গুয়াহাটি, ১৫ এপ্রিল (হি.স) : সারা বিশ্বে মহামারি নোভেল করোনা ভাইরাসের প্ৰকোপ ঠেকাতে চলছে লকডাউন। লকডাউনের আবহে ঘরে আবদ্ধ থেকেই পয়লা বৈশাখ, বিহু তথা নববৰ্ষ পালন করেছেন বাঙালি অসমিয়ারা। তার পরের দিন দুসরা বৈশাখ বুধবার দুপুরে উত্তর গুয়াহাটির টিলিংগাঁও এবং ভরলুর মধ্যবর্তী স্থানে দুটি নৌকাডুবি হয়েছে বলে জানা গেছে। নৌকা দুটিতে চারজন জেলে ছিলেন। ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে নৌকা দুটি জলে ডুবে গেছে বলে প্ৰত্যক্ষদৰ্শীরা জানিয়েছেন। খবর পেয়ে এনডিআরএফ-এর দল পৌঁছে উদ্ধারে নামে। এই খবর লেখা পর্যন্ত তাদের সন্ধান পাওয়া যায়নি।
এদিকে প্ৰচণ্ড ধুলো ও ঘূর্ণিঝড়ের প্রকোপে পড়ে গুয়াহাটি-সহ রাজ্যের প্রায় প্রতিটি প্রান্ত। আচমকা ধুলো ও ঘূর্ণিঝড়ের হামলায় মুহূৰ্তের মধ্যে জনজীবন স্তব্ধ হয়ে যায়। ঝড়ের পর ছিটেফোটা বৃষ্টিও হয়েছে। গুয়াহাটির আগে বরপেটাকে তছনছ করেছে ঘূর্ণিঝড়। পরবর্তীতে গুয়াহাটি হয়ে ঘণ্টাখানেকের মধ্যে নগাঁও, হোজাই, দরং, কলাইগাঁও, বরাক উপত্যকার কাছাড়, হাইলাকান্দি, করিমগঞ্জের রামকৃষ্ণনগর, পাথারকান্দি ইত্যাদি অঞ্চলে ঝড়ে ঘরবাড়ির বিস্তর ক্ষতি হয়েছে।
এদিকে বকোর পানিখাইতি এলাকায় ব্ৰহ্মপুত্ৰের বুকে একটি শিশু পড়ে গিয়েছে বলে খবর পেয়ে নদের বুকে গিয়ে ঝড়ের মধ্যে বিপদে পড়ে এনডিআরএফ-এর একটি দল। কোনও রকম নিজেদের সামলে নদের তীরে ফিরে আসে দলটি।
আজকের প্ৰবল ঝড়ে রাজ্যের বিভিন্ন জায়গায় রাস্তাঘাট বেশ কিছুক্ষণের জন্য অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে। ঘূর্ণিঝড়ে বিভিন্ন জায়গায় গাছগাছালি উপরে গেছে। রাস্তার ধারে দোকানপাটের সাইনবোৰ্ড, হোর্ডিং সমস্ত উড়ে গেছে। বিভিন্ন এলাকায় বিদ্যুৎ পরিবাহী তারের ওপর গাছ কিংবা গাছের পড়েছে। বহু জায়গায় বিদ্যুতের খুঁটিও উপড়ে পড়েছে। ফলে রাজ্যের বহু অঞ্চল বিদ্যুৎ বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ে।
গুয়াহাটি জু-রোড, বেলতলা, মালিগাঁও, নুনমাটি, নারাঙ্গি ইত্যাদি এলাকা এবং মহানগরের পার্শ্ববর্তী চন্দ্ৰপুর, খানাপাড়া, গড়চুক, গাড়িগাঁও, লংকেশ্বর, ছয়গাঁও, গরৈমারি, সোনতলি প্রভৃতি এলাকায় ঝড়ে বিস্তর ক্ষতি হয়েছে। জু রোড এলাকায় রাস্তার ধারে ভরলু নদীর পারে গাছ ভেঙে পড়ে। ফ্যান্সিবাজারে পুরনো জেলের দেওয়ালের একাংশ খসে পড়েছে বলে জানা গেছে। এছাড়া নুনমাটি নারাঙ্গির জনবসতিপূৰ্ণ এলাকায় ঘরে টিনের চাল উড়ে গেছে। লকডাউনের ফলে রাস্তাঘাটে গাড়িঘোড়া চলাচল বন্ধ ছিল, বাইরে লোকজনও কম। তাই ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ অনেকাংশে কম হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। আজকের ঘূর্ণিঝড়ে নৌকাডুবি ছাড়া অন্য হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।