নিজস্ব প্রতিনিধি, আগরতলা, ৭ ডিসেম্বর৷৷ নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল (ক্যাব)-এর বিরোধিতা করে শাসকজোট শরিক ইন্ডিজেনাস পিপলস ফ্রন্ট অফ ত্রিপুরা (আইপিএফটি) আগামী ৯ ডিসেম্বর এডিসি এলাকায় ১২ ঘণ্টা বনধ ডেকেছে৷ এদিকে, ক্যাব-এ অনেক পরিবর্তন আনা সত্ত্বেও এ-ধরনের সস্তা রাজনীতি জবাব মানুষ দেবেন, আহূত বনধের বিরোধিতা করে তোপ দেগেছে বিজেপি৷ এতে মনে হচ্ছে, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলকে ঘিরে শাসকজোটে মত বিরোধ রয়েছে৷ তবে বনধ স্বাভাবিক জনজীবনে বিরাট প্রভাব ফেলবে বলে মনে করা হচ্ছে৷

শনিবার এক সাংবাদিক সম্মেলনে আইপিএফটি-র সাধারণ সম্পাদক মঙ্গল দেববর্মা বলেন, গত ২ ডিসেম্বর দিল্লির যন্তরমন্তরে ৫ দফা দাবির ভিত্তিতে ধরনা প্রদর্শন করা হয়েছে৷ শুধু তা-ই নয়, ধরনা শেষে প্রধানমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী, কেন্দ্রীয় উপজাতি কল্যাণমন্ত্রী, ডোনার মন্ত্রী এবং কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র সচিবের কাছে ত্রিপুরায় ষষ্ঠ তফশিল এলাকাকে নিয়ে তিপ্রাল্যান্ড গঠন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতা, সারা দেশে এনআরসি চালু, ব্রু শরণার্থীদের স্থায়ী সমাধান এবং ককবরককে অষ্টম তফশিলে অন্তর্ভুক্ত, এই পাঁচ দফা দাবি সংবলিত মেমোরেন্ডাম দিয়েছে আইপিএফটি৷
মঙ্গল দেববর্মা বলেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় আগামী ৯ ডিসেম্বর ষষ্ঠ তফশিল এলাকায় সকাল ৬-টা থেকে বিকেল ৬-টা পর্যন্ত ১২ ঘণ্টা বনধ পালন করা হবে৷ ওই দিন অ্যাম্বুলেন্স, দমকল বাহিনী, কেন্দ্রীয় আধাসামরিক বাহিনী ও পুলিশ, সংবাদ মাধ্যম, দুধের গাড়ি, বিয়ের গাড়ি, শববাহী গাড়ি, ওষুধের দোকান এবং ফলের দোকান বনধের আওতার বাইরে থাকবে৷
তিনি জানান, সম্ভবত ৯ ডিসেম্বর সংসদে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল পেশ হবে৷ তাই, ওইদিন রাজ্যের এডিসি এলাকায় বনধ পালনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে আইপিএফটি৷ তাঁর সাফ কথা, শুধু ষষ্ঠ তফশিল এলাকা নয়, সমগ্র ত্রিপুরাকে ওই বিলের আওতার বাইরে রাখতে হবে৷
এদিকে, আগামী ১০ ডিসেম্বর নর্থ-ইস্ট স্টুডেন্টস অর্গানাইজেশন (নেসো) সমগ্র উত্তর-পূর্বাঞ্চলে নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলের বিরোধিতায় ১১ ঘণ্টা বনধ ডেকেছে৷ ত্রিপুরায় বিভিন্ন জনজাতি ভিত্তিক ছাত্র সংগঠন ওই বনধকে সমর্থন জানিয়েছে৷ এ-বিষয়ে মঙ্গল বলেন, নেসো-র বনধকে বিরোধিতা করছে না আইপিএফটি৷ কিন্তু আমরা পৃথকভাবে আন্দোলনে শামিল হওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছি৷
আইপিএফটি আহূত এডিসি এলাকা বনধ-এর তীব্র বিরোধিতা করেছে শাসকজোট শরিক বিজেপি৷ দলের প্রদেশ মুখপাত্র নবেন্দু ভট্টাচার্য বলেন, আইপিএফটি আলাদা দল, তাঁদের আলাদা কর্মসূচি থাকতেই পারে৷ কিন্তু, কোনও বনধকে সমর্থন করে না বিজেপি৷ তাঁর কথায়, বনধ-এর জেরে সাধারণ মানুষের চরম ভোগান্তি হবে৷ সারা ত্রিপুরায় স্বাভাবিক জনজীবন ব্যাহত হবে৷ তাই, জনগণের হয়রানি হবে এমন কোনও কর্মসূচিকে সমর্থন করে না বিজেপি৷ সাথে তিনি যোগ করেন, নাগরিকত্ব সংশোধনী বিলে অনেক পরিবর্তন আনা হয়েছে৷ কারোর কোনও ক্ষতি হবে না, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী এই আশ্বাস দিয়েছেন৷ তাই আইপিএফটি সময়োপযোগী সিদ্ধান্ত নেবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেছেন৷ তার বদলে বনধ-এর নামে সস্তা রাজনীতি করলে মানুষ এর জবাব দেবে, তোপ দাগেন তিনি৷