BRAKING NEWS

ত্রিপুরায় বনধ-এ মিশ্র সাড়া, মোটামুটি শান্তিপূর্ণ

আগরতলা, ৮ জানুয়ারি (হি. স.) : ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা ভারত বনধ-এ ত্রিপুরায় মিশ্র সাড়া পড়েছে। বনধ-র সমর্থনে পিকেটারদের রাস্তায় নামতে তেমনভাবে দেখা যায়নি। তবে বনধ-এর বিরোধিতায় সকাল থেকেই শাসকদল বিজেপি এবং বিএমএস ময়দানে ছিল। যানবাহন চলাচল আজ স্বাভাবিকের তুলনায় অনেকটাই কম ছিল। অবশ্য পরিবহণ ব্যবস্থা ধাক্কা খেয়েছে, এমনটা বলার অবকাশ নেই।

সরকারি অফিস এবং সরকার অধিগৃহীত সংস্থাগুলি আজ পুরোদমে সচল ছিল। বহু অফিসে কর্মচারীদের উপস্থিতি ইতিহাসের সমস্ত রেকর্ডকে ছাপিয়ে গেছে। ব্যাংকগুলি কার্যত বন্ধ ছিল। স্কুল-কলেজও খোলা ছিল। কিন্তু শিক্ষক-শিক্ষিকা এবং অধ্যাপক-অধ্যাপিকারা উপস্থিত থাকলেও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকরা আজ কোনও ঝুঁকি নেননি। ফলে স্কুল-কলেজ আজ ছাত্রশূন্য ছিল। দোকানপাট-বাজারহাটও যথারীতি খুলেছে। তবে অন্যান্য দিনের তুলনায় সংখ্যায় অনেক কম। মূলত, আজ বনধ-এর প্রভাব সবচেয়ে বেশি পড়েছে ব্যবসায়।

ট্রেড ইউনিয়নের ডাকা বনধকে ঘিরে গত কয়েকদিনে ব্যাপক প্রচার হয়েছে। সেজন্য ভয়ে অনেকেই বাড়ি থেকে বের হননি। ২০১৫ সালে এমনই এক বনধ-এ বিলোনিয়ায় আদালতে হামলা হয়েছিল। ওই ঘটনায় সিপিএমের কয়েকজন নেতা গ্রেফতার হয়েছিলেন। স্বাভাবিকভাবেই স্পষ্ট, বনধকে সমর্থনের বদলে ভয় মানুষকে বাহিরমুখী হতে দেয়নি। আগরতলা শহরে বামপন্থীদের আহূত বনধ-এর সমর্থনে পিকেটিং করতে তেমন দেখা যায়নি। ফলে ত্রিপুরায় কৈলাসহর ছাড়া অন্য কোথাও গণ্ডগোলের খবর এখন পর্যন্ত মিলেনি।

আগরতলায় নাগেরজলা বাসস্ট্যান্ডে দাঁড়ানো মোটর শ্রমিকদের বক্তব্য, বনধ-এ স্বাভাবিক জনজীবন কিছুটা ব্যাহত হয়েছে। প্রচুর মানুষ তাঁদের কাজকর্মের তাগিদে বাড়ি থেকে বেড়িয়েছেন। তাঁদের কথায়, যানবাহন চলাচল মোটামুটি স্বাভাবিক রয়েছে। বড় গাড়ি সংখ্যায় কম হলেও প্রচুর ছোট যাত্রীবাহী গাড়ি চলাচল করছে। আগরতলা-বিশ্রামগঞ্জ রুটের জনৈক বাসের চালক বলেন, সকাল থেকে তিনি গাড়ি চালাচ্ছেন। এখন পর্যন্ত কোনও সমস্যা হয়নি। তাঁর দাবি, যাত্রী সংখ্যা অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম। কিন্তু, অতীতের বনধ-এর মতো পরিস্থিতি নয়।

গতকাল ত্রিপুরা সরকারের সাধারণ প্রশাসন জানিয়েছিল, আজকের বনধ-এ সমস্ত সরকারি অফিস এবং সরকার অধিগৃহীত সংস্থাগুলি, স্কুল, কলেজ খোলা থাকবে। সে মোতাবেক স্কুল, কলেজ, অফিস আজ খোলা ছিল। স্কুল-কলেজগুলিতে শিক্ষক-শিক্ষিকাদের উল্লেখযোগ্য উপস্থিতি লক্ষ্য করা গেছে। কোওন কোনও অফিসে প্রায় ১০০ শতাংশ কর্মচারী এদিন উপস্থিত ছিলেন। মূলত আগরতলা শহরের বুকে সমস্ত সরকারি অফিসে আজ অন্যান্যদিনের মতোই কাজকর্ম হয়েছে। মফসসল এলাকায় কিছুটা প্রভাব পড়েছে। অফিস খোলা থাকলেও, কর্মচারীদের উপস্থিতি অন্যান্য দিনের তুলনায় কিছুটা কম ছিল। ত্রিপুরা সরকার বনধের দিন সমস্ত সরকারি কর্মচারীদের অফিসে উপস্থিত থাকার জন্য বিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল। মফসসলে আজ সরকারি কর্মচারী যাঁরা অফিস উপস্থিত ছিলেন না তাঁদের বিরুদ্ধে রাজ্য সরকার কোনও ব্যবস্থা নেবে কিনা তা এখনই বলা যাচ্ছে না।

মেলাঘর স্কুলের জনৈকা শিক্ষিকা বলেন, ভেবেছিলাম স্কুটি চেপে স্কুলে যেতে হবে। কিন্তু স্বামীর সাথে নাগেরজলা বাসস্ট্যান্ডে এসে গাড়ি পেয়ে গেছি। তিনি বলেন, অন্যান্য দিনের তুলনায় গাড়ি কম। তবুও সমস্যা হবে না বলেই মনে হচ্ছে। একই কথা বলেন সোনামুড়া স্কুলের জনৈক শিক্ষক। তাঁর কথায়, প্রতিদিনের মতোই আজ স্কুলে যাচ্ছি। গাড়ি পেতেও সমস্যা হয়নি। এদিকে, আগরতলা পুরনিগম কার্যালয়ের জনৈকা করণিক বলেন, বনধকে সমর্থন করার প্রশ্নই আসে না। তাই আমরা সকলেই অফিসে এসেছি।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *