নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১২ ফেব্রুয়ারী৷৷ কলকাতা কিংবা হলদিয়া বন্দর থেকে জলপথে চট্টগ্রাম বন্দর এবং সেখান থেকে স্থলপথে আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট পর্যন্ত পণ্য আসবে৷ তারই প্রস্তুতি সরেজমিনে খতিয়ে দেখার জন্য ত্রিপুরায় এসেছেন কলকাতা পোর্ট ট্রাস্টের চেয়ারম্যান বিনীত কুমার৷ আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের পরিকাঠামো দেখে তিনি সন্তোষ প্রকাশ করেছেন৷ ফলে, পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে পণ্য আনার বিষয়ে প্রয়াস নেওয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন৷ তাঁর দাবি, এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়ার চেষ্টা চলছে৷
বুধবার বিনীত কুমার আগরতলায় এসে ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট পরিদর্শন করেন৷ সমস্ত দিক খতিয়ে দেখে তিনি জানান, আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট সম্পূর্ণ প্রস্তুত৷ এখানে যথেষ্ট জায়গা, সব ধরনের সুবিধা এবং প্রয়োজনীয় সমস্ত এজেন্সি একত্রে রয়েছে৷ ফলে, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে পণ্য আনার ক্ষেত্রে কোনও সমস্যা হবে না৷ তিনি বলেন, ভারত ইতিপূর্বে বাংলাদেশের আশুগঞ্জ বন্দর ব্যবহার করেছে৷ কিন্তু, সেখানে আধুনিক সুযোগ-সুবিধা এবং বড় কন্টেইনার উঠা-নামা করার পরিকাঠামো নেই৷ তবে, আশুগঞ্জ বন্দরে আধুনিক পরিকাঠামো গড়ে তোলার কাজ চলছে৷ ভারত সরকার এর জন্য আর্থিক সহায়তাও দিচ্ছে৷ কিন্তু, ওই বন্দর সম্পূর্ণ রূপে তৈরি হতে আরও ২-৩ বছর সময়ের প্রয়োজন৷
বিনীত কুমার বলেন, সম্প্রতি চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহারে ভারত- বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর করেছে৷ তাই ওই বন্দর ব্যবহার করে ত্রিপুরায় পণ্য যত দ্রুত আনা যায় সেই চেষ্টা চলছে৷ তাঁর দাবি, আপাতত পরীক্ষামূলকভাবে ওই বন্দর দিয়ে পণ্য আনা হবে৷ সেক্ষেত্রে এক থেকে দেড় মাসের মধ্যে পরীক্ষামূলকভাবে ত্রিপুরায় পণ্য আনার চেষ্টা চলছে৷ তিনি বলেন, এ বিষয়ে ত্রিপুরা কতটা প্রস্তুত তা জানতে আজ মুখ্যসচিবের সাথে বৈঠক হবে৷ সমস্ত কিছু স্থির হলে, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পরীক্ষামূলকভাবে পণ্য আনার উদ্যোগ নেওয়া হবে৷
তাঁর দাবি, ত্রিপুরায় স্থলপথে পণ্য আনতে অনেকটা দূরত্ব অতিক্রম করতে হচ্ছে৷ এতে পরিবহণ খরচ অনেক বেশি হচ্ছে৷ কিন্তু, জলপথ এবং স্থলপথ ব্যবহার করে পণ্য আনা হলে পরিবহণ ব্যয় অনেক কম হবে৷ তিনি জানান, চট্টগ্রাম বন্দর থেকে আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টের দূরত্ব সাকুল্যে হবে ২০০ কিমি৷ অন্যদিকে কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত জলপথে দূরত্ব প্রায় ৪০০ কিমি৷ স্বাভাবিকভাবেই, ত্রিপুরায় পণ্য আমদানিতে চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করা সময় এবং খরচ কম হবে৷
তাঁর কথায়, বর্তমানে কলকাতা বন্দর থেকে চট্টগ্রাম বন্দর পর্যন্ত প্রতিনিয়ত পণ্য আনা-নেওয়া হচ্ছে৷ সেক্ষেত্রে পরিষেবা সম্প্রসারণে খুব সহজেই ত্রিপুরায় পণ্য আনা যাবে৷ তিনি বলেন, চট্টগ্রাম বন্দর দিয়ে পণ্য আনা-নেওয়া ত্রিপুরা-সহ সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চল উপকৃত হবে৷ তাছাড়া, শুধু কলকাতা কিংবা হলদিয়া নয়, চট্টগ্রাম বন্দর ব্যবহার করে দেশের যে কোনও বন্দর থেকেই পণ্য আনা-নেওয়ার পথ সুগম হবে৷