BRAKING NEWS

করোনা : রাজ্যবাসীকে সতর্ক করে অভয় দিলেন মুখ্যমন্ত্রী, ভিডিও বার্তায় জানালেন, পাশে আছে সরকার

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩১ মার্চ৷৷ করোনা ভাইরাস-কে সকলে মিলে মোকাবিলা করতে হবে৷ একা সরকারের পক্ষে ওই ভাইরাস-কে প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে না৷ তাই, সকলের সম্মিলিত প্রয়াস এবং মাতা ত্রিপুরাসুন্দরীর আশীর্বাদে আমরা করোনা ভাইরাসের বিরুদ্ধে যুদ্ধে জয়ী হবই৷ মঙ্গলবার রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী বিপ্লব কুমার দেব এক ভিডিও বার্তায় সকলকে এভাবেই অভয় দিলেন৷ সাথে জানালেন, সমগ্র ত্রিপুরাবাসীর কাছে সমস্ত সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দিতে লাগাতার প্রয়াস জারি রেখেছে সরকার৷
আজ তিনি বলেন, এডিসি-র মধ্যে স্পেশাল ড্রাইভ দেওয়ার জন্য রাজ্য সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ তাছাড়া, রেশন সামগ্রী বিভিন্ন জায়গায় ইপিডিএস সিস্টেমের মাধ্যমে পৌঁছে দেওয়া হচ্ছে৷ ওই কাজ আরও সূচারুভাবে কীভাবে করা যেতে পারে সে বিষয়ে এডিসি প্রশাসনের প্রধানদের সাথে ত্রিপুরার মুখ্য সচিবের বৈঠক হয়েছে এবং সরকার সেই দিশায় নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে৷


মুখ্যমন্ত্রী ত্রিপুরার সমস্ত প্রবীণ নাগরিকদের কাছে আবেদন রাখেন, আপনাদের যে কোনও রকম দৈনন্দিন বা মাসিক ওষুধের প্রয়োজন হলে ১১২ নম্বরে ফোন করুন৷ ওষুধ আপনার ঘরে পৌঁছে যাবে৷ সাথে তিনি বলেন, বিভিন্ন মুদি দোকানের ফোন নম্বর লিফলেটের মাধ্যমে বিলি করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ত্রিপুরা সরকার৷ এতে ঘরে বসেই জিনিস আনতে পারবেন৷
মুখ্যমন্ত্রী বলেন, ত্রিপুরায় বিভিন্ন ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে কিছু কিছু ভক্তরা আটকে গেছেন৷ আজ ত্রিপুরা সরকার সিদ্ধান্ত নিয়েছে, রাজ্যের যে কোনও প্রান্তে, যে কোনও ধর্মের মানুষ যে সব ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে আটকে পড়েছেন, সেই ভক্তদের বাস্তবিক পরিস্থিতি অনুমান করে সেখানে বিনামূল্যে রেশনিং ব্যবস্থা চালু করা হবে৷


মুখ্যমন্ত্রীর কথায়, ত্রিপুরা সরকার ১৫ দিনের জন্য ইপিডিএস সিস্টেমের আওতায় আসা অন্ত্যোদয় এবং প্রায়োরিটি হাউসহোল্ডারদের বিনামূল্যে রেশন সামগ্রী দেওয়ার ঘোষণা করেছিল৷ কিন্তু অনেকেই এক মাসের খাদ্য সামগ্রী তুলে নেওয়ার ফলে তাদের প্রতি কিলো দুই টাকা করে দিতে হয়েছে৷ তাই, ত্রিপুরা সরকার তাদের ওই অর্থরাশি প্রত্যেকের ব্যাংক অ্যাকাউন্টে ফিরিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷ পাশাপাশি ৫০ হাজার এপিএল গরিব পরিবারকেও বিনামুল্যে ১ মাসের খাদ্য সামগ্রী দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার৷


তিনি জানান, নিত্য প্রয়োজনীয় জিনিসপত্র জনগণের দোরগোড়ায় পৌঁছে দিতে আজকে আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷ এনএসএস-এর ভাই-বোন, বিভিন্ন স্বেচ্ছাসেবক ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের সদস্যদের নিয়ে সরকার কাজ করবে৷ তিনি প্রশংসা করে বলেন, আজ আমার খুব ভালো লেগেছে যে রাজধানীর কিছু ক্লাব ঐক্যবদ্ধ হয়ে এই কাজে তাদের স্বেচ্ছাসেবকদের নিয়োজিত করবে বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছে৷
তিনি জানান, বহিঃরাজ্যের বিভিন্ন ত্রিপুরা ভবনে যাঁরা আটকে পড়েছেন, তাঁদের থাকা খাওয়ার ব্যবস্থা করেছে সরকার৷ এছাড়াও বিভিন্ন রাজ্যে যাঁরা রয়েছেন তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করে তাঁদের অ্যাকাউন্টে টাকা পাঠানোর ব্যবস্থা হচ্ছে৷


মুখ্যমন্ত্রী বিশ্বাস করেন, মাতা ত্রিপুরাসুন্দরী মায়ের ভূমিতে করোনা ভাইরাস আক্রমণ করতে পারবে না৷ তবে, এ জন্য চাই সচেতনতা৷ তাঁর আবেদন, সবাই ঘরে থাকুন, সুরক্ষিত থাকুন৷
তাঁর আশা, সমস্ত ত্রিপুরাবাসী সরকারের বিভিন্ন সিদ্ধান্তগুলিকে প্রয়োগ করতে সহযোগিতা করবে৷ এপিএলদের মধ্যে যাঁরা গরিব, তাঁদের বের করতে সকলের সহযোগিতা চেয়েছেন তিনি৷ সাথে আবারও তিনি সকলকে সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখতে অনুরোধ জানিয়েছেন৷ তিনি বলেন, সারা রাজ্যে বড় বড় বাজারগুলিকে খোলা জায়গায় স্থানান্তরিত করা হয়েছে৷ তাই এক পরিবার থেকে একজন একটি নির্দিষ্ট সময়ে বাজারে গিয়ে শাক-সবজি ক্রয় করবেন৷ পাশাপাশি আপনার দোরগোড়ায় বাজার পৌঁছে দেওয়ার ব্যবস্থা রয়েছেই, বলেন তিনি৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *