BRAKING NEWS

সন্তোষ হোজাই হত্যাকাণ্ড : ডিএসপিকে গ্রেফতার ও সিবিআই তদন্তের দাবিতে আহূত ৩৬ ঘণ্টার বনধ-এ স্তব্ধ ডিমা হাসাও জেলা

হাফলং (অসম), ১৪ মে (হি.স.) : উগ্রপন্থী সংগঠন ডিএইচডি-র প্রাক্তন সদস্য তথা ঠিকাদার সন্তোষ হোজাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত হাফলঙের ডিএসপি সূর্যকান্ত মরানের গ্রেফতারের দাবিতে এবং এই ঘটনার সিবিআই তদন্তের দাবির ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার ভোর থেকে আহূত ৩৬ ঘণ্টার বনধ-এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে ডিমা হাসাও জেলায়।

ভেঙে দেওয়া ডিমা হালম দাওগা (ডিএইচডি) জঙ্গি সংগঠনের আত্মসমর্পণকারী সদস্যদের নিয়ে গঠিত এনজিও হালালি প্রগ্রেসিভ ওয়েলফেয়ার সোসাইটি আহূত ৩৬ ঘণ্টার ডিমা হাসাও তথা ডিমারাজি বনধে সমগ্র ডিমারাজি এলাকার জনজীবন সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে পড়ে আজ। লকডাউনের মধ্যে বৃহস্পতিবার সকাল ৫ টা থেকে চলমান এই বনধ শুরু হয়। চলবে শুক্রবার বিকেল ৫ টা পর্যন্ত। হালালি প্রগ্রেসিভ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ডাকা ৩৬ ঘণ্টার বনধে পাহাড়ি জেলার সদর শহর হাফলং, মহকুমা সদর মাইবাং, উমারাংসো সহ জেলার সর্বত্র ও ডিমারাজি এলাকায় বনধ ছিল সর্বাত্মক ও শান্তিপূর্ণ। বনধকে কেন্দ্র করে বৃহস্পতিবার হাফলং শহরে দোকানপাট, বাজারহাট, সরকারি বেসরকারি কার্যালয় সবই ছিল বন্ধ।

লকডাউন অমান্য করে বাড়ি ঘর ছেড়ে বিনা কাজে এতদিন মানুষ বাইরে বেরিয়ে আসলেও বৃহস্পতিবার হাফলং শহরের দৃশ্য ছিল সম্পূর্ণ ভিন্ন। শহরের রাস্তাঘাটে দেখা যায়নি মানুষের চলাচল। কার্যত জেলার প্রত্যেকটি এলাকা ছিল জনশূন্য।

এদিকে ডিমা হালম দাওগার প্রাক্তন অধ্যক্ষ তথা হালালি প্রগ্রেসিভ ওয়েলফেয়ার সোসাইটির সভাপতি দিলীপ নুনিসা সরকারের প্রতি ক্ষোভ ব্যক্ত করে বলেন, গত ২৪ এপ্রিল সন্তোষ হোজাইকে অপহরণ করে নৃশংসভাবে খুন করার ২০ দিন অতিক্রান্ত হওয়ার পরও এই খুনের সঙ্গে জড়িত অভিযুক্ত হাফলঙের ডিএসপি সদর সূর্যকান্ত মরানকে গ্রেফতার বা চাকরি থেকে বরখাস্ত করেনি পুলিশ। সূর্যকান্ত মরানকে অভিযুক্ত করে হারাঙ্গাজাও থানায় সন্তোষ হোজাইয়ের স্ত্রী জয়ন্তা হোজাই এক মামলা রুজু করার পরও ডিমা হাসাও পুলিশ এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি বলে অভিযোগ করেন দিলীপ।

দিলীপ নুনিসা বলেন, সন্তোষ হোজাইকে খুনের সঙ্গে ডিএসপি যে জড়িত এর তথ্য প্রমাণ আমাদের কাছে আছ। বলেন গৌহাটি হাইকোর্টের নির্দেশে রাজ্যের পুলিশ প্রধান ভাস্করজ্যোতি মহন্ত দক্ষিণ অসম রেঞ্জের ডিআইজি দিলীপ কুমার দে-র নেতৃত্বে যে এসআইটি গঠন করা হয়েছে একে আমরা স্বাগত জানাই। কিন্তু আমরা চাইছি সন্তোষ হোজাই খুনের নিরপেক্ষ সিবিআই তদন্ত হোক। আর শীঘ্রই ভারত সরকার ও অসম সরকার এতে অনুমোদন জানিয়ে এই হত্যাকাণ্ডের নিরপেক্ষ সিবিআই তদন্তের নির্দেশ দিক।

প্রাক্তন উগ্রপন্থী নেতা বলন, সন্তোষ হোজাইকে খুনের সঙ্গে ডিএসপি জড়িত থাকার কথা প্রকাশ হওয়ার পরও অসমের গৃহ দফতরের দায়িত্বপ্রাপ্ত মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়াল এ নিয়ে কোনও পদক্ষেপ গ্রহণ করেননি। ভারত সরকারের সঙ্গে ডিএইচডি-র চুক্তি স্বাক্ষরিত হওয়ার পর এর ফলাফল কী এটাই? এই প্রশ্ন করে দিলীপ নুনিসা বলেন, সন্তোষ হোজাইকে খুনের পর স্থানীয় বিধায়ক রাজ্যের পার্বত্য এলাকা উন্নয়ন বিভাগের মন্ত্রী ও সাংসদের নীরবতাও দুর্ভাগ্যজনক। তাছাড়া পুলিশের নেতৃত্বে ডিমা হাসাও জেলায় গুপ্তহত্যা হচ্ছে এবং এতে আমরা ভীতিগ্রস্ত বলে জানান বক্তা। তাই এই বনধ-এর মাধ্যমে ডিএইচডি-র সাড়ে তিন হাজার প্রাক্তন সদস্য সন্তোষ হোজাই খুনের ন্যায় বিচারের দাবিতে জেলাশাসকের কার্যালয়ের সামনে অনির্দিষ্টকালের জন্য ধরনায় বসবেন বলেও জানিয়ে দিয়েছে দিলীপ। এ ব্যাপারে বুদ্ধিজীবী ও সিভিল সোসাইটির সহযোগিতা চেয়েছেন দিলীপ নুনিসা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *