নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৮ ডিসেম্বর৷৷ রাজ্যের পৃথক স্থানে দুটি হত্যাকান্ডের ঘটনায় রীতিমতো আইন শৃঙ্খলা প্রশ্ণের মুখে পড়ল৷ রাজধানীর পার্শ্ববর্তী এডিনগরে এক ব্যক্তি খুন৷ অন্যদিকে, বিশ্রামগঞ্জেও এক ব্যক্তিকে খুন করা হয়েছে৷ দুটি ঘটনাতেই খুনের পেছনে স্ত্রী জড়িত বলে প্রাথমিক তদন্তে পুলিশ জানিয়েছে৷
পরকিয়া প্রেমের জেরে খুন হল এক ব্যক্তি৷ নিহতের নাম সঞ্জিব দাস৷ বাড়ি এডিনগর থানাধীন কালী টিলা এলাকায়৷ ঘটনা শনিবার গভীর রাতে৷ অভিযুক্ত এক যুবককে এডিনগর থানার পুলিশ গ্রেপ্তার করেছে৷ তার নাম সুমন রায় চোধুরী৷ ঘটনাকে কেন্দ্র করে কালীটিলা ও পাশ্ববর্তী এলাকায় তীব্র ক্ষোভ ও উত্তেজনা বিরাজ করছে৷ পরকিয়া প্রেম মেনে নিতে না পারায় খুন হতে হলো স্বামীকে৷ ঘটনা রাজধানী আগরতলার শহর সংলগ্ণ এডিনগর থানাধীন কালীটিলা এলাকায়৷ জানা যায়, সঞ্জিব দাস নামে এক যুবকের সঙ্গে বিয়ে হয়েছিল পপি আচার্য নামে এক যুবতীর৷
তাদের দুটি সন্তানও রয়েছে৷ কিছুদিন তাদের দাম্পত্য জীবন সুখে সাচ্ছন্দ্যেই ছিল৷ এরই মধ্যে কালীটিলা এলাকার সুমন রায় চৌধুরী নামে এক যুবকের পরকিয়া প্রেমে আসক্ত হয় পপি আচার্য৷ দুই সন্তান ফেলেই সুমনের সঙ্গে কোলকাতায় পাড়ি দিয়েছিল৷ সেখান থেকে তাকে উদ্ধার করে স্বামী ও শ্বশুর বাড়ির লোকজনরা৷ দ্বিতীয়বার সুমনের সঙ্গে ঘর ছেড়ে পালিয়ে গিয়ে কৈলাসহরে বসবাস করতে থাকে৷ সেখান থেকেও তাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে স্বামী৷ কিন্তু তারপরও স্বামীগৃহে থাকতে চায়নি সে৷ ভট্টপুকুর এলাকায় আলাদা ভাড়া বাড়িতে বসবাস করছিল পপি আচার্য৷
স্বামীর সঙ্গে সহবাস না করলেও, প্রয়োজনবোধে ফোন করে বাচ্চাদের জন্য খাবার সহ নানা জিনিষপত্র নিতো পপি৷ আত্মীয় পরিজনরা নানাভাবে বুঝিয়েও তাকে বাগে আনতে পারেননি৷ সুমন নামে ওই পরকিয়া যুবক একাধিকবার সঞ্জীবকে প্রাণ নাশের হুমকিও দিয়েছে৷ শেষ পর্যন্ত গতরাতে তাকে কালীটিলায় ছড়িকাহত করে হত্যা করে সে৷ ঘটনা সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য জানান, নিহতের মা জ্যোৎস্না দাস৷ কালীটিলা হত্যাকাণ্ডের খভর ছড়িয়ে পড়তেই এলাকায় তীব্র ক্ষোভের সঞ্চার হয়৷ এডিনগর থানার পুলিশ মৃতদেহটি উদ্ধার করেছে৷ মূল অভিযুক্ত সুমন গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ৷ সে হত্যাকাণ্ডের দায় স্বীকার করেছে৷ নিহতের স্ত্রী ও এই ঘটনার জড়িত বলে অভিযোগ৷
রবিবার সাত সকালে মৃতদেহ উদ্ধারকে কেন্দ্র করে চাঞ্চল্য বিশ্রামগঞ্জ থানাধী লুংথাংছড়া এলাকায়৷ নিজ বাড়ির পাশের রাবার বাগান থেকে উদ্ধার হয় মধু মিঞার মৃতদেহ৷ তার বয়স আনুমানিক ৩০ বছর৷ চাঞ্চল্যকর খুনে ঘটনায় মধু মিঞার স্ত্রী তানজিনা আক্তারকে গ্রেপ্তার করেছে বিশ্রামগঞ্জ থানার পুলিশ৷ গার্হস্থ্য হিংসায় শেষ পরিণতি হল খুন৷ এবার কোন মহিলা নয়৷ হিংসাবলি হল এক পুরুষ৷ ঘটনার বিবরণে জানা যায় শনিবার রাত্রিতে মধু মিঞাকে কাজ সেরে বাড়ি ফিরতে দেখেছিল তার বোন আশা বিবি৷ কিন্তু এর কিছুক্ষণ পর মধুর স্ত্রীর তানজিনা এসে মধুর বোনের বাড়িতে বলে যে মধু এখনো বাড়ি ফেরেনি৷
তখন মৃত মধুর বোন সহ অন্যান্যরা মধুকে খোঁজতে বের হয়৷ রাতে মধুকে খোঁজার সময়ই মধু স্ত্রীর প্রতি মধুর বোন ও অন্যান্যদের সন্দেহ হয়৷ সেইদিন রাত্রিতে অনেক খোঁজাখুজি করে ও মধুকে পাওয়া যায়নি৷ রবিবার সকালে বাড়ির পাশে রাবার বাগান থেকে উদ্ধার হয় তার গলাকাটা মৃতদেহ৷ ১৫ বছর পূর্বে তানজিনার সঙ্গে মধু বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হয়৷ তাদের ২ কন্যা সন্তান ও ১ পুত্র সন্তান রয়েছে৷ পরবর্তীতে গত ছয়মাস পূর্বে আরেক মহিলাকে সে বিয়ে করে ঘরে তোলে৷ এতেই শুরু হয় অশান্তি৷ যার পরিণতিতে খুন হয়ে প্রাণ হারাতে হয় মধু মিঞাকে৷ বিশ্রামগঞ্জ থানার পুলিশ রবিবারই সকালে খুনের দায়ে সন্দেহজনকভাবে মৃত মধু মিঞার স্ত্রী তানজিনাকে গ্রেফতার করে৷ তদোপরি এই রহস্যজনক মৃত্যুর আমল রহস্য উন্মোচিত হবে তদন্ত সাপেক্ষেই৷