নয়াদিল্লি, ৭ এপ্রিল (হি.স.) : করোনা মোকাবিলায় খরচে লাগাম টানা সহ একগুচ্ছ পরামর্শ দিলেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি সোনিয়া গান্ধী ।মঙ্গলবার চিঠি লিখে তিনি আর্জি জানান, বিজ্ঞাপন বাবদ খরচে রাশ টানুক কেন্দ্র সরকার । সেই সঙ্গে নতুন সংসদভবন নির্মাণ-সহ সংসদভবনকে ঘিরে কেন্দ্রীয় সরকারের একাধিক সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পও আপাতত বন্ধ রাখার প্রস্তাব দিয়েছেন তিনি।সমস্ত সাংসদের বেতনের ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়ার সিদ্ধান্ত সমর্থন করে আরও বেশ কিছু পদক্ষেপ করতে হবে বলে আবেদন করেছেন সোনিয়া গান্ধী ।
করোনায় মোকাবিলায় কী কী করা যেতে পারে, তা নিয়ে রবিবারই বিরোধী নেতাদের ফোন করে পরামর্শ চেয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। তার জবাবেই এ দিন তাঁকে চিঠি লেখেন কংগ্রেসের অন্তর্বর্তিকালীন সভাপতি । তাতে কেন্দ্রীয় সরকারকে পাঁচটি পরামর্শ দেন তিনি।
নতুন সংসদভবন নির্মাণ এবং সংসদ চত্বরের সৌন্দর্যায়ন প্রকল্পে ২০ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। বর্তমান পরিস্থিতিতে তা-ও বন্ধ রাখার কথা বলেন কংগ্রেস নেত্রী। তাঁর কথায়, ‘‘আমি নিশ্চিত, এখন যে ঐতিহাসিক ভবনগুলি রয়েছে, সেখানেই সংসদের কাজ দিব্যি চলতে পারে। এমন কোনও তাড়া নেই যে এই সঙ্কট কেটে না যাওয়া পর্যন্ত অপেক্ষা করা যাবে না। ওই টাকায় বরং নতুন হাসপাতাল পরিকাঠামো তৈরি, ডায়গনস্টিক সেন্টার নির্মাণ, সেই সঙ্গে যাঁরা সামনে থেকে করোনার সঙ্গে লড়াই করছেন তাঁদের নিরাপত্তার সরঞ্জাম এবং অন্যান্য সুযোগ-সুবিধার ব্যবস্থা করা যেতে পারে।’’
সাংসদদের বেতনের ৩০ শতাংশ কেটে নেওয়ায় সমর্থন জানালেও, বাজেটের মোট ব্যয় বরাদ্দও ৩০ শতাংশ কমানো হলে ভাল হত বলে জানান সোনিয়া। এতে বছরে আড়াই লক্ষ কোটি টাকা বাঁচবে এবং সেই টাকায় পরিযায়ী শ্রমিক, সাধারণ শ্রমিক, কৃষক এবং মাঝারি, ছোট এবং ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের আর্থিক নিরাপত্তা দেওয়া সম্ভব হবে।
একই ভাবে খরচ বাঁচাতে প্রধানমন্ত্রী, সমস্ত কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, সব রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী ও মন্ত্রী এবং আমলাদের বিদেশ যাত্রাও আপাতত স্থগিত রাখতে হবে বলে জানান তিনি । দেশের স্বার্থে এবং জরুরি প্রয়োজনে প্রধানমন্ত্রী অনুমতি নিয়ে তবেই বিদেশ যাওয়া যাবে বলে জানান তিনি।
এদিকে, প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল থাকা সত্ত্বেও করোনার মোকাবিলায় সম্প্রতি ‘পিএম কেয়ারস’ তহবিল গড়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই ‘পিএম কেয়ারস’ তহবিলে জমা পড়া প্রধানমন্ত্রী ত্রাণ তহবিলে সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার পক্ষে সওয়াল করেছেন সনিয়া। তাঁর যুক্তি, এতে কোথায় কত টাকা খরচ হচ্ছে তার হিসাব থাকবে। গোটা প্রক্রিয়াটা আরও স্বচ্ছ হবে এবং বিশ্বাসযোগ্যতাও বাড়বে। খামোকা দু’টো আলাদা তহবিল গড়া হয়েছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি। সোনিয়া বলেন, ব্যবহার না হওয়ায় প্রধানমন্ত্রী জাতীয় তহবিলে ৩ হাজার ৮০০ কোটি টাকা পড়ে রয়েছে। তার সঙ্গে ‘পিএম কেয়ারস’ তহবিলের টাকা যোগ হলে প্রান্তিক মানুষের খাদ্যসঙ্কট দূর করা যাবে।