নয়াদিল্লি, ১৭ মে (হি.স.): কোভিড-১৯ নভেল করোনাভাইরাসের প্রকোপ থেকে দেশের অর্থনীতিকে সুরক্ষিত রাখার জন্য ‘আত্মনির্ভর ভারত’ প্রকল্পে ২০ লক্ষ কোটির আর্থিক প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রবিবার সেই প্রকল্পের পঞ্চম পর্বের ঘোষণা করছেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন। এদিন স্বাস্থ্য, শিক্ষা ও ব্যবসা ক্ষেত্রের প্যাকেজ ঘোষণা করছেন অর্থমন্ত্রী। এর মধ্যে ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাজেট ছাড়াও ৪০ হাজার কোটির অতিরিক্ত প্যাকেজ ঘোষণা করেছেন তিনি।
অর্থমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ যোজনায় মাসে ২০০০ টাকা করে দেওয়া হয়। সরাসরি উপভোক্তাদের অ্যাকাউন্টে দেওয়া হয়। সেই প্রকল্পে বহু কৃষক উপকৃত হয়েছেন। পরিযায়ী শ্রমিকদের বাড়ি ফেরত পাঠানো প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রি বলেছেন, পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফিরছেন, তাঁদের ট্রেনের ভাড়ার ৮৫ শতাংশ বহন করেছে কেন্দ্র। ট্রেনের মধ্যে তাঁদের খাবারও দেওয়া হয়েছে। যে সব রাজ্য যত সংখ্যক ট্রেন চাইছে, সেগুলির বন্দোবস্ত করা হচ্ছে। অর্থমন্ত্রী আরও জানান, ১২ লক্ষ কর্মী ইপিএফ থেকে ৩৩৬০ কোটি টাকা তুলেছেন। ৮৬ হাজার কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হেয়েছে কৃষকদের। স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষার দিকে নজর দেওয়া হচ্ছে। স্বাস্থ্যকর্মীদের জন্য় ৫০ লক্ষ টাকার বিমা করা হয়েছে। বর্তমানে আমাদের দেশে তিন হাজারের বেশি সংস্থা সুরক্ষা সামগ্রী তৈরি করছে।
অর্থমন্ত্রী এদিন জানিয়েছেন, স্কুলশিক্ষায় ‘ওয়ান নেশন ওয়ান চ্যানেল’ প্রকল্প চালু হবে। অনলাইন ক্লাস নিচ্ছে স্কুলগুলি। বর্তমানে একটি প্ল্যাটফর্মে লাইভ সম্প্রচারের মাধ্যমে ক্লাস চলছে, আরও ১১টি এই প্ল্য়াটফর্ম যোগ করা হবে। স্কাইপের মতো প্ল্যাটফর্মে কথোপকথনের লাইভ সম্প্রচার করার চেষ্টাও চলছে। বেসরকারি কেবল অপারেটর সংস্থাগুলির সঙ্গে চুক্তি হয়েছে, যাতে টিভিতে ক্লাস সম্প্রচার করা যায়। কী ভাবে গরিবদের কাছে অনলাইন ক্লাস পৌঁছনো যায়, তার চেষ্টা চলছে। ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ বিপুল সাফল্য পেয়েছে মন্তব্য করে অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘আরোগ্য সেতু’ অ্যাপ-এর মাধ্যমে সরকার যেমন তথ্য পাচ্ছে, তেমনই সাধারণ মানুষও উপকৃত হচ্ছেন।
১০০ দিনের কাজ নিয়ে নির্মলার ঘোষণা, মনরেগা বা ১০০ দিনের কাজ প্রকল্পে বাজেটের বাইরেও আরও ৪০ হাজার কোটি অতিরিক্ত দেওয়া হবে। ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পে ৬১ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছিল বাজেটে। পরিযায়ী শ্রমিকরা ঘরে ফেরার পর কাজে যাতে এই প্রকল্পে কাজ পান, তা দেখা হবে। কর্মদিবস আরও বাড়ানোর চেষ্টা হবে। নির্মলা আরও জানান, সরকারি ক্ষেত্রে বেসরকারিকরণে সায় দেওয়া হতে পারে। ‘স্ট্র্যাটেজিক সেক্টর’-এর একটি তালিকা তৈরি হবে। সেই তালিকা অনুযায়ী বেসরকারিকরণ ও সংযুক্তিকরণের সিদ্ধান্ত হবে। তবে চারটি সংস্থার বেশি সংস্থা সংযুক্তিকরণ হবে না।
রাজ্য সরকারগুলির আয় কমেছে, মন্তব্য করে কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী বলেছেন, রাজ্য সরকারগুলির আয় কমেছে, তার জন্য় রাজ্যগুলির ঋণ নেওয়ার পরিমাণ বাড়ানো হচ্ছে। রাজ্য ও কেন্দ্রের আয় ব্যাপক হারে কমেছে। কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে সাহায্যের কাজ করছে, যা আমাদের দায়িত্ব। ৪০ হাজার ৩৮ কোটি টাকা রাজ্যগুলিকে দেওয়া হয়েছে। এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই বিপর্যয় মোকাবিলা তহবিল ৪২১৩ কোটি টাকা দেওয়া হয়েছে রাজ্যগুলিকে। রাজ্যগুলির ওভারড্রাফট নেওয়ার মেয়াদ ১৪ দিনের পরিবর্তে ২১ দিন করা হয়েছে।