BRAKING NEWS

করোনা মোকাবিলায় ২৩৩ কোটি টাকার প্যাকেজ সহ গুচ্ছ সিদ্ধান্ত রাজ্য মন্ত্রিসভার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ মার্চ৷৷ ত্রিপুরা সরকার করোনা ভাইরাস সংক্রমণজনিত উদ্ভূত পরিস্থিতি মোকাবিলায় ২৩৩ কোটি টাকার একটি প্যাকেজ নিয়েছে৷ আজ মন্ত্রিসভা ওই প্যাকেজের অনুমোদন দিয়েছে৷ এছাড়াও মন্ত্রিসভার বৈঠকে করোনা ভাইরাস সংক্রমণজনিত সমস্যা মোকাবিলায় একগুচ্ছ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ মঙ্গলবার রাতে সাংবাদিক সম্মেলনে সরকারি এই সিদ্ধান্তের কথা জানান শিক্ষামন্ত্রী রতনলাল নাথ, খাদ্যমন্ত্রী মনোজকান্তি দেব এবং স্বাস্থ্য ও খাদ্যসচিব ডা. দেবাশিস বসু৷
মন্ত্রিসভায় গৃহীত সিদ্ধান্তের মধ্যে রয়েছে অন্ত্যোদয় অন্নযোজনা, প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড কার্ডধারী ৫ লক্ষ ৭৯ হাজার পরিবারকে আগামী ১ মাসের জন্য বিনামূল্যে চাল সরবরাহ করা হবে৷ এর মধ্যে ১ লক্ষ ৯ হাজার পরিবার অন্ত্যোদয় অন্নপূর্ণা যোজনায় এবং প্রায়োরিটি হাউসহোল্ড পরিবার রয়েছে ৪ লক্ষ ৭০ হাজার৷ এছাড়াও এপিএল কার্ডধারীদের মধ্যে যাঁরা গরিব এ রকম ৫০ হাজার পরিবারকেও আগামী ১ মাসের চাল বিনামূল্যে দেওয়া হবে৷ যদি কেউ আগামী মাসের (এপ্রিল) চাল অগ্রিম তুলে নেয় তবে তাদের ক্ষেত্রে সেই টাকা ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে দিয়ে দেওয়া হবে৷ শিক্ষামন্ত্রী জানান, আপার প্রাইমারি সুকলের প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীকে ৩ কেজি ৭৫ গ্রাম করে চাল দেওয়া হবে৷ এর জন্য ব্যয় হবে ৩৪ লক্ষ ৫০ হাজার টাকা৷ প্রাইমারি সুকলের ছাত্রছাত্রীরা পাবে ২ কেজি ৫০ গ্রাম চাল এবং এর জন্য ব্যয় হবে ২ লক্ষ ৬৬ হাজার টাকা৷


এদিন শিক্ষামন্ত্রী জানান, সমস্ত সামাজিক ভাতা প্রাপকরা দু’মাসের পেনশন একসাথে পাবেন৷ অর্থাৎ এপ্রিল-মে মাসের পেনশন তাঁদের ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্টে সরাসরি ঢুকে যাবে এপ্রিল মাসের প্রথম সপ্তাহে৷ এতে উপকৃত হবেন প্রায় ৪ লক্ষ সামাজিক ভাতা প্রাপক৷ এর জন্য খরচ হবে ৭৫ কোটি টাকা৷ তিনি আরও জানান, এই পরিস্থিতিতে ক্ষতিগ্রস্ত সমস্ত রেগা কার্ডধারী পরিবারের মধ্যে ১০ দিনের কাজ দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷ এই সুবিধা ৬ লক্ষ ২৯ হাজার জবকার্ডধারী সবাইকে দেওয়া হবে৷ এতে মোট ১২০ কোটি টাকা ব্যয় হবে৷ এদিকে, বাড়ি ও অন্যান্য নির্মাণ কাজে যুক্ত স্বীকৃত নির্মাণ শ্রমিকদের প্রতি মাসে ১,০০০ টাকা করে আর্থিক সাহায্য করা হবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, তিনমাস এই সহায়তা প্রদান করা হবে এবং এতে ৪০ হাজার নির্মাণ শ্রমিক উপকৃত হবেন৷ এর জন্য ব্যয় হবে ১২ কোটি টাকা৷


সাংবাদিক সম্মেলনে আরও জানানো হয়, শহর এলাকায় ভবঘুরে এবং গৃহহীনদের এতদিন রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হয়েছে৷ বর্তমানে এর পরিবর্তে চাল, ডিম, সবজি, মশলা-সহ ৭ দিনের খাবার একসঙ্গে বিতরণ করা হবে৷ তাতে ১৫০০ সুবিধাভোগী উপকৃত হবেন৷
শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, দিল্লি, কলকাতা ও গুয়াহাটির ত্রিপুরা ভবনে অবস্থানরত আবাসিকদের ঘর এবং প্রত্যেকদিনের খাবার ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে বহন করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে৷ ত্রিপুরা ভবন ছাড়াও আরও ৪২২টি পরিবার বিভিন্ন রাজ্যে অবস্থানরত রয়েছেন৷ তাদেরকে প্রয়োজনীয় সহযোগিতা করার জন্য সংশ্লিষ্ট রাজ্যগুলির মুখ্যসচিবের সাথে কথা বলা হয়েছে৷ যদি সেই সব রাজ্য প্রয়োজনীয় সহযোগিতা প্রদান না করে থাকে তবে রাজ্য সরকারের পক্ষ থেকে তাদের অ্যাকাউন্টে সরাসরি টাকা প্রদান করা হবে বলে শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছেন৷


শিক্ষামন্ত্রী আরও জানান, রাজ্যের ৫৪টি চা বাগান এবং ২৩৫টি ইটভাট্টায় কর্মরত শ্রমিকদের রেশন সামগ্রী প্রদান করার জন্য বাগান মালিক এবং ইটভাট্টা মালিকদের বলা হয়েছে৷ চা বাগানগুলিতে সামাজিক দূরত্ব বজায় রেখে কাজ চালু করার জন্যও সরকারের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে৷
আজ রাজ্য মন্ত্রিসভার বৈঠকে বিধায়ক উন্নয়ন তহবিল থেকে টাকা খরচ করার পদ্ধতির বিষয়ে কিছুটা সংশোধন আনা হয়েছে৷ বিধানসভার সদস্যগণ বিধায়ক এলাকা উন্নয়ন তহবিল থেকে ২০২০-২১ অর্থবছরের জন্য করোনা ভাইরাস সংক্রমণ মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় যন্ত্রপাতি কেনার জন্য সবর্োচ্চ এককালীন ১০ লক্ষ টাকা খরচ করতে পারবেন৷ নতুবা প্রধানমন্ত্রী জাতীয় ত্রাণ তহবিল, পি এম কেয়ার এবং মুখ্যমন্ত্রীর ত্রাণ তহবিলে ১০ লক্ষ টাকা দান করতে পারবেন বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *