নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৩ ফেব্রুয়ারী৷৷ করোনা ভাইরাস মোকাবিলায় সতর্কতামূলক সমস্ত ব্যবস্থা নিয়েছে ত্রিপুরার স্বাস্থ্য দফতর৷ আগামীকাল প্রি-প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট ব্যবহারের বিভিন্ন দিক সম্পর্কে অবগত হওয়ার জন্য এক প্রশিক্ষণের আয়োজন করা হয়েছে৷ এছাড়া, দামছড়ায় ত্রিপুরা-মিজোরাম সীমান্তেও স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ ইতিমধ্যে ইন্টিগ্রেটেড চেক পোস্ট এবং আগরতলা বিমান বন্দর ছাড়া চুড়াইবাড়ি ত্রিপুরা-অসম সীমান্ত এবং সোনামুড়ায় শ্রীমন্তপুর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তেও নজরদারি চালিয়েছে স্বাস্থ্য দফতর৷ এদিকে, চীন সফর শেষে এক ব্যক্তি বাড়ি ফিরেছেন৷ তাকে করোনা ভাইরাসের সন্দেহজনক আক্রান্ত হিসেবে নজরদারিতে রাখা হয়েছে৷
ত্রিপুরার স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা দফতরের অধিকর্তা ডা. রাধা দেববর্মা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের সতর্কতা মেনে করোনা ভাইরাস-এর পরিপ্রেক্ষিতে সবধরনের পরিস্থিতি মোকাবিলায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে৷ দুটি ইনফ্রারেড থামর্োমিটার ইতিমধ্যে ত্রিপুরায় এসেছে৷ আগরতলা বিমানবন্দর এবং ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে যাত্রীদের পরীক্ষা করাও শুরু হয়েছে৷ এছাড়াও ১০০০টি এন-৯৫ মাস্ক কিনেছে ত্রিপুরা সরকার৷ আজ ওই মাস্কগুলি ত্রিপুরায় পৌঁছে যাবে বলে আশাবাদী ডা. দেববর্মা৷
এখন প্রি-প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট ব্যবহারে সংশ্লিষ্ট স্বাস্থ্য কর্মীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হবে৷ মুখ্য প্রশিক্ষক হিসেবে ডা. তপন মজুমদার এ-বিষয়ে প্রশিক্ষণ দেবেন৷ ডা. রাধা দেববর্মা জানান, আগরতলার জিবি হাসপাতালে একটি আইসোলেশন ওয়ার্ড খোলা হয়েছে৷ করোনা ভাইরাস সংক্রমিত কোনও রোগী চিহ্ণিত হলে তাকে ওই ওয়ার্ডে রেখে চিকিৎসা করা হবে৷
ডা. দেববর্মার কথায়, করোনা ভাইরাসের চিকিৎসা এবং এর শনাক্তকরণ প্রক্রিয়ার দায়িত্বপ্রাপ্ত স্বাস্থ্যকর্মীদের সুরক্ষিত রাখা খুবই জরুরি৷ তাই, মাস্ক কিনেছে ত্রিপুরা সরকার৷ তিনি বলেন, আপাতত আগরতলা বিমানবন্দর, ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্ট এবং জিবি হাসপাতালের করোনা ভাইরাস পরীক্ষায় নিয়োজিত সংশ্লিষ্টদের মধ্যে ওই মাস্ক বিতরণ করা হবে৷ পর্যায়ক্রমে সারা রাজ্যে ওই মাস্ক বিতরণ করা হতে পারে৷ তাঁর দাবি, আগরতলা ইন্টিগ্রেটেড চেকপোস্টে যাত্রীদের ইনফ্রারেড থামর্োমিটার দিয়ে পরীক্ষা করার সময় পর্যবেক্ষণ করেছেন৷ তাছাড়া, বিমানবন্দরেও যাত্রীদের পরীক্ষা করার বিষয়টি খোঁজ খবর নিয়েছেন তিনি৷
তিনি বলেন, করোনা ভাইরাস নিয়ে ত্রিপুরায় এখনও ভয়ের কোনও কারণ নেই৷ তবুও, প্রয়োজনীয় সতর্কতা যে কোনও বিপদ এড়াতে সহায়ক হবে৷ তাঁর দাবি, জিবি হাসপাতালে আইসোলেশন ওয়ার্ডে চিকিৎসার পর্যাপ্ত ব্যবস্থা করা হয়েছে৷ তাছাড়া, আগামীকাল প্রি-প্রটেকশন ইকুইপমেন্ট ব্যবহারে প্রশিক্ষণের পর স্বাস্থ্যকর্মীরা করোনা ভাইরাস নিয়ে যে কোনও পরিস্থিতি মোকাবিলায় আরও দক্ষ হয়ে উঠবেন বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন৷
ডা. রাধা দেববর্মা আরও জানিয়েছেন, দামছড়ায় ত্রিপুর-মিজোরাম সীমান্তে স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা করার জন্য নির্দেশ দেওয়া হয়েছে৷ তাছাড়া, চুড়াইবাড়ি ত্রিপুরা-অসম সীমান্ত এবং সোনামুড়ায় শ্রীমন্তপুর ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তে নজরদারি চালানো হচ্ছে৷ সেখানেও স্ক্রিনিং করা হচ্ছে৷ এদিন তিনি বলেন, চীন সফর সেরে ত্রিপুরায় ফিরেছেন এক ব্যক্তি৷ তাই, তাকে সন্দেহজনক আক্রান্তের তালিকায় রাখা হয়েছে৷ অবশ্য, করোনা ভাইরাসের আক্রান্তের কোন লক্ষণ তার মধ্যে পাওয়া যায়নি৷ কিন্তু, তাকে নজরদারিতে রাখা হয়েছে৷ সাথে, যে কোন সমস্যা হলে স্বাস্থ্য কর্মীদের সাথে যোগাযোগ করার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে৷

