গুয়াহাটি, ২৩ এপ্রিল (হি.স.) : বিশ্বজুড়ে নোভেল করোনা ভাইরাসের আতঙ্ক। করোনা-আতঙ্কের জেরে বিশ্ববিখ্যাত শক্তিপীঠ কামাখ্যা মন্দিরের ইতিহাসে প্রথম, এবার অনুষ্ঠিত হবে না অম্বুবাচি মেলা। সমগ্র দেশের সাথে অসমেও চলছে লকডাউন। পরিস্থিতি খারাপের দিকে যাতে না যায় তার প্রতি লক্ষ্য রেখে মানুষকে ঘরবন্দি থাকার সময়সীমা দ্বিতীয় মেয়াদে ৩ মে পর্যন্ত বাড়ানো হয়েছে। এরই মধ্যে কামাখ্যা মন্দির পরিচালন সমিতি এই গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেছে।
বুধবার কামাখ্যা মন্দির পরিচালন কমিটি এক সভায় বসে। গতকালের সভায় গৃহীত সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এ বছর অম্বুবাচি মেলা অনুষ্ঠিত হবে না বলে আজ বৃহস্পতিবার বিজ্ঞপ্তি জারি করে জানানো হয়েছে। তবে মেলার আয়োজন না হলেও আগামী ২২ জুন থেকে চারদিন মা কামাখ্যার অম্বুবাচি সংক্রান্ত যাবতীয় শাস্ত্রীয় বিধি-উপাচার উদযাপিত হবে। জনসমাগম ঠেকাতে এই সিদ্ধান্ত বলে জানান কামাখ্যা দেবালয়ের প্রধান দলৈ কবীন্দ্রপ্রসাদ শর্মা। তিনি জানান, মেলা বাতিল করা হলেও ধর্মীয় রীতিনীতি ও নিয়ম পালন করে সীমিত সংখ্যক লোকের উপস্থিতিতে পূজার কাজ সম্পন্ন করা হবে। রাখা হবে সামাজিক দূরত্ব। বিশেষ কোনও আয়োজন থাকবে না। এ সময় কোনও ভক্তকে মন্দিরে প্রবেশ করতে দেওয়া হবে না।
উল্লেখ্য, অম্বুবাচি মেলা উত্তর-পূর্বাঞ্চলের সর্ববৃহৎ ধর্মীয় সমাবেশ। দেশ-বিদেশ থেকে হাজারো পর্যটক ও তীর্থযাত্রীর অম্বুবাচি মেলা উপলক্ষ্যে গুয়াহাটির নীলাচল পাহাড়ে অবস্থিত শক্তিপীঠ কামাখ্যা ধামে জমায়েত হয়। কামাখ্যার প্রধান উৎসব এই অম্বুবাচি মেলা। কামাখ্যা মন্দিরে আয়োজিত এই মেলা প্রতিবছর আষাঢ় মাসে ধরিত্রী রজস্বলা হওয়ার সময় অনুষ্ঠিত হয়ে থাকে। এ বছরের ২২ জুন তারিখ থেকে আরম্ভ হওয়ার কথা ছিল অম্বুবাচি মেলার।
প্রসঙ্গত ২৪ মার্চ জারিকৃত লকডাউনের আগে থেকেই মা কামাখ্যা মন্দিরে ভক্তকুলের যাতায়াত বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল। এদিকে দলৈ সমাজের পক্ষ থেকে কামাখ্যাবাসীদের জন্য এক বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, অম্বুবাচি উপলক্ষ্যে কেউ যেন ঘর ভাড়া না দেন। অম্বুবাচি উপলক্ষ্যে দেশ বিদেশের অনেক তীর্থযাত্রী ও পুণ্যার্থী বহুদিন আগে থেকে সাধনার জন্য শক্তিপীঠে চলে আসেন। তাঁদের অনেকে অম্বুবাচি শেষ না হওয়া পর্যন্ত কামাখ্যার বিভিন্ন পাণ্ডার বাড়িতে ঘর ভাড়া করে থাকেন। এর জন্যই এই বিজ্ঞপ্তি জারি করা হয়েছে।