নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ২ এপ্রিল৷৷ দিল্লির নিজামউদ্দিন থেকে রাজ্যে যারা এসেছেন তাদের মধ্যে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ পাওয়া যায়নি৷ সেখান থেকে আসা ২৬ জন, সঙ্গে সহযাত্রী ও পারিপাশর্িক মিলিয়ে মোট ৭২ জনের পরীক্ষা করা হয়েছে৷ তাদের মধ্যে কেউ সংক্রমিত নন৷ আজ এক ভিডিও বার্তায় এ কথা বলেন মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব৷ তিনি বলেন প্রত্যেকের দুই দিন বাদেই পুনরায় পরীক্ষা করা হবে৷ বিষয়টি পুরোপুরি নিশ্চিত হওয়ার জন্যই এই সিদ্ধান্ত৷
পাশাপাশি আসামের সঙ্গে যে সীমান্ত রয়েছে তা পুরোপুরি সিল করে দেয়া হয়েছে বলে জানান মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন যেহেতু রাজ্যের পার্শবর্তী জেলা করিমগঞ্জে কোভিড-১৯ এর সংক্রমণ রয়েছে, তাই সেখান থেকে মানুষ আসতে চাইবে৷ এই সুবিধা যাতে একেবারেই না থাকে, সেজন্য কড়াকড়িভাবে সীমান্ত বন্ধ করে রাখা হয়েছে৷ শুধুমাত্র পণ্যবাহী গাড়ি ছাড়া অন্য কিছুই আসবে না৷ তাও পণ্যবাহী গাড়িগুলোকে পুরোপুরি যাচাই করেই ঢুকতে দেয়া হবে৷ মুখ্যমন্ত্রী বলেন, যারা নিয়ম মানবে না তাদের বিরুদ্ধে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে৷
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এদিন হিন্দু, মুসলিম, খৃষ্টান, জৈন সহ সব ধরনের ধর্মীয় গুরুদের প্রতি আহ্বান জানান যে, তারা যেন নিজস্ব অনুগামীদের প্রতি সংক্রমণ এর বিরুদ্ধে সচেতনতা মূলক বার্তা দেন৷ সোশ্যাল মিডিয়াকে ব্যবহার করে এর ব্যাপক সাড়া পাওয়া যাবে বলে আশা প্রকাশ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷
এদিন মুখ্যমন্ত্রী রাজ্যবাসীর উদ্দেশ্যে আহ্বান রাখেন, তারা যেন লকডাউন শেষ হবার পর সরকারের কি করনীয় থাকবে, এ বিষয়ে নিজের মতো করে মতামত প্রদান করেন৷ এর মধ্য থেকে ১০০ টি গুরুত্বপূর্ণ মতামত গ্রহণ করে রাজ্যের উন্নয়নে কাজে লাগানো হবে৷ সিএমওতে মেইল করে বা বিভিন্ন সরকারি আধিকারিকদের মাধ্যমেও রাজ্যবাসী মতামত তুলে ধরতে পারবেন বলে উল্লেখ করেন মুখ্যমন্ত্রী৷ এর মাধ্যমে আগামী দিনে কিভাবে রাজ্য লোকসান থেকে বেরিয়ে আসবে, সেই দিশা পাবে বলে আশা প্রকাশ করেন তিনি৷
এদিন প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীর করা ভিডিও কনফারেন্সের প্রসঙ্গ উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে দল মত নির্বিশেষে সবাই একই সুরে কথা বলছে৷ দেশকে রক্ষা করাই বর্তমান সময়ের প্রাথমিকতা৷ গোটা দেশ যেভাবে করোনা প্রতিরোধ করে চলেছে, এর জন্য তিনি প্রধানমন্ত্রীর উদ্যোগের প্রশংসা করেন৷
এছাড়াও ত্রিপুরা সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্ত সম্পর্কে বলতে গিয়ে মুখ্যমন্ত্রী বলেন যে, আগামী দেড় থেকে দুই মাস পর্যন্ত বিভিন্ন বাজারে যাতে জীবনদায়ী ওষুধ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকে সে বিষয়ে সরকার ব্যবস্থা গ্রহণ করবে৷ পাশাপাশি গ্রামাঞ্চলে যেসব টিউবওয়েলগুলি খারাপ রয়েছে, তা আগামী ৪ তারিখের মধ্যেই সারাই করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷এছাড়া শাকসবজি বাজারজাত করার ক্ষেত্রে কৃষকদের যাতে কোন লোকসানের সম্মুখীন হতে না হয়, সে ব্যাপারে দপ্তরকে নজর রাখার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে৷
মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব বলেন যে এই সময়ের মধ্যে মানুষের জীবন শৈলীতে দারুন পরিবর্তন লক্ষ্য করা যাচ্ছে৷ আগে যেখানে জিবি হাসপাতালে প্রতিদিন দেড় হাজারের মতো লোক আসতো, এখন তা কমে দাঁড়িয়েছে ৫০০ তে৷ কারণ সবাই নিজের জায়গায় থেকে কিভাবে নিজেকে সুস্থ্য রাখতে পারবে সেই কৌশল রপ্ত করতে পারছে৷ এদিন তিনি সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার পাশাপাশি রাজ্যকে করোনা মুক্ত রাখার লড়াইয়ে সবাইকে বাড়িতে থেকেই সরকারকে সাহায্য করার জন্য ফের আহবান রাখেন৷