ঢাকা, ৭ এপ্রিল (হি.স.) : অবশেষে দীর্ঘ ৪৫ বছর পর গ্রেফতার বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে খুনের ঘটনায় মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত পলাতক আসামি ক্যাপ্টেন (বরখাস্ত) আবদুল মাজেদ । জানা গেছে বাংলাদেশি বরখাস্ত এই সেনা অফিসার ২০ বছরের বেশি সময় লুকিয়ে ছিল কলকাতায়। ভারতের বিভিন্ন এলাকায় আবদুল মাজেদ নিজেকে ‘আবদুল মজিদ’পরিচয় দিয়ে অবস্থান করেছেন প্রায় ২৫ বছর। কিন্তু শেষ পর্যন্ত করোনাভাইরাস আতঙ্কে বাংলাদেশে ফিরে গ্রেফতার হয়েছেন সেই আবদুল মাজেদ। তাঁর বিরুদ্ধে ইন্টারপোলের রেড নোটিশও জারি রয়েছে।
জানা গেছে বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে, নব্বই দশকের মাঝামাঝি সময়ে আবদুল মাজেদ প্রথমে বাংলাদেশ থেকে ভারতে পালিয়ে যান বলে জানা গিয়েছে, ভারত থেকে পালিয়ে তিনি প্রথমে যান লিবিয়ায়। সেখান থেকে পাকিস্তান। লিবিয়া ও পাকিস্তানে সুবিধা করতে না পেরে আবারও ভারতে ফিরে আসেন। বিভিন্ন রাজ্যে ঘুরে কলকাতায় অবস্থান করছিলেন তিনি। করোনাভাইরাস আতঙ্কে গত ২৬ মার্চ ভারত বাংলাদেশের ময়মনসিংহ জেলার সীমান্ত দিয়ে অবৈধভাবে বাংলাদেশে ঢুকেছিলেন মাজেদ– এই তথ্যের সূত্রে ঢাকার মিরপুর থেকে তাঁকে গ্রেফতার করেছে বাংলাদেশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট। মাজেদ শুধু বঙ্গবন্ধুর হত্যাকাণ্ডেই অংশগ্রহণ করেননি– ১৯৭৫ সালের ৩ নভেম্বর ঢাকার কারাগারে বঙ্গবন্ধুর বিশ্বস্ত জাতীয় চার নেতার হত্যাতেও অংশ নিয়েছিলেন।
মঙ্গলবার দুপুরে আবদুল মাজেদকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দিয়েছে ঢাকার সিএমএম আদালত। পুলিশ মাজেদকে আদালতে তোলে। তাঁর সঙ্গে কথা বলে সরকারি কৌঁসুলি হেমায়েত উদ্দিন খান জানান, বঙ্গবন্ধুকে হত্যা করার পর এত দিন আপনি কোথায় ছিলেন জানতে চাইলে, খুনি মাজেদ বলেন, ২২-২৩ বছর তিনি কলকাতায় অবস্থান করেন। সেখান থেকে চলতি বছরের মার্চের মাঝামাঝি সময়ে বাংলাদেশে এসেছেন তিনি। এরপর তিনি ঢাকায় অবস্থান করছিলেন।”
সিটিটিসির উপ-কমিশনার মো. সাইফুল ইসলাম সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, ”গোপন তথ্যের ভিত্তিতে আমরা জানতে পারি, আবদুল মাজেদ বাংলাদেশে প্রবেশ করেছেন। আমাদের গোয়েন্দা নজরদারির মাধ্যমে অবস্থান নিশ্চিত হওয়ার পর তাঁকে আটক করা হয়।”
বাংলাদেশের প্রাক্তন আইনমন্ত্রী শফিক আহমেদ সংবাদমাধ্যমের কাছে বলেছেন, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের খুনি মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি আবদুল মাজেদের ফাঁসি থেকে বাঁচতে রাষ্ট্রপতির কাছে প্রাণভিক্ষা ছাড়া আর কোনও পথ খোলা নেই।