BRAKING NEWS

বিক্ষিপ্ত ঘটনাবলির মাধ্যমে ক্যাব-বিরোধী ১১ ঘণ্টার উত্তরপূর্ব বনধ সম্পন্ন

গুয়াহাটি, ১০ ডিসেম্বর (হি.স.) : মারপিট, গাড়ি ভাংচুর, সরকার ও বিজেপি-বিরোধী স্লোগান, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সনোয়ালের কুশপুত্তলিকা পোড়ানোর মাধ্যমে নাগরিকত্ব (সংশোধনী) বিল (ক্যাব)-এর বিরুদ্ধে সারা অসম ছাত্র সংস্থা (আসু) এবং নর্থ-ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো) আহূত ১১ ঘণ্টার উত্তর-পূর্বাঞ্চল বনধ সম্পন্ন হয়েছে। অরুণাচল প্রদেশ, মণিপুর, মেঘালয়ে বনধ-এর বিশেষ প্রভাব পড়েনি। তবে ত্রিপুরার কাঞ্চনপুর মহকুমায় বনধ সমর্থকদের হামলায় ১৩ জন আহত হয়েছেন। তাঁদের মধ্যে একজনের অবস্থা আশঙ্কাজনক। বনধ-এর পরিপ্রেক্ষিতে বেশ কয়েকটি ট্রেনের সময়সূচি পরিবর্তন করেছে উত্তরপূর্ব সীমান্ত রেল। অসমের শিবসাগরে বিজেপি কার্যকর্তার ওপর হামলা চালানো হয়েছে।

ক্যাব-এর বিরুদ্ধে আসু-র অসম এবং নেসো আহূত ১১ ঘণ্টার উত্তর-পূর্বাঞ্চল বনধ-এর ব্যাপক প্রভাব পড়েছে অসমের রাজধানী গুয়াহাটি মহানগরে। বলতে গেলে বিক্ষোভের কেন্দ্ৰে পরিণত হয়েছে রাজধানী। এদিন সকালে রাজধানী দিশপুরে ডাউন-টাউন এলাকায় উশৃঙ্খল প্রতিবাদকারীদের নিয়ন্ত্রিত করতে একসময় কাঁদানে গ্যাস ছুঁড়েছে নিরাপত্তা বাহিনী। কোথাও কোথাও নিরাপত্তা বাহিনীকে লক্ষ্য করে ইটপাটকেল ছোঁড়ার ঘটনাও ঘটেছে। ডাউন-টাউন এলাকা ছাড়াও ছয়মাইল, কালাপাহাড়, আদাবাড়ি ইত্যাদি বিভিন্ন স্থানে লাঠিচার্জ করতে হয়েছে নিরাপত্তা বাহিনীকে। গোটা মহানগরের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে ময়দানে দাপিয়ে বেড়িয়েছেন গুয়াহাটির পুলিশ কমিশনার, ডেপুটি কমিশনার-সহ বহু উচ্চপদস্থ ও পদস্থ পুলিশ অফিসাররা।

রাজ্যজুড়ে জারি ছিল ভারতীয় দণ্ডবিধির ১৪৪ ধারা। এরই মধ্যে প্ৰতিবাদকারীরা বিভিন্ন জায়গায় দল বেঁধে মিছিল, পিকেটিং, টায়ার পুড়িয়ে সরকার তথা বিজেপি-বিরোধী স্লোগান দিয়ে উত্তাল করে তুলেছেন। প্ৰতিবাদকারীরা নরেন্দ্ৰ মোদী হায় হায়, অমিত শাহ গো ব্যাক, সৰ্বানন্দ সনোয়াল মুৰ্দাবাদ, ক্যাব আমরা মানি না মানব না ইত্যাদি স্লোগান দিয়ে সংশ্লিষ্ট প্ৰতিবাদস্থল উত্তপ্ত করে তুলেন। রাজ্যের প্ৰশাসনিক কেন্দ্ৰ জনতা ভবনও আজ ছিল প্রায় শুনশান।

এদিকে মন্ত্ৰী হিমন্তবিশ্ব শৰ্মাকে কালো পতাকা দেখিয়েছেন কতিপয় বিক্ষোভকারী। এছাড়া অগপ সভাপতি তথা মন্ত্ৰী অতুল বরার কনভয়কে ক্যাব-এর বিরুদ্ধাচরণকারীদের রোষে পড়তে হয়েছে। উলুবাড়িতে বিজেপি সাংসদ কুইন ওজার বাসগৃহের সামনে প্ৰতিবাদকারীর এক দল গিয়ে ক্যাব-বিরোধী স্লোগান দিচ্ছিল। এক সময় তারা সাংসদের বাড়ির গেট ঠেলে ভিতরে প্ৰবেশের চেষ্টা করলে তাদের প্রতিহত করে নিরাপত্তা বাহিনী। বরাসার্ভিস এলাকায় মন্ত্রী সিদ্ধার্থ ভট্টাচার্যের বাড়ির সামনেও বিক্ষোভ প্রদর্শন করেছেন আসু কর্মীরা।

আজকের বনধ গোটা রাজ্যে প্রায় সর্বাত্মক হলেও দক্ষিণ অসমের বরাক উপত্যকার মুসলিম অধ্যুষিত এলাকা ছাড়া কোথাও কোনও প্রভাব পড়েনি। শিবসাগর জেলার অন্তর্গত আমবাড়ির বরাহিবাড়িতে বনধ সমৰ্থকরা ডাউন অমৃতসর এক্সপ্ৰেস রেল অবরোধ করে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল-এর বিরুদ্ধে প্ৰতিবাদ সাব্যস্ত করেছেন। উজান অসমের ডিব্রুগড়, তিনসুকিয়া, যোরহাট, শিবসাগর, গোলাঘাট, মধ্য অসমের নগাঁও, হোজাই, মরিগাঁও, কামরূপ, নিম্ন অসমের ধুবড়ি, বঙাইগাঁও, দক্ষিণ শালমারা-মানকাচর ইত্যাদি জেলায় বনধ-এর প্রভাবে জনজীবন স্তব্ধ হয়ে পড়েছিল।

শিবসাগরে অসম বনধ-এর আহ্বায়ক আসু কর্মীদের হাতে প্রহৃত হয়েছেন বিজেপি-র জনৈক কার্যকর্তাকে। জানা গেছে, বনধ-এর সময় বিজেপি-র প্রদেশ সম্পাদক ভবেন মহনের ঘনিষ্ঠ মানস হাজরিকা তাঁর এএস ০৪ এম ০৬৯৬ নম্বরের সাদা রঙের সুইফট কারে যাচ্ছিলেন। সে সময় দোলমুখ চারিআলিতে কতিপয় আসু কৰ্মী তাঁর গাড়ি আটকে তাঁকে মারধর করেছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *