হাফলং (অসম), ১৬ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : অসমের লামডিং-বদরপুর পাহাড় লাইনে রেল অবরোধ প্রত্যাহার করে নিয়েছে আন্দোলনকারী সংগঠন এনসি হিলস ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরাম। ছাত্র সংগঠনটি তাদের দীর্ঘদিনের ক্ষতিপূরণের দাবির ভিত্তিতে আগামীকাল ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে লামডিং-বদরপুর ব্রডগেজ রেলপথে অনির্দিষ্টকালের রেল অবরোধের ডাক দিয়েছিল। তবে রেল বোর্ডের পক্ষ থেকে সংগঠনটির ক্ষতিপূরণের অর্থ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নির্মাণ শাখার জেনারেল ম্যানেজারকে নির্দেশ দেওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম সোমবার থেকে প্রস্তাবিত তাদের অনির্দিষ্টকালের রেল অবরোধ থেকে সরে আসে।
উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নির্মাণ শাখার মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিক এইচ এস যাদব এক পত্র মারফত ডিমা হাসাওয়ের জেলাশাসক অমিতাভ রাজখোয়াকে জানিয়েছেন, লামডিং-বদরপুর ব্রডগেজ সম্প্রাসারণের কাজ করতে গিয়ে পাহাড়ে যে সব গ্রামের বাসিন্দাদের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে সব ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিতে ব্যবস্থা গ্রহণ করার জন্য নির্মাণ শাখার জেনারেল ম্যানেজারকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এরই পরিপ্রেক্ষিতে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের মুখ্য প্রশাসনিক আধিকারিক ডিমা হাসাওয়ের জেলাশাসককে জানিয়েছেন, চলতি আর্থিক বছরে ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়ার জন্য। পর্যাপ্ত তহবিল না থাকার জন্য আগামী ৩১ মার্চের পর নতুন অর্থ বছরে প্রয়োজনীয় টাকা বরাদ্দ করে পাহাড়ে ব্রডগেজের কাজ করতে গিয়ে যে সব গ্রামের জমি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সে সবের মালিকদের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দেওয়া হবে।
জেলাশাসক অমিতাভ রাজখোয়া ও উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেলের নির্মাণ শাখার পক্ষ থেকে এই আশ্বাস পাওয়ার পর এনসি হিলস ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস্ ফোরামের সভাপতি ডেভিড কেভম আগামীকাল ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে পাহাড়ে তাদের আহূত অনির্দিষ্টকালের রেল অবরোধ প্রত্যাহার করার কথা ঘোষণা করেছেন। তবে ডেভিড কেভম বলেন, উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ যদি তাদের প্রতিশ্রুতি পালনে আবারও ব্যর্থ হয় তা-হলে আগামী দিনে ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম পুনরায় আন্দোলনে নামতে বাধ্য হবে।
উল্লেখ্য, অসমের পাহাড় লাইনের লামডিং-বদরপুর রুটে ব্রডগেজ সম্প্রসারণের কাজ করতে গিয়ে নিউহাফলং থেকে নিউহারাঙ্গাজাও পর্যন্ত অংশে প্রায় ৫০টি গ্রামের কয়েকশো গ্রামবাসীর কৃষিজমি ও বাড়িঘর নষ্ট হয়েছিল। ফলে দীর্ঘদিন থেকে ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীরা তাদের ক্ষতিপূরণের দাবি জানিয়ে আসছেন। এমন-কি ডিমা হাসাও জেলা প্রশাসন, উত্তর কাছাড় পার্বত্য স্বশাসিত পরিষদের ভূমি ও রাজস্ব বিভাগ এবং উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ যৌথ জরিপ চালিয়ে রেলবোর্ডের কাছে প্রতিবেদন জমা দেওয়ার পরও আজ পর্যন্ত উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল কর্তৃপক্ষ ক্ষতিগ্রস্ত গ্রামবাসীদের ক্ষতিপূরণ বাবদ ৪ কোটি ৫৮ লক্ষ টাকা মিটিয়ে দেয়নি বলে অভিযোগ।
এদিকে আজ রবিবার ইন্ডিজেনাস স্টুডেন্টস ফোরাম ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তাদের অনির্দিষ্টকালের রেল অবরোধ প্রত্যাহার করে নেওয়ার কথা ঘোষণা করায় দক্ষিণ অসম-সহ তার পার্শ্ববর্তী ত্রিপুরা, মণিপুর ও মিজোরামের যাত্রীকুল স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলেছেন।