গন্ডছড়ায় ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব, টিএসআর জওয়ানসহ আক্রান্ত ৩

নিজস্ব প্রতিনিধি, গন্ডাছড়া, ৮ জুন৷৷ ম্যালেরিয়া আক্রান্ত হয়ে গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি তিন জন৷ এর মধ্যে দলপতি এডিসি ভিলেজের হাতি মাথা এলাকার বাসিন্দা চন্দ্র মোহন ত্রিপুরার পরিবারের দুই জন এবং টিএসআর ১২ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের নব কুমার পাড়া ক্যাম্পের এক জওয়ান রয়েছে৷
হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, তারা সবাই গত শনিবার জ্বর নিয়ে গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে আসে এবং পরে রক্ত পরীক্ষার পর তাদের শরীরে ম্যালেরিয়া জীবাণু ধরা পড়ে৷ সাথে সাথে তাদের গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়৷ বর্তমানে তারা সবাই মহকুমা হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে৷ আক্রান্তরা হলেন মর্মপ্রিয়া ত্রিপুরা(১৪), কর্ণসেন ত্রিপুরা(৮) এবং জি সুরেশ(৩৫)৷


প্রসঙ্গত, প্রতিবছর এই মরশুমে ম্যালেরিয়ার প্রাদুর্ভাব লক্ষ করা যায়৷ বহু লোকের অকাল মৃত্যু ঘটে৷ যদিও এবছর ম্যালেরিয়ার প্রকোপ বিগত বছরগুলির তুলনায় কিছুটা কম৷ তারপরও জনমনে আতঙ্কের সৃষ্টি হয়েছে৷ ধলাই জেলার গন্ডাছড়া, রইস্যাবাড়ি, ছাওমনু প্রভৃতি এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রকোপ লক্ষ করা যয়৷ সরকারীভাবে এইসব এলাকায় প্রতিবছর প্রশাসনিক ও স্বাস্থ্য শিবির করা হয়ে থাকে৷ কিন্তু, এবছর করোনার দরুন এই ধরনের কোন শিবির করা হয়নি৷ তাই বিভিন্ন মহল থেকে দাবী জানানো হয়েছে, ম্যালেরিয়া প্রবন এলাকাগুলিতে আগাম সতর্কতা হিসেবে প্রশাসনিক ও স্বাস্থ্য শিবির সংগঠিত করার৷


এদিকে সোমবার ৪৪ রাইমাভ্যালি ব্লক যুব কংগ্রেসের এক প্রতিনিধি দল ম্যালেরিয়া আক্রান্তদের চিকিৎসার বিষয়ে খোঁজ খবর নিতে মহকুমা হাসপাতালে ছুটে যান৷ যুব কংগ্রেসের প্রতিনিধিরা আক্রান্তদের চিকিৎসার খোঁজ খবর নেবার পাশাপাশি মহকুমা স্বাস্থ্য আধিকারিকের সাথেও ম্যালেরিয়া এবং সর্বশেষ স্বাস্থ্য বিষয়ক সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করেন৷ এদিন যুব কংগ্রেসের তরফ থেকে চন্দ্র মোহন ত্রিপুরার হাতে কিছু আর্থিক সাহায্য তুলে দেওয়া হয়৷ পরে রাইমাভ্যালি ব্লক যুব কংগ্রেস সভাপতি বাদল সরকার সাংবাদিকদের জানান প্রত্যেক বছর এই সময় গোটা গন্ডাছড়া মহকুমা এলাকা জুড়ে বিশেষ করে পাহাড়ি এলাকায় ম্যালেরিয়ার প্রভাব লক্ষ্য করা যায়৷ এতে করে প্রতি বছর একাধিক লোকের মৃত্যু ঘটে৷ এরপরও স্বাস্থ্য দপ্তর আগাম কোন সতর্কতা মূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করছে না৷

তিনি স্বাস্থ্য দপ্তরের সমালোচন করে বলেন দপ্তর মহকুমা এলাকার মানুষের স্বাস্থ্য পরিষেবা দিতে ব্যর্থ৷ মাত্র চার জন চিকিৎসক দিয়ে মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক চলছে৷ যার ফলে দেখা যায় এক জন চিকিৎসক অন্ত বিভাগ, বহি বিভাগ সহ ডেলিভারি রোগীর চিকিৎসা করতে হচ্ছে৷ এমত অবস্থায় চিকিৎসক সল্পতার দরুন প্রত্যন্ত এলাকা গুলোতে ধারাবাহিক ভাবে স্বাস্থ্য শিবির করা যাচ্ছে না৷ এদিন যুব কংগ্রেসের সভাপতি সংবাদ মাধ্যমের মাধ্যমে রাজ্য সরকারের কাছে দাবি জানান সুস্থ স্বাস্থ্য ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে আগামী এক সপ্তাহের মধ্যে গন্ডাছড়া মহকুমা হাসপাতালে কমপক্ষে পাঁচ জন চিকিৎসক নিয়োগ করা৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *