আইজল (মিজোরাম), ৯ এপ্রিল (হি.স.) : মহামারি করোনা ভাইরাসের প্ৰকোপ ঠেকাতে দেশজুড়ে লকডাউনের আজ ১৬ দিন। ফলে দেশের বিভিন্ন প্ৰান্তে সমস্যায় পড়েছেন বহু রাজ্যের নাগরিককুল। এভাবে মিজোরামের প্ৰায় ৪০০-এর বেশি নাগরিক দেশের বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়েছেন। করোনা ভাইরাসের সংক্ৰমণ যাতে না ছড়ায় তাই সারা দেশে বন্ধ করা হয়েছে ট্ৰেন, বাস, বিমান সমেত সমস্ত ধরনের গণপরিবহণ পরিষেবা। ফলে চরম দুৰ্দশার মধ্যে দিন কাটছে মিজোরামের আটকে পড়া মানুষগুলোর। বিষয়টি নিয়ে উদ্বিগ্ন মিজোরামের একমাত্ৰ সাংসদ সি লালরোসাঙ্গা।
এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় সাংসদ লালরোসাঙ্গা বলেন, ‘বিষয়টি নিয়ে মিজোরাম সরকার এখনও কোনও সিদ্ধান্ত নেয়নি। আটকে পড়া মানুষগুলো এমনই নানা কারণে চাপের মধ্যে রয়েছেন, যে যেখানে আছেন সেখানে গৃহবন্দি তাঁরা। লকডাউনের সমসয়সীমা বাড়ানো হলে, স্বাভাবিকভাবে আরও অসুবিধায় পড়বেন। বেশিরভাগ মানুষ বিভিন্ন জায়গায় ভাড়াঘরে রয়েছেন। ভাড়াঘরগুলির মালিক পক্ষ ভাড়া মিটিয়ে দিতে তাঁদের ওপর চাপ দিচ্ছেন। এমতাবস্থায় এই মানুষগুলোর হাতে অত্যাবশ্যক খাদ্য সামগ্ৰী কেনারও টাকা নেই। তাঁরা উপায় খুঁজছেন, কবে স্বগৃহে ফিরতে পারেন।’
সাংসদ আরও জানান, উত্তর-পূৰ্বাঞ্চল থেকে যাঁরা অন্য রাজ্যে যান, সে সব জায়গায় তাঁদের নানাভাবে হেনস্তার শিকার হতে হচ্ছে। বাড়ি ফেরার জন্য সকলেই উদ্রিাঞব। সাহায্যের আশা নিয়ে তাঁর সঙ্গে এঁরা সমানে যোগাযোগ করে চলেছে, জানান সাংসদ লালরোসাঙ্গা। তিনি জানান, বিভিন্ন রাজ্যে আটকে পড়াদের মধ্যে বেশিরভাগই পড়ুয়া, বেসরকারি কোম্পানিতে চাকরিরত, রোগী এবং সংশ্লিষ্টদের আত্মীয়স্বজন।
এদিকে, অন্য এক সূত্রে জানা গেছে, বুধবার মিজোরাম সরকার রাজ্যের বিভিন্ন প্রান্ত আটক মানুষজনকে তাঁদের গৃহগ্রামের বাড়িতে ফিরে আসার ব্যাপারে সম্মতি দিতে সিদ্ধান্ত নিয়েছে। বিষয়টি নিয়ে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্ৰী জোরামথাঙ্গার উদ্যোগে মুখ্যসচিব লালনুনমাওইয়ার পৌরোহিত্যে আইজল সিটি লোকাল কাউন্সিল অ্যাসোসিয়েশন, অল মিজোরাম ভিলেজ কাউন্সিল অ্যাসোসিয়েশন এবং মিজোরামের সামাজিক সংগঠন কো-অৰ্ডিনেশন কমিটির এক বৈঠক হয়। বৈঠকে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, লকডাউনের দরুন মিজোরামের যে সব অঞ্চলে বিভিন্ন প্রান্তের মানুষ আটকে পড়েছেন বৃহস্পতিবার থেকে তাঁদের নিজস্ব বসতবাড়িতে ঢুকতে দেওয়া হবে। তবে এর জন্য সংশ্লিষ্ট এলাকায় স্থানীয়ভাবে গঠিত করা হয়েছে ভিলেজ টাস্কফোর্স। এই টাস্কফোর্স অনুমোদন দিলেই আটক মানুষজন তাঁদের গ্রামের প্রবেশ করতে পারবেন।
উল্লেখ্য, মিজোরামের জোরাম মেডিক্যাল কলেজে (জেডএমসি)-তে করোনা ভাইরাসে আক্ৰান্ত ব্যক্তির লালা রসের নমুনা নিয়মিত পরীক্ষা করা হচ্ছে। করোনা আক্ৰান্ত ওই রোগীর সংস্পৰ্শে যে সকল ডাক্তার, নাৰ্স এবং স্বাস্থ্য কৰ্মী এসেছেন তাঁদের নমুনাও ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করা হয়েছে। কারোর মধ্যে কোনও সংক্রমণ ধরা পড়েনি।