নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২৯ মে৷৷ গোমতি নদী দিয়ে নৌ পরিবহণের স্বপ্ণ দেখেছিলাম, তা শীঘ্রই সফল হবে৷ শুক্রবার দৃঢ়তার সাথে এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তাঁর কথায়, ভারত-বাংলাদেশের মধ্যে এক ঐতিহাসিক চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে৷ তাতে সোনামুড়া-দাউদকান্দি নৌ পরিবহণ শুরু হবে৷ করোনা মহামারির মধ্যেও এই চুক্তি স্বাক্ষরের জন্য দুই দেশের প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ জানান মুখ্যমন্ত্রী৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, তিন-চার মাসের মধ্যেই পরীক্ষামূলকভাবে সোনামুড়া পর্যন্ত জাহাজ চলাচল করবে৷ এ-বিষয়ে কেন্দ্রীয় জাহাজমন্ত্রকের সচিব সঞ্জীব রঞ্জন মুখ্যমন্ত্রীকে জানিয়েছেন, তিন মাসের মধ্যে একটি অস্থায়ী জেটি তৈরি করা হবে সোনামুড়ায়৷ এর পর শুখা মরশুমে গোমতি নদীর ড্রেজিং করা হবে৷ যার মাধ্যমে বছরজুড়ে জাহাজের আসা-যাওয়া অব্যাহত থাকবে৷ তাঁর দাবি, ন্যূনতম ৫০ টন ওজনের পণ্য নিয়ে জাহাজ চলাচল করতে পারবে৷ তিনি বলেন, সোনামুড়া-দাউদকান্দি এই ৯৩ কিলোমিটার রুটের মধ্যে রয়েছে ২৩টি সেতু৷ ওই সেতুর জন্য সমস্যা সৃষ্টি হতে পারে, আশঙ্কা প্রকাশ করেন তিনি৷ তবে, ড্রেজিং হয়ে গেলে সেই সমস্যা থাকবে না বলে তিনি আশা ব্যক্ত করেন৷
প্রসঙ্গত, সম্প্রতি ঢাকায় এক ঐতিহাসিক স্বাক্ষরের মধ্য দিয়ে স্বীকৃতি পায় সোনামুড়া-দাউদকান্দি প্রটোকল রুট৷ ফলে ইন্দো-বাংলা প্রটোকল (আইবিপি) রুটের সংখ্যা ৮ থেকে বাড়িয়ে ১০ করা হয়েছে এবং বিদ্যমান রুটে নতুন স্থানও যুক্ত করা হয়েছে৷ এতে প্রথমেই গোমতি নদীর সোনামুড়া-দাউদকান্দি (৯৩ কিমি) আইবিপি-র ৯ম ও ১০ম রুট হিসেবে অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে৷ এটি ত্রিপুরা এবং সংলগ্ণ রাজ্যগুলির সাথে ভারত-বাংলাদেশের অর্থনৈতিক কেন্দ্রগুলির যোগাযোগ বৃদ্ধি করবে এবং উভয় দেশের নদী-দূরবর্তী অঞ্চলেও সহায়তা করবে৷ এই রুটটি ১ থেকে ৮ পর্যন্ত বিদ্যমান সকল আইবিপি রুটকে সংযুক্ত করবে৷
বর্তমান প্রটোকলের অধীনে বিদ্যমান ছয়টি পোর্ট অফ কল হলো ভারতের কলকাতা, হলদিয়া, করিমগঞ্জ (অসম), পাণ্ডু (অসম), শিলঘাট (অসম) এবং ধুবড়ি (অসম)৷ বাংলাদেশের পক্ষে নারায়ণগঞ্জ, খুলনা, মংলা, সিরাজগঞ্জ, আশুগঞ্জ ও পানগাঁও৷ এদিন স্বাক্ষরে ভারতের পক্ষ থেকে নতুন যুক্ত হওয়া পাঁচটি বন্দর হলো ধুলিয়ান, মাইয়া, কোলাঘাট, সোনামুড়া এবং যোগিগোপা (অসম)৷ আর বাংলাদেশের বন্দরগুলো যথাক্রমে রাজশাহী, সুলতানগঞ্জ, চিলমারি, দাউদকান্দি এবং বাহাদুরাবাদ৷ এছাড়াও এই সংযোজনের মাধ্যমে ভারতের ত্রিবেলি (ব্যান্ডেল) ও বদরপুর (অসম) এবং বাংলাদেশের ঘোড়াশাল ও মুক্তারপুর এই দু’টি বন্দর সম্প্রসারণের ফলে দুই দেশের পোর্ট অফ কলও সম্প্রসারিত হল৷ পোর্ট অফ কলের সংখ্যা বেড়ে দাঁড়িয়েছে যথাক্রমে ১১টি এবং দুইয়ে৷ এই ঐতিহাসিক চুক্তির ফলে দারুণ ভাবে উপকৃত হবে ত্রিপুরা৷