স্মার্ট সিটি : আগরতলাকে ঢেলে সাজানো হচ্ছে, রাস্তার সীমানা নির্ধারণেরও উদ্যোগ

নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ১৮ ডিসেম্বর৷৷ ঢেলে সাজানো হচেছ আগরতলা শহরকে৷ স্মার্টসিটি প্রকল্পে কাজের গতি আগামী তিন বছরে শহরের পুরো চেহারাই বদলে দেবে বলে মনে করা হচ্ছে৷ আজ, আগরতলা স্মার্ট সিটি মিশনের সিটি লেভেল এডভাইজারি ফোরামের বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে৷ ওই বৈঠকে স্মার্টসিটি প্রকল্পে কাজের নমুনা এবং অগ্রগতি নিয়ে পর্যালোচনা হয়েছে৷ তাতে শহর আগরতলায় প্রায় সমস্ত রাস্তার সীমানা নির্ধারণের বিষয়টি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করা হয়েছে৷ কারণ, শহর নির্মাণের শুরু থেকেই আজ পর্যন্ত কখনই রাস্তার সীমানা নির্ধারণ করা হয়নি৷


এদিনের বৈঠকে ফোরামের সদস্যরা নানা মতামত দিয়েছেন৷ এদিকে, স্মার্টসিটি মিশনের কাজের অগ্রগতি নিয়ে এদিন বিস্তারিত আলোচনা হয়েছে৷ তাতে দেখা গেছে, মোট ২৩টি কাজ এখন পর্যন্ত সমাপ্ত হয়েছে৷ তাতে, ১৬ কোটি ৫০ লক্ষ টাকা ব্যয় হয়েছে৷ এছাড়া ২৩৩ কোটি ৮৩ লক্ষ টাকা ব্যয়ে আরও ২১টি প্রকল্পের কাজ চলছে৷ এদিকে, ১৯১ কোটি ৯১ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ১৮টি কাজের দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে৷ জানা গেছে, স্মার্টসিটি মিশনে বিভিন্ন কাজে এখন পর্যন্ত ৮৪ কোটি টাকা খরচ করা হয়েছে৷ তার মধ্যে ৭৬ কোটি টাকার ইউটিলাইজেশন সার্টিফিকেট ভারত সরকারকে প্রদান করেছে স্মার্ট সিটি মিশন৷
প্রসঙ্গত, ২০১৫ সালে জুন মাসে দ্বিতীয় পর্যায়ে আগরতলা স্মার্টসিটি মিশনের কাজ শুরু হয়৷ ফোরামের সদস্যদের বক্তব্য, স্মার্টসিটি প্রকল্পের কাজ যে গতিতে এগিয়ে চলেছে তাতে তিন বছর পর পুরো চেহারাটাই বদলে যাবে৷ কারণ, এই প্রকল্পে শহরের মোট ২৩.৫ কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রাস্তায় ফুটপাত এবং ডাবল লেন করা হবে৷ তাতে, শহরের অধিকাংশ এলাকাই এর আওতায় আসবে৷ জানা গেছে, দুটি বিশাল রাস্তা নির্মাণের প্রকল্পের কাজ শুরু হয়েছে৷ জিবি গোলচক্কর থেকে রামঠাকুর সংঘ পর্যন্ত চার কিলোমিটার এবং বড়জলা কালীবাড়ি থেকে দূর্গাচৌমুহনী পর্যন্ত চার কিলোমিটার দৈর্ঘ্য রাস্তা ফুটপাত এবং ডাবল লেন করার কাজ চলছে৷


এই স্মার্টসিটি প্রকল্পে সবচেয়ে বড় প্রকল্প হল মাস্টার সিস্টেম ইনটিগ্রেটর৷ এই প্রকল্পে শহর আধুনিকীকরণে বিশেষ ব্যবস্থা রয়েছে৷ মূলত, শহরে সমস্ত পরিষেবা নজরদারির জন্যই এই প্রকল্পটি ব্যবহৃত হবে৷ প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে এই প্রকল্পের উদ্বোধনে আসার জন্য ত্রিপুরা সরকারের পক্ষ থেকে আগ্রহ প্রকাশ করা হয়েছে৷ প্রধানমন্ত্রীর সফরসূচি স্থির হতেই ওই প্রকল্প উদ্বোধনের দিনক্ষণ চূড়ান্ত হবে৷ কারণ, ১৩৪ কোটি ১৪ লক্ষ টাকা ব্যয়ে ওই প্রকল্পের অধিকাংশ কাজ সমাপ্ত হয়েছে৷
ফোরামের সদস্যের বক্তব্য অনুযায়ী, এই প্রকল্পের অধীন আগরতলা শহরে ৪৬৪ সিসি ক্যামেরা বসবে৷ তাছাড়া ট্রাফিকের লালবাতি উলঙ্ঘন চিহ্ণিত করতে ৮১টি ক্যামেরা বসানো হবে৷ এদিকে, যানবাহনের নম্বর প্লেট অটোমেটিক শনাক্তকরণে ৪৩টি মেশিন বসানো হবে৷ তাছাড়া, ইন্টিগ্রেটেড ট্রাফিক সিস্টেম বসছে ২২টি৷ ওই প্রকল্পের অধীন পরিবেশ দূষণ মাপার জন্য ৬টি স্থানে স্মার্ট পুল সেন্সর বসানোর উদ্যোগ নেয়া হয়েছে৷ তার মধ্যে ৩টি স্থানে ইতিমধ্যে ওই যন্ত্র বসানো হয়েছে৷ এদিকে, আগরতলা শহরে ৪৮টি বাসস্টপ নির্মাণ করা হবে৷ তাতে, যাত্রীদের সমস্ত তথ্য সরবরাহ সহ ইমার্জেন্সি কল বক্স বসানো থাকবে৷ ওই কলবক্স পরিচালনায় নির্দিষ্ট কলসেন্টারও দিবারাত্রি কাজ করবে৷