনের নিয়মভঙ্গের জন্য যে সমস্ত পরিযায়ী শ্রমিকদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়েছে, ২০০৫ ডিজাস্টার ম্যানেজমেন্ট আইনের অধীনে তা তুলে নেওয়ার নির্দেশ দিয়েছে শীর্ষ আদালত৷
নির্দেশ জারি করে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের চিহ্ণিত করার জন্য কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলিকে সুচারু পদ্ধতিতে একটি তালিকা প্রস্তুত করতে হবে৷ বিচারপতি অশোক ভূষণ, সঞ্জয় কিষাণ কল ও এমআর শাহের তিন বিচারপতির বেঞ্চ আরও নির্দেশ দিয়েছে, পরিযায়ী শ্রমিকদের দক্ষতা বিচার করে তাঁদের কাজের ব্যাবস্থা করার জন্য প্রকল্প তৈরি করতে হবে৷ প্রকল্প, চাকরি-সহ সমস্ত বিষয়ে সমস্ত রাজ্য সরকারগুলিকে বিস্তারিত হলফনামা জমা দিতে বলেছে সুপ্রিম কোর্ট এবং পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করা হয়েছে ৮ জুলাই৷ শ্রমিক স্পেশাল ট্রেন প্রসঙ্গে সুপ্রিম কোর্ট জানিয়েছে, শ্রমিক ট্রেনের চাহিদার কথা মাথায় রেখে ২৪ ঘন্টা ট্রেন চালাতে হবে রেলকে৷