গুয়াহাটি, ১৮ এপ্রিল (হি.স.) : অসমের কয়েকটি হাসপাতাল থেকে শনিবার আরও ১১ জন কোভিড-১৯ সংক্রমিত রোগীকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাছাড়া করিমগঞ্জের ১৩ জন সন্দেহভাজন ব্যক্তিকে আজ কোয়ারেন্টাইন সেন্টার থেকে বাড়ি যাওয়ার অনুমতি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের সবাইকে আরও ১৪ দিন তাঁদের বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে। আজ আরও ১১ জনকে সংক্রমণ-মুক্ত বলে ঘোষণা করার পর কোভিড-১৯ আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা ১২-য় নেমেছে। এঁদের মধ্যে অবশ্য একজনের ইতিমধ্যে মৃত্যু হয়েছে। অসমে করোনার আক্রান্তের সংখ্যা ৩৪-এ পৌঁছেছিল।
আজ সকালে রাজ্যের স্বাস্থ্য প্রতিমন্ত্রী পীযূষ হাজরিকাকে সঙ্গে নিয়ে স্বাস্থ্যমন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা গুয়াহাটির মহেন্দ্ৰমোহন চৌধুরী হাসপাতালে চিকিৎসাধীন মহম্মদ আরশাদ এবং মহম্মদ রিজুয়ান নামের দুই কোভিড-১৯ রোগীকে বরণ করেন। হাসপাতাল চত্বরে তাঁদের হাতে পুষ্টিকর খাদ্য-সহ অন্যান্য উপহার সামগ্রীর একেকটি ঝাঁপি তুলে দিয়েছেন। মন্ত্রী জানান, তাঁদের নমুনা রুটিনমাফিক চারবার পরীক্ষার পর নেগেটিভ ফল আসায় বোর্ড এই দুজনকে ছুটি দেওয়ার অনুমতি দিয়েছে। এঁরা দুজনেই উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা। অসমেই তাঁদের আরও ১৪ দিন কোয়ারেন্টাইনে থাকতে হবে।
মন্ত্রী ড. শর্মা জানান, এই দুজনকে নিয়ে রাজ্যের বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে মোট ১১ জন করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত রোগীকে আজ ছুটি দেওয়া হয়েছে। সুস্থদের তালিকায় শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন একজন রয়েছেন। আজ কোভিড-১৯ সংক্রান্ত বোর্ডের সুপারিশেই তাদের সবাইকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। তাঁরা সকলেই অন্য সাধারণ মানুষের মতো এখন জীবনযাপন করতে পারবেন। তবে তাঁদের সকলকে করোনা বিধি অনুযায়ী আগামী ১৪ দিন তাঁদের বাড়িতে স্বাস্থ্য কর্মীদের তদারকির মধ্যে নিভৃতবাসে থাকতে হবে, জানিয়েছেন স্বাস্থ্যমন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মা।
এদিকে গুয়াহাটি থেকে শিলচরে গিয়ে কোভিড-১৯ সংক্ৰমিত জনৈক সাজিবুর রহমানকে সুস্থ শরীরে বরণ করেছেন মন্ত্রী হিমন্তবিশ্ব শর্মা। বরাক উপত্যকার দায়িত্বপ্রাপ্ত মন্ত্রী পরিমল শুক্লবৈদ্য, সাংসদ ডা. রাজদীপ রায়, বিধায়ক দিলীপ পালদের সঙ্গে নিয়ে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে কোভিড-১৯ বিজয়ী সুস্থ সাজিবুরের হাতে পুষ্টিকর খাদ্য ও উপহার সামগ্রী তুলে তাঁকে স্বাগত জানান মন্ত্রী ড. হিমন্তবিশ্ব। তিনি জানান, সাজিবুর রহমানের তিন বার টেস্ট হয়েছে। সব রিপোর্ট নেগেটিভ এসেছে। তাছাড়া এক্স-রেতেও তিনি নিউমোনিয়া-মুক্ত বলে রিপোর্ট এসেছে, জানান মন্ত্রী
প্ৰসঙ্গত, গতকাল গোলাঘাটের কুশল কোঁওর অসামরিক হাসপাতাল থেকে চারজন যথাক্রমে হায়দর আলি (৬২), ওয়াহিদা বেগম (৩০), ইয়াকুব আলি (৫১) এবং রুমা বেগম (৩৮)-কে কোভিড-১৯ সংক্রমণ-মুক্ত বলে ছেড়ে দেওয়া হয়েছিল। এর আগে ১৫ এপ্রিল গুয়াহাটির পার্শ্ববর্তী সোনাপুর হাসপাতাল থেকে দুই, পরেরদিন ১৬ তারিখ গোয়ালপাড়ার তিন রোগীকে ছুটি দেওয়া হয়েছে। সেই হিসাবে অসমে এ মুহূর্তে কোভিড-১৯ সংক্রমণে আক্রান্তের সংখ্যা ১২। তবে করোনা ভাইরাসে আক্ৰান্ত হাইলাকান্দি জেলার আলগপুর বিধানসভা এলাকার বড়জুরাই গ্রামের বাসিন্দা ফয়জুল হক বড়ভুইয়াঁর গত ৯ এপ্রিল শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে মৃত্যু হয়েছে।
এদিকে করিমগঞ্জের গিরিশগঞ্জ মডেল হাসপাতালের কোয়ারেন্টাইন থেকে ১৩ জন সন্দেহভাজন সংক্রমিত ব্যক্তিকে আজ ছুটি দেওয়া হয়েছে। তাঁদের মধ্যে ১০ জন অসমের প্রথম করোনা-আক্রান্ত রোগী জেলার বদরপুর বিধানসভা এলাকার হাসানপুর গ্রামের জামাল উদ্দিনের নিকট আত্মীয় এবং বাকিরা তাঁর সংস্পৃষ্ট বলে জানা গেছে। জামাল উদ্দিনের এখনও মচিকিৎসা চলছে শিলচর মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে।