BRAKING NEWS

করোনা মোকাবিলায় আগামী ২১ দিন গোটা দেশে জারি লকডাউন : প্রধানমন্ত্রী

নয়াদিল্লি, ২৪ মার্চ (হি. স) : করোনা প্রতিরোধে অবশেষে চরম সিদ্ধান্ত নিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। মঙ্গলবার রাতে জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে সারা ভারতজুড়ে ২১ দিনের জন্য লকদাউন এর কথা ঘোষণা করলেন তিনি।

এদিন রাত বারোটা লকডাউন জারি করা হবে। করোনা ভাইরাসকে প্রতিহত করতে সোশ্যাল ডিসটেন্স বা সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখাই যে একমাত্র উপায় দেশবাসীর উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে তা স্পষ্ট জানিয়ে দেন তিনি।

করোনা মোকাবিলার লক্ষ্যে ১৫ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ করেছে কেন্দ্রীয় সরকার। এই টাকা দিয়ে ঢেলে সাজানো হবে দেশের স্বাস্থ্য পরিকাঠামো। তৈরি করা হবে বাড়তি আইসিইউ।  হাসপাতলে বেডের সংখ্যা বাড়ানো হবে। কেনা হবে ভেন্টিলেটর। চিকিৎসকদের জন্য প্রটেক্টিভ কিট, দস্তানা, মাক্স কেনা হবে। পাশাপাশি চিকিৎসা কর্মী ও প্যারামেডিকেল এর সঙ্গে যুক্ত কর্মীদের দ্রুততার সঙ্গে প্রশিক্ষণও দেওয়া হবে। প্যাথলজিক্যাল টেস্ট করাতে যে সমস্ত সরঞ্জামের প্রয়োজন সেই সমস্ত বাড়তি সরঞ্জাম দ্রুততার সঙ্গে কেনা হবে।

ইতালি, ফ্রান্স, স্পেন, আমেরিকা উদাহরণ তুলে ধরে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই সকল দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থা খুবই উন্নত ও শক্তিশালী কিন্তু তা সত্ত্বেও করোনা সামনে এই সকল দেশ চূড়ান্ত অসহায় হয়ে পড়েছে।
রাজ্য সরকারগুলির প্রসঙ্গ উল্লেখ করে তিনি বলেন, বিগত কয়েকদিন ধরে একাধিক রাজ্য নিজের মতন করে লকডাউন জারি করেছে। কিন্তু বর্তমান পরিস্থিতিতে করোনা মোকাবিলায় ১০০ শতাংশ লকডাউন এর প্রয়োজন। এই লকডাউনকে তিনি কারফিউ হিসেবে অভিহিত করেছেন।  

দেশবাসীর কাছে প্রধানমন্ত্রীর কাতর আবেদন আগামী ২১ দিন কোনও গাফিলতি করলে ২১ বছর গোটা দেশ পিছিয়ে যাবে। কোন মানুষের গাফিলতি জেরে একটা পুরো জাতি ধ্বংসের মুখে চলে যেতে পারে।
 কোরোনার ভয়াবহতার কথা ব্যক্ত করতে গিয়ে তিনি বলেন যে প্রথমে ৬৭ দিন লেগেছিল গোটা বিশ্বজুড়ে প্রথম এক লক্ষ মানুষের করোনায় আক্রান্ত হতে। পরবর্তী পর্যায়ে মাত্র ১১দিনে এই সেই সংখ্যাটা দু’লক্ষ স্পর্শ করে। দুই লক্ষ থেকে তিন লক্ষ স্পর্শ করতে লাগে মাত্র চারদিন। করোনা ভাইরাসের এই সংক্রমণকে ভাঙতেই এই গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছে। এই কদিন শুধু একটাই মাত্র কাজ করবে গোটা দেশবাসী তাহলে বাড়িতে থাকা।  বাড়িতে বসে দেশের স্বাস্থ্য ব্যবস্থার সঙ্গে যুক্ত চিকিৎসক, নার্স, ওয়ার্ড বয়, সাফাই কর্মীদের কথাই দেশবাসী ভাববে। পাশাপাশি যেসব পুলিশ কর্মী, নিরাপত্তারক্ষী, সাংবাদিক রাস্তায় দাঁড়িয়ে ঘটনাস্থলে থেকে নিজের জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাজ করে চলেছে তাদের কথা শ্রদ্ধার সঙ্গে স্মরণ করবে গোটা দেশ। কোনরকম কুসংস্কার, গুজবে কান না দিতে দেশবাসীর কাছে একান্তভাবে আবেদন করেছেন তিনি।

তিনি বলেছেন, চিকিৎসকের পরামর্শ ছাড়া কোনঅ ওষুধ সেবন করা যাবে না। এই লকডাউন যে গত ২২ মার্চ থেকে কয়েক কদম এগিয়ে। যে সকল দেশে একশো শতাংশ লকডাউন হয়েছিল সেই সকল দেশ এখন করোনা মুক্তির দিকে এগিয়ে চলেছে।

২২ মার্চ জনতা কার্ফু দেশবাসী যে সদর্থক ভূমিকা পালন করেছে তার প্রশংসা করে প্রধানমন্ত্রী বলেন যে দেশ এবং বিশ্বের সংকটে ভারতবাসী যে ভাবে যোগদান দিয়েছে, তা প্রশংসনীয়। এমন পরিস্থিতিতে দেশবাসীকে কেন্দ্র, রাজ্য সরকার এবং চিকিৎসকদের পরামর্শ মেনে চলতেই হবে।

গরিবদের কথা স্মরণ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, এই ২১ দিনে সব থেকে বেশি অসুবিধা হবে গরিবদের। কিন্তু গরিবদের সাহায্যার্থে সমাজের বিভিন্ন স্তরের মানুষ এগিয়ে এসেছে। বহু শিল্পপতি,বুদ্ধিজীবী গরিবদের সহায়তায় এগিয়ে এসেছে। ইতালি স্পেন থেকে শিক্ষা নিয়ে লকডাউন করাটাই যে একমাত্র উপায় তা বারে বারে নিজের ভাষণে তুলে ধরেছেন প্রধানমন্ত্রী।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *