নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৯ জুন৷৷ ১৯৮০ সালে জুনে সংগঠিত দাঙ্গার নেপথ্যে কারা, তা খুঁজে বের করার জন্য তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানিয়েছে আমরা বাঙালি৷ দলের বক্তব্য, মিজোরামের রিয়াং শরণার্থীদের পুনর্বাসনে ৬০০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ দেওয়া হচ্ছে৷ অথচ, দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালিরা আজও বিচারের অপেক্ষায়৷ তাঁরা সমস্ত সরকারি সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হয়েছেন৷ এই দ্বিচারিতার বিরুদ্ধেই আজ আমরা বাঙালি গর্জে উঠেছে বলে দাবি করেছে দল৷
আজ মঙ্গলবার আগরতলায় এই রাজনৈতিক দলের মুখ্য কার্যালয়ের সামনে এক বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে৷ তাতে আমরা বাঙালির কর্মকর্তারা অংশ নিয়েছেন৷ দলের জনৈক সদস্য এদিন বলেন, ত্রিপুরায় ১৯৮০ সালের জুন মাসে গণহত্যা সংগঠিত হয়েছিল৷ পরিকল্পিতভাবে হাজার হাজার মানুষ বলি দেওয়া হয়েছিল৷ লেম্বুছড়া, মান্দাই দিয়ে শুরু দাঙ্গা সারা ত্রিপুরায় ছড়িয়ে পড়েছিল৷ তিনি ক্ষোভের সুরে বলেন, ওই ভ্রাতৃঘাতী দাঙ্গায় প্রচুর মানুষ খুন হয়েছিলেন৷ জনজাতি-বাঙালি উভয় অংশের মানুষ ঘৃণ্য ষড়যন্ত্রের শিকার হয়েছিলেন৷ পরিস্থিতি এমন পর্যায়ে গিয়েছিল, মৃতদেহের গণ-কবর দেওয়া হয়েছিল৷
তিনি আক্ষেপ করে বলেন, ওই দাঙ্গার আজও বিচার হয়নি৷ শুধু তা-ই নয়, পরবর্তী সময়ে উগ্রপন্থী হামলায় বহু বাঙালি পরিবার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ১৯৮০ সালের দাঙ্গায় বহু নিরীহ মানুষ স্বজন হারিয়ে, ভিটেমাটি ছাড়া হয়েও আজ পর্যন্ত বিচার পাননি৷ তাই, উচ্চ আদালতের কর্মরত বিচারপতিকে দিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত কমিশন গঠনের দাবি জানাচ্ছি৷ ষড়যন্ত্রকারীদের খুঁজে বের করে কঠোর শাস্তি হোক, চাইছি৷
এদিন তিনি বলেন, অতীতে বাঙালিরা নানাভাবে বঞ্চিত হয়েছেন৷ আজও বঞ্চিত হচ্ছেন৷ তাঁর কথায়, স্বাধীনতা সংগ্রামে বাঙালির বিরাট অবদান রয়েছে৷ অথচ, তার মূল্যায়ন আজও কেউ করেননি৷ তিনি উষ্মা প্রকাশ করে বলেন, মিজোরাম থেকে আগত রিয়াং শরণার্থীদের ত্রিপুরায় পুনর্বাসনে ৬০০ কোটি টাকার বিশেষ প্যাকেজ দেওয়া হয়েছে৷ অথচ, ত্রিপুরার স্থায়ী বাসিন্দা বাঙালিদের কপালে শুধু লাঞ্ছনাই জুটেছে৷ তিনি হতাশা প্রকাশ করে বলেন, দাঙ্গায় ক্ষতিগ্রস্ত বাঙালি পরিবারগুলি ন্যায় বিচার পাননি৷ ভিটেমাটি ছাড়া হয়ে তাঁরা প্রাণ ভয়ে অন্যত্র আশ্রয় নিয়েছেন৷ কিন্তু পূর্বতন সরকার তাঁদের জন্য ভাবেনি৷ তাই, বর্তমান ত্রিপুরা সরকারের কাছে ওই সব বাঙালি পরিবারগুলির পুনর্বাসনের দাবি জানিয়েছে আমরা বাঙালি৷