কমলা জোনে উত্তর ও গোমতি জেলা, ২০ এপ্রিল পর্যন্ত কঠোর ভাবে মানতে হবে লকডাউন

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৫ এপ্রিল৷৷ ত্রিপুরার দুই জেলায় করোনা আক্রান্তের সন্ধান মিলেছে৷ তাই আপাতত ওই দুই জেলা কমলা জোনে আওতায় পড়েছে৷ তবে ১৪ দিন ওই জেলাগুলিতে কোনও নতুন আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া না গেলে সেই জেলা সবুজ জোনে স্থান পাবে৷ সে-ক্ষেত্রে আগামী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন কঠোর ভাবে পালন করতে হবে৷ কারণ, ২০ এপ্রিলের পর পর্যালোচনায় লকডাউনকে শিথিল করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে৷ বুধবার সন্ধ্যায় সাংবাদিক সম্মেলনে এ-কথা জানালেন স্টেট সার্ভেইলেন্স অফিসার ডা. দ্বীপকুমার দেববর্মা৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় নমুনা সংগ্রহ এবং পরীক্ষার গতি বেড়েছে৷ কিন্ত, এখন পর্যন্ত নতুন কোনও করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া যায়নি৷


সাংবাদিক সম্মেলনে ত্রিপুরা সরকারের সাধারণ প্রশাসন দফতরের সচিব টি কে চাকমা বলেন, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ১০,৭৫৫ জনকে কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছিল৷ তাদের মধ্যে ১৪ দিনের পর্যবেক্ষণ সময়সীমা অতিক্রম করেছেন ১০,১৫৫ জন৷ বর্তমানে ১৪৫ জন প্রাতিষ্ঠানিক এবং ৪৫৫ জন বাড়িতে কোয়ারেন্টাইনে রয়েছেন৷ তাঁর কথায়, ত্রিপুরায় এখন পর্যন্ত ৮০৩টি নমুনা সংগ্রহ করে ৭৩৮টির পরীক্ষা করা হয়েছে৷ এতে ২ জন করোনা পজিটিভ ছিলেন৷ তাদের মধ্যে একজন আজ সুস্থ হয়ে হাসপাতাল থেকে ছুটি পেয়েছেন৷
এ-বিষয়ে স্টেট সার্ভেইলেন্স অফিসার ডা. দ্বীপকুমার দেববর্মা জানান, পর পর তিনবার তার রিপোর্ট নেগেটিভ আসার পর চিকিৎসকরা আজ তাকে পরীক্ষা করে ছুটি দিয়েছেন৷ তবে তিনি উদয়পুরে ১৪ দিনের জন্য প্রাতিষ্ঠানিক কোয়ারেন্টাইনে থাকবেন৷ ওই সময়ে প্রতিদিন চিকিৎসকদের একটি টিম তাঁকে পরীক্ষা-নিরীক্ষা করবেন৷


ডা. দ্বীপ বলেন, গোমতি জেলায় ওই মহিলার বাড়ির এক কিমি এলাকা করোনা স্পর্শকাতর হিসেবে ঘোষণা করা হয়েছে৷ সেখানে চলাফেরায় বিধিনিষেধ আরোপ করা হয়েছে৷ তাঁর কথায়, ওই এলাকায় ২৮ দিনের মধ্যে কোনও করোনা আক্রান্তের সন্ধান না মিললে তবেই বিধিনিষেধ প্রত্যাহার করা হবে৷ তাঁর দাবি, এখন পর্যন্ত ওই এলাকা থেকে অনেকেরই নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে৷ কিন্ত, সকলের রিপোর্ট নেগেটিভে এসেছে৷ তিনি জানান, আরও নমুনা সংগ্রহ করা হবে৷


এদিকে, ত্রিপুরায় করোনা আক্রান্ত দ্বিতীয় রোগীর শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল৷ এ-বিষয়ে ডা. দ্বীপ দেববর্মা বলেন, ওই রোগীর আগামীকাল পুনরায় পরীক্ষা করা হবেঊ তবে সম্প্রতি তার রক্তের নমুনায় ভাইরাল লোড প্রায় ৫০ শতাংশ কমেছে, এমন রিপোর্ট এসেছে৷ তাই আশা করা যাচ্ছে, ৩/৪ দিনের মধ্যে তিনিও সম্পুর্ণ সুস্থ হয়ে উঠবেন৷ ডা. দ্বীপ বলেন, ওই রোগীর অতি সংস্পর্শে ছিলেন এমন ১৬ জনের নমুনা সংগ্রহের পর পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাদের রিপোর্ট নেগেটিভে এসেছেঊ সাথে তিনি যোগ করেন, ওই রোগীর বাড়ির সকল সদস্যদের কোয়ারেন্টাইনে রাখা হয়েছে৷ সে-বিষয়ে উত্তরপ্রদেশের স্টেট সার্ভেইলেন্স অফিসারের সাথে কথা হয়েছে৷ তিনি বলেন, ওই রোগীর বাড়ির সদস্যদের কারোর কোনও লক্ষণ নেই৷


এদিন তিনি জানান, ভারত সরকারের নির্দেশ অনুযায়ী ২০ এপ্রিল পর্যন্ত লকডাউন কঠোরভাবে পালন করতে হবে৷ কারণ, ২০ এপ্রিলের পর পর্যালোচনা হবে৷ তার পর, লকডাউন শিথিল করার বিষয়ে বিবেচনা হবে৷ তাঁর কথায়, গোটা দেশকে তিনটি ভাগে ভাগ করা হয়েছে৷ ১৫ বা তার বেশি করোনা আক্রান্ত এলাকা লাল জোন, ১৫ জনের কম আক্রান্ত হলে কমলা জোন এবং একজনও করোনা আক্রান্ত পাওয়া যায়নি কিন্ত সম্ভাবনা রয়েছে এমন এলাকা সবুজ জোনে স্থান পাবে৷ সে-ক্ষেত্রে উত্তর ও গোমতি জেলা কমলা জোনে স্থান পেয়েছে৷ তবে, ১৪ দিন ওই স্থানে একজনও করোনা আক্রান্তের সন্ধান পাওয়া না গেলে সেই জেলা কমলা থেকে সবুজ জোনে স্থান পাবে৷