কলকাতা, ৯ ফেব্রুয়ারি (হি.স.) : এলআইসি-র ‘বেসরকারীকরণের’ নামে যে বিভ্রান্তি দেখা দিয়েছে, তার কোনও ভিত্তি নেই বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারমন।
রবিবার তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে বলেন, সংস্থার ১০ শতাংশ শেয়ার যদি বাজারে ছাড়া হয় আইপিও-র (ইনিশিয়াল পাবলিক অফারিং) তা হলে তো তার মালিকানা সাধারণ মানুষের হাতেই যাবে। এর সঙ্গে জনগনের অর্থের সুরক্ষার প্রশ্ন উঠছে কেন? নির্দিষ্ট পদ্ধতি মেনে এগুলো দেখার জন্য তো নিয়ন্ত্রক সংস্থা (রেগুলেটরি বডি) আছে!
কোনও রাজ্যের কথা ভেবে নয়, ভবিষ্যতের কথা ভেবে সার্বিকভাবে হয়েছে কেন্দ্রীয় বাজেট।
এবারের বাজেটে বাংলা কী পেল? এই প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী বলেন, “এটা তো কোনও রাজ্যের কথা ভেবে হয়নি! ভবিষ্যতের কথা ভেবে সার্বিকভাবে দেশের পরিকাঠামো উন্নয়ন, বড় প্রকল্প, লোকের হাতে সরাসরি টাকার যোগান তৃণমূল স্তরে স্বরোজগার যোজনার মাধ্যমে আয়বৃদ্ধি, মহিলাদের ক্ষমতায়ন প্রভৃতির ওপর আমরা জোর দিয়েছি। মানুষ যাতে বেশি করে পণ্য ভোগ করতে পারে, দীর্ঘ ও স্বল্পমেয়াদের সম্পদ যাথে সৃষ্টি হয়—নজর দেওয়া হয়েছে এ সব দিকে।
এ প্রসঙ্গে অর্থমন্ত্রী জানান, বিভিন্ন ব্যাঙ্কের কার্যধারার ওপর নিরন্তর ও নিবিড় নজর রাখা হচ্ছে। ব্যাঙ্ক এবং নন ব্যাঙ্কিং ফিনান্সিয়াল ইন্সটিট্যুশনগুলোর তরফে দীপাবলি ও দশেরায় ৪০০টি জেলায় (এনবিএফসি) বিশেষ সমীক্ষার পর প্রায় ৪ কোটি টাকার ঋণ দেওয়া হয়েছে। গোটা প্রক্রিয়ার ওপর রিজার্ভ ব্যাঙ্কও নজর রাখছে। ডেটা অ্যানালিসিসের মত আধুনিক অর্থনৈতিক তদারকির মাধ্যমে দুর্নীতি-দমনের ওপর জোর দেওয়া হচ্ছে।
এবারের বাজেটে দু’রকম আয়কর দেওয়ার সুযোগে সার্বিকভাবে মানুষ উপকৃত হবে বলে দাবি করলেন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী। সাংবাদিকদের প্রশ্নের উত্তরে তিনি জানান, প্রবীণ বা বয়স্কদের অনেকের ভবিষ্যতের জন্য বাধ্যতামূলক সঞ্চয়ের প্রয়োজন হয় না। তাঁদের তাৎক্ষণিক অর্থের উপযোগিতা বেশি। এ রকম লোকেরা বাজেটে প্রস্তাবিত নয়া হারে কর দেওয়ার সুযোগ পাবেন। এ ছাড়াও বাজেটে প্রবীণদের জন্য ৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকার সংস্থান রাখা হয়েছে।
জিএসটি খাতে কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওনা অর্থ নিয়ে রাজ্যের অভিযোগের ভিত্তি মানতে নারাজ অর্থমন্ত্রী সীতারমন। রবিবার তিনি বলেন, ২০১৭-র জুলাই মাসে যখন জিএসটি চালু হয়েছিল, সেই সময় রাজ্যগুলোকে আশ্বাস দেওয়া হয়েছিল শুল্ক, মূল্যযুক্ত কর (ভ্যাট) প্রভৃতি খাতে তাদের আয় যাথে মার না খায়, তার জন্য কেন্দ্র প্রয়োজনীয় অর্থ দেবে। এর জন্য নির্দিষ্ট শতাংশও ধার্য হয়। সিদ্ধান্তটি ছিল একটা সময়সীমার জন্য। কিন্তু এর পর জিএসটি খাতে রাজ্যগুলোর আয় অনেক বেড়েছে। এ ছাড়াও, জিএসটি চালুর সময় অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির হার ছিল ১২ শতাংশের ওপর। এই হার এখন অনেক কমে গিয়েছে। তাই এখন যদি কোনও রাজ্য বলে জিএসটি খাতে তাদের পাওনা অর্থ কেন্দ্র দিচ্ছে না, সেটা অমূলক।