উপজাতি নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের দায়ে দুই যুবকের মৃত্যুদণ্ড

নিজস্ব প্রতিনিধি, উদয়পুর, ১৩ ফেব্রুয়ারী৷৷ উপজাতি নাবালিকাকে ধর্ষণের পর খুন করার অপরাধে দুই যুবকের মৃত্যুদণ্ডের সাজা শুনালেন স্পেশাল কোর্টের বিচারক এ কে নাথ৷ গোমতি জেলার অমরপুর মহকুমার নতুনবাজার থানাধীন কৃষ্ণকান্তপাড়ার উপজাতি নাবালিকাকে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুন করেছিল কষ্টরাই ত্রিপুরা ও ভঞ্জয় ত্রিপুরা৷ গতকাল আদালত ভারতীয় দণ্ডবিধির ৩০২ / ৩৬৭(এ) / ৩৭৬(ডি) / ৩৬৩ / ১২০ এবং ১২০ (বি) ও পক্সো আইনের চার ধারায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছিল৷ আজ বৃহস্পতিবার মৃত্যুদণ্ডের সাজা ঘোষণা করেছে আদালত৷ সাজা ঘোষণার পর ওই নাবালিকার মা বললেন, বিচারের বাণী নীরবে, নিভৃতে কাঁদে না, আজ আবারো প্রমাণিত হয়েছে৷ তিনি আদালতের রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷


স্পেশাল পাবলিক প্রসিকিউটর পল্টু দাস জানিয়েছেন, ২০১৮ সালের ৫ ডিসেম্বর নতুনবাজার থানাধীন কৃষ্ণকান্তপাড়া এলাকার এক উপজাতি নাবালিকা বিদ্যালয়ে যাওয়ার সময় এলাকারই দুই যুবক কষ্টরাই ত্রিপুরা ও ভঞ্জয় ত্রিপুরা তাকে জঙ্গলে নিয়ে ধর্ষণের পর নৃশংসভাবে খুন করেছিল৷ পল্টুবাবু জানান, ওই নাবালিকাকে প্রথমে গাছের ডাল দিয়ে মাথায় আঘাত করা হয়৷ তবুও তার মৃত্যু না হওয়ায় তাকে ডোবার জলে চুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে ধর্ষকরা৷ তার পর তাকে মাটি চাপা দিয়ে দেয় পাষণ্ড দুই যুবক৷
তিনি জানান, ওই দিন সন্ধ্যা হয়ে গেলেও নাবালিকাটি বাড়ি ফিরে না যাওয়ায় তার খোঁজাখুজি শুরু হয়৷ তখন স্থানীয় দুই নাবালিকার কাছ থেকে ঘটনা সম্পর্কে জানতে পারেন মৃতার পরিবারের সদস্যরা৷ গ্রামের মাতববররা কষ্টরাই ত্রিপুরা ও ভঞ্জয় ত্রিপুরাকে জিজ্ঞাসাবাদ করতে গেলে সুযোগ বুঝে কষ্টরাই ত্রিপুরা পালিয়ে যায়৷ কিন্তু ভঞ্জয় ত্রিপুরা পালাতে পারেনি৷ গ্রামবাসীদের কাছে ওই নাবালিকাকে ধর্ষণ ও খুনের ঘটনা স্বীকার করে ওই দিন রাতেই পুলিশ তাকে সাথে নিয়ে মৃতদেহ উদ্ধার করে৷ দুদিন পর পুলিশ কষ্টরাই ত্রিপুরাকেও গ্রেফতার করতে সক্ষম হয়৷


এদিকে, মৃতার বড় ভাই নতুনবাজার থানায় একটি মামলা করেন৷ পুলিশ তদন্ত শেষে আদালতে চার্জশিট জমা দেয়৷ ওই মামলায় আদালতে ৩২ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করা হয়েছে, জানিয়েছেন পল্টু দাস৷
তিনি বলেন, গতকাল ওই মামলায় ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০২/৩৭৬(এ)/ ৩৭৬(ডি)/ ৩৬৩, ২০১ এবং ১২০(বি) ও পক্সো আইনের চার ধারায় তাদের দোষী সাব্যস্ত করেছিল আদালত৷ আজ সাজা ঘোষণা করা হয়েছে৷ তিনি বলেন, গোমতি জেলা স্পেশাল কোর্টের বিচারক এ কে নাথ আজ ওই যুবককে ভারতীয় ফৌজদারি দণ্ডবিধির ৩০২ এবং ৩৭৬(এ) ধারায় মৃত্যুদণ্ডের আদেশ দিয়েছেন৷ পাশাপাশি ৩৭৬(ডি) ধারায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড, ৩৬৩ ধারায় ৭ বছর, ২০১ ও ১২০বি ধারায় ৭ বছর এবং পক্সো আইনের চার ধারায় ৭ বছর কারাবাস ও ১০ হাজার টাকা জরিমানা করেছে আদালত৷ অনাদায়ে ২ মাসের কারাবাসের সাজা ঘোষণা করেছেন বিচারক৷