গোলাঘাট (অসম), ১৬ এপ্রিল (হি.স.) : মহামারি করোনা সৃষ্ট পরিস্থিতির জেরে বিপদে পড়েছেন বহু মানুষ। গোটা বিশ্ব তথা ভারত জুড়ে লকডাউনের ফলে বিপাকে পড়েছেন বহিঃরাজ্যে কৰ্মরত বহু শ্ৰমিক। সারা দেশের চিত্র এ মূহূর্তে এক। এমনই এক ঘটনার তথ্য পাওয়া গেছে উত্তর-পূর্বাঞ্চলের অসমে।
জানা গেছে, জন্মসূত্ৰে অসমের বহু বাসিন্দা কৰ্মসূত্ৰে থাকেন প্রতিবেশী রাজ্য নাগাল্যান্ডের বিভিন্ন জেলায়। তাঁরা নাগাল্যান্ডের লংলেং, মেও, তুলি ইত্যাদি অঞ্চলের বিভিন্ন কয়লা খনি, কাঠের মিলে কৰ্মরত শ্রমিক। এঁদের বেশিরভাগ গোলাঘাট জেলার উরিয়ামঘাটের বাসিন্দা। লকডাউনের ফলে তাঁরা নাগাল্যান্ডে তাঁদের কর্মক্ষেত্রে আটকে পড়েছিলেন। মালিক পক্ষ তাঁদের টাকা পয়সা, খাবার দেওয়া বন্ধ করে দিয়েছেন। হাতে টাকা পয়সা নেই। তাই তাঁরা ভাবলেন নাগাল্যান্ডে থেকে না খেয়ে মৃত্যুবরণ করার চেয়ে নিজের বাড়িতে গিয়ে মরাই শ্ৰেয়।
যেমন ভাবা তেমন কাজ। গতকাল বুধবার (১৫ এপ্ৰিল) ভোর চারটে নাগাদ গোলাঘাট জেলার উরিয়ামঘাটের বাসিন্দা ১৩ জন শ্ৰমিকের এক দল নাগাল্যান্ডের লংলেং জেলার প্ৰত্যন্ত অঞ্চল থেকে পায়ে হেঁটে বাড়ির উদ্দেশে রওয়ানা হন। বৃহস্পতিবার ভোরের দিকে ক্ষুধার্ত শ্রমিকের দল দীর্ঘ দুর্গম পথ অতিক্রম এসে পৌঁছেন উরিয়ামঘাটে।
আজ তারা সাংবাদিকদের জানান, বাড়ির উদ্দেশে আসার সময় রাস্তায় খাবার বলতে শুকনো চিড়ে এবং শুধুই জল খেয়েছেন। পিঠে ব্যাগ নিয়ে সারাদিন সারা রাত হেঁটে হেঁটে দলের বেশ কয়েকজন বয়োজ্যেষ্ঠের অবস্থা শোচনীয় হয়ে পড়েছে। তাঁরা জানান, ‘নাগাল্যান্ডে না খেয়ে মরার চেয়ে নিজের ঘরে এসে মৃত্যুবরণ করলে অন্তত মরার আগে মুখে জল দেওয়ার তো কেউ পাশে থাকবে।’
এদিকে লকডাউন চলাকালীন নিয়ম ভেঙে প্ৰশাসনকে না জানিয়ে কোনও ধরনের স্বাস্থ্য পরীক্ষা ছাড়া অন্য রাজ্য থেকে এই সব শ্ৰমিক গোলাঘাটে ফিরে আসাকে কেন্দ্র করে তীব্ৰ চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে।